Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Entertainment News

মুভি রিভিউ ‘কেদারনাথ’: এমন প্রেমের কাহিনি কতদিন পর দেখা গেল

উত্তরাখণ্ডের বন্যা এ ছবির নেপথ্য কাহিনি। কিন্তু সেই ভয়াবহতা ছাপিয়ে যায় প্রেম। এ যেনকলেরার দিনগুলিতে প্রেমের মতোই। সারা আলি খানের অভিনয় দেখতে দেখতে চোখে জল আসতে পারে।

দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬:৫০
Share: Save:

শীতের মরশুমে এমনিই বাঙালির প্রেম পায়। রেডরোড, ময়দান, বারিস্তা আর কাপুচিনো ভালই জানে সে সব। সারা শহর শাল মুড়ি দিয়ে সেজে ওঠে। ‘কেদারনাথ’-এর মতো ছবি তার সঙ্গে শুধু আলাদা মাত্রা যোগ করে দিল এ বছর। আহা! কতদিন পর এমন মেলোড্রামা! এমন ছবি দেখে বেরিয়ে মনে হয়, প্রেমের গল্প ঠিক ভাবে বলতে পারলে, আজও তা উত্তুরে হাওয়ার মতোই কাপিয়ে দেবে!

উত্তরাখণ্ডের বন্যা এ ছবির নেপথ্য কাহিনি। কিন্তু সেই ভয়াবহতা ছাপিয়ে যায় প্রেম। এ যেনকলেরার দিনগুলিতে প্রেমের মতোই। সারা আলি খানের অভিনয় দেখতে দেখতে চোখে জল আসতে পারে। আবার প্রেমে পড়েও যেতে পারেন। শীতের বেগুনি ফুলের মতোই তার উপস্থিতি। অথবা লাল-নীল টুনির মতো। চনমনে। বিপরীতে সুশান্ত সিংহ রাজপুত। জুটি বটে তাঁরা। অবশ্য অভিনয়কে পাল্লা দেয় লোকেশন। এক একটা শট দেখে মনে হচ্ছিল, বুঝি ক্যালেন্ডারের পাতায় ঢুকে যাচ্ছি। হিমাচল যাওয়ার চির খোয়াব মিটে যেতে পারে এ ছবি দেখে।

রোমিও-জুলিয়েটের মতো টানটান প্রেম। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অমিত ত্রিবেদীর আবহ। পাহাড়ি কেদারনাথ উমাপ্রসাদের কল্যাণে বাঙালির মানসপটে চিরকালের জন্য আঁকা। যুগ যুগ ধরে সেখানে আসছেন মানুষ। তেমনই এক পণ্ডিত পরিবারের মেয়ে সারা ও তার দিদি। প্রতি মাসেই নতুন নতুন প্রেম নিয়ে ছেলেখেলা তার। এমনকি, দিদির বিয়ের পাত্রের সঙ্গেও খেলে ফেলে। তার বদলায় সারা’র প্রেমিককে ঘিরে বদলা নেয় দিদি।

আরও পড়ুন, প্রেম ভেঙে যাওয়াটা আশীর্বাদ, নাম না করে কাকে বিঁধলেন ক্যাটরিনা?

কিন্তু এই বদলা থেকেই বোন বদলে যায়। সে তার জীবন দিয়ে উঠেপড়ে প্রমাণ করতে লাগে, সে-ও সৎ ভাবে প্রেম করতে পারে। দরকারে প্রাণ বাজি রাখতেও পিছু হটে না। এখান থেকেই ছবির ক্লাইম্যাক্স শুরু হয়।


কোথাও এ ছবি মায়া রেখে যায়।

ছবির শেষে অনেক ভিএফএক্স এবং হলিউডি কায়দা আছে। আছে প্রেমের জন্য কাঁদোকাঁদো মেলোড্রামা। ভেসে যাওয়া উত্তরাখণ্ড। ভেঙে পড়া পাহাড় ও মাটি। তবু সুশান্তের নাছোড় জেদ। এমন প্রেম কি পরিণতি পাবে? জানা নেই। তার জন্য দেখতে হবে এ ছবি। তবে আমার কাছে ক্লাইম্যাক্সের আগের চলনই শ্রেষ্ঠ মনে হয়। প্রেমের পাওয়ার প্লে, রিভেঞ্জ— অনেক বেশি সুন্দর ক্লাইম্যাক্সের থেকে। ভারত বা দুনিয়ায় প্রেমের গল্প কম নেই। তাতে এমন ভয়ানক ক্লাইম্যাক্সও প্রচুর। তাই মাঝের প্রেমের চলন এ ছবিতে খুব জীবন্ত মনে হয়। বিশ্বাস করতেও ইচ্ছে করে।

আরও পড়ুন, সলমনকে চুমু খেতে চাই, কেন এ কথা বললেন শাহরুখ?

আবহ, অভিনয়, সম্পাদনা, ক্যামেরা— সব কিছুই নিপুণ ছন্দে বাধা। অনেকদিন পর এমন ব্যালান্সড ছবি দেখলাম। সাম্প্রতিক কালের অন্য ধারার প্রেমের হিন্দি ছবিঅন্ধাধুন বা স্ত্রী-র চেয়েও ভাল লাগে এ ছবি। চোখের বালি-র মতো উপন্যাসের পরিণতি নিয়ে রবীন্দ্রনাথকে আধুনিকদের তরফে বুদ্ধদেব বসু যথেষ্ট সমালোচনা করেন। রবিঠাকুর তা মেনেও নেন। অনেক বড় বড় শিল্পের ক্ষেত্রেই এই অসঙ্গতি চোখে পড়ে। ক্লাইম্যাক্সে এসে সুতো হারিয়ে যায়। এ ছবিকেও ক্লাইম্যাক্সের বাড়বাড়ন্ত অনাধুনিক করে দেয়।

তবু কোথাও এ ছবি মায়া রেখে যায়। ছবি দেখে বেরিয়ে বারবার মনে হয়, এমন প্রেমের কাহিনি কতদিন পর দেখলাম। এত টানটান যে কলেজ-প্রেম মনে পড়ে। শীতের বেলা ফুরিয়ে আসে। মনে হয়, কোথাও মায়া রয়ে গেল। নাকছাবিটি হারিয়ে গেছে হলুদ বনে বনে...

(মুভি ট্রেলার থেকে টাটকা মুভি রিভিউ - রুপোলি পর্দার সব খবর জানতে পড়ুন আমাদের বিনোদন বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE