Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Entertainment News

‘অন্ধাধুন’-এ সাইকোলজি নিয়ে ডুয়েল পরিচালকের

কী ধরনের খেলা? খুন নিয়ে খেলা। বলা ভাল, ছেলেখেলা। ঠান্ডা মাথায় খুন। আর সে পাপকে ঘুরে অপরাধ ক্রমে একে একে ছড়িয়ে পড়া।

ছবির একটি দৃশ্য।

ছবির একটি দৃশ্য।

দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:৪৪
Share: Save:

পরকীয়া এবং তার জেরে খুনোখুনি নিয়ে বলিউডে কম ছবি হয়নি। কিছুদিন আগেই স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করছে ইরফান খান অভিনীত ব্ল্যাকমেল ছবিটি। ব্ল্যাক কমেডি গোত্রের এই ছবিগুলি ট্রেন্ডসেট করে দিয়েছে অনেক আগেই। রয়েছে অপার বেঞ্চমার্ক। তারপরেও প্রায় কাছাকাছি ধরনের আর একটি ছবি ‘অন্ধাধুন’ কেন দেখবেন?

কারণ যে কোনও ভাল ছবির মতোই এ ছবির আখ্যান এক হয়েও আলাদা। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে টান টান ধরে রাখে সবাইকে। এমনকি সিনেপলিসের দামি খাবার মুখে পুরতেও ভুলে যেতে পারেন। ফসকেও যেতে পারে। হ্যা, ঠিক এতটাই স্মার্ট এর চলন।

আয়ুষ্মান খুরানা আর তব্বুর কেমিস্ট্রি দেখার জন্যই এ ছবি আর একবার দেখা যায়। দেখা যায়, অমিত ত্রিবেদীর মিউজিক শোনার জন্যেও। আর পরিচালক সম্পর্কে এটুকুই আপাতত বলা থাক, ‘জনি গদ্দার’, ‘বদলাপুর’, ‘এক হাসিনা থি’ দেখা থাকলে অনুমান করা যেতেই পারে ব্ল্যাক কমেডি নিয়ে কতটা খেলতে পারেন শ্রীরাম রাঘবন।

কী ধরনের খেলা?

আরও পড়ুন, মুভি রিভিউ: অন্ধকার ভারতের নগ্ন চেহারাই ফুটে ওঠে ‘পটাকা’য়

খুন নিয়ে খেলা। বলা ভাল, ছেলেখেলা। ঠান্ডা মাথায় খুন। আর সে পাপকে ঘুরে অপরাধ ক্রমে একে একে ছড়িয়ে পড়া। বয়স্ক অভিনেতার সুন্দরী স্ত্রী। বোরিং জীবনযাপন। একঘেয়েমি কাটাতে পরকীয়া। আর তার জেরেই প্রেমিকের সঙ্গে ছক করে অভিনেতা খুন। অন্ধ মিউজিশিয়ান আকাশের (আয়ুষ্মান অভিনীত) সে কথা জেনে ফেলা। এ ভাবেই পাপচক্র ঘুরতে থাকা। এবং শেষমেশ পাপের কাউকে না ছাড়া।

আপাত জটিল এই আখ্যান অসাধারণ হয়ে ওঠে গল্প বলার ধরনে। ক্যামেরা ও সম্পাদনাও যথেষ্ট টাইট। অভিনয়ের কথা তো আগেই বলেছি। সব মিলিয়ে অনেকদিন পর একটা কমপ্লিট সিনেমা দেখছি বলে মনে হল।


অন্ধ মিউজিশিয়ান আকাশের চরিত্রে আয়ুষ্মান খুরানা।

বলিউডের এই বিকল্প ধারার ছবিগুলি থেকে ট্রিটমেন্ট শেখার আছে বলে মনে হয়। এই যে এ ছবিতে একবারও অপরাধকে নেগেটিভ ভাবে না দেখিয়ে স্মার্ট ভাবে ডিল করা হল, এ থেকে শেখার আছে। অনুরাগ কাশ্যপের হাত ধরে বলিউড এই পরিণতিতে আগেই এসেছিল। ব্ল্যাক কমেডি, রিভেঞ্জ স্টোরি কোন মাত্রায় যেতে পারে, তা অনুরাগ যথেষ্টই দেখিয়েছেন। ‘অন্ধাধুন’ দেখে সে কথাই বারবার মনে হচ্ছিল।

সত্তর দশকের ছবিকে ট্রিবিউট স্পষ্ট ভাবেই দেওয়া এ ছবির সঙ্গীতে। পিয়ানোকে আখ্যানের প্রয়োজনে যে ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে তা অনবদ্য। কমপ্লেক্স নোট এবং ততধিক জটিল আখ্যানের সঙ্গতে জোরালো হয়ে ওঠে আখ্যান। যখনই মনে হয়, পরের ঘটনা বোধ হয় এমন, তখনই তা বদলে দেন পরিচালক। সাইকোলজি নিয়ে এক ধরনের ডুয়েল খেলেছেন পরিচালক। যা আখ্যানকে লেজ থেকে ক্রমেই খেয়ে ফেলে।

আরও পড়ুন, সুই ধাগা: স্ক্রিপ্ট নড়বড়ে, তবু ‘সব কুছ বড়িয়া হ্যায়’!

রাধিকা আপ্তের মতো গুণী অভিনেত্রীকে কি আর একটু ব্যবহার করা যেত না? এটা ছবি শেষ হওয়ার পর বারবার মনে হল। তবে, এ ছবির লোকেশন অনবদ্য। এ গল্পটা পরকীয়া ও তার জেরে খুনের। অপরাধের। তাই অনায়াসে তা শুট করাই যেত মুম্বই বা দিল্লির মতো বড় শহরে। কিন্তু সেই আড়ম্বরের বদলে এখানে পুণের মতো ছোট শহর বেছে নেওয়া হল। প্রভাত রোড, গুড লাক ক্যাফে বা পারশি কোয়ার্টার কি অনবদ্য ভাবে মানিয়ে যায় আখ্যানের সঙ্গে।

এই একটি ব্যপারে এ ছবিকে স্যালুট জানাতেই হবে।

(কোন সিনেমা বক্স অফিস মাত করল, কোন ছবি মুখ থুবড়ে পড়ল - বক্স অফিসের সব খবর জানতে পড়ুন আমাদের বিনোদন বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE