Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Entertainment News

মুভি রিভিউ: কণ্ঠী শিল্পীদের কথা প্রথম বলল ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’

‘শব্দ’, ‘ছোটদের ছবি’ যাঁরা দেখেছেন, এ কথা তাঁদের কাছে নতুন নয়। এ ছবির বয়ানও একই কথা বলে। পুজোর বাজারে কিশোর কুমারের গানের বিজয়া সম্মেলনী যেন-বা। মহান এই গায়কের জীবনে রিভিজিট এক অর্থে। কিন্তু কিশোর কুমারের জীবন দেখার আশা নিয়ে হলে যাবেন না।

দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮ ১৮:৩৯
Share: Save:

বিখ্যাত গায়কদের গান যাঁরা রাতেরপর রাত মঞ্চে মঞ্চে গেয়ে মাতিয়ে রেখেছেন। কোনও গবেষণা কি কখনও তাঁদের নিয়ে হয়েছে? কোনও সম্মান পেয়েছেন কি তাঁরা?

উত্তর, না। কিচ্ছু পাননি।

এখান থেকেই শুরু হচ্ছে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি ‘কিশোর কুমার জুনিয়ার’। ইন্ডাস্ট্রিরঅপমানিত ও অবহেলিত শিল্পীদের নিয়ে কাজ করে ইতিমধ্যেই সিগনেচার বানিয়ে ফেলেছেন কৌশিক।

‘শব্দ’, ‘ছোটদের ছবি’ যাঁরা দেখেছেন, এ কথা তাঁদের কাছে নতুন নয়। এ ছবির বয়ানও একই কথা বলে। পুজোর বাজারে কিশোর কুমারের গানের বিজয়া সম্মেলনী যেন-বা। মহান এই গায়কের জীবনে রিভিজিট এক অর্থে। কিন্তু কিশোর কুমারের জীবন দেখার আশা নিয়ে হলে যাবেন না।

কেন?

আরও পড়ুন, দ্বিতীয়বার প্রসেনজিতের স্ত্রী হয়ে কেমন লাগল? অপরাজিতা বললেন...

কারণ এ ছবি যদিও শুরু হয় কণ্ঠী শিল্পীর জীবনের গল্প দিয়েই, ক্রমে তা পপুলার আখ্যানের মোচড় নেয়। সেখানে গায়কের জীবনের স্ট্রাগল ততটা থাকে না, যতটা থাকে গল্পকে ক্রমশ জটিল করে তোলা। সাসপেন্স। থ্রিল। ক্লাইম্যাক্স। ডায়লগ। মারামারি। এখানেই এ ছবি আর ‘শব্দ’ বা ‘ছোটদের ছবি’ বা ‘অপুর পাঁচালি’ গোত্রের থাকে না। সবার মনখুশি করার ছবি হয়ে ওঠে।

হলে তাই শোনাও যায় বারবার, ‘জিও’, ‘কেয়াব্বাত’। ‘‘শিল্পীর বউ হলে তো একটু মার খেতেই হবে,’’ শুনে তো কলেজের ছাত্রদের কি উল্লাস! স্ট্রাগলার কণ্ঠী গায়কের পরিবার যখনক্রমে সীমান্তে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে আতঙ্কবাদীদের খপ্পরে পড়ে, সেখান থেকে ঘোরে এ ছবির আখ্যান। আর তখন শুধু স্ট্রাগলার গায়ক ও তার পরিবারের গল্প থাকে না।

গান এ ছবিকে এগিয়ে নিয়ে চলে। জনপ্রিয় কিশোরের গানগুলি শুনতে সত্যিই ভাল লাগে। নয়তো আখ্যানের ক্লাইম্যাক্স একটু একঘেয়ে লাগলেও লাগতে পারত। প্রসেনজিতের সঙ্গে অপরাজিতার কেমিস্ট্রি বেশ লাগে। ভাল লাগে ছেলের ভূমিকায় ঋতব্রতর অভিনয়।


আখ্যানের ট্যুইস্টগুলো নিয়ে কি পরিচালক আরও ভাবতে পারতেন না?

পুজোর বাজারে মনোরঞ্জনের জন্য এ ছবি দেখতেই পারেন। তার বেশি কিছু এ ছবির বলার নেই। প্রচুর পোস্টার ইতিমধ্যেই পড়ে গিয়েছে শহরে। গায়কের অপহরণ থেকে আতঙ্কবাদীদের গান শোনানো বা ছেলের মধ্যে গান সঞ্চার করে দেওয়া, সবেই কিশোর না থেকেও আছেন। ভাললাগেরাজস্থানে দস্যু শিবিরের জায়গাগুলো। গান গেয়ে ও রান্না করে প্রসেনজিৎ ও অপরাজিতা যে ভাবে তাদের মন জয় করলেন তা সত্যিই মজার। রফি ও কিশোর নিয়ে প্রসেনজিৎ বনাম শত্রুদের বচসাটাও বেশ।

আরও পড়ুন, মত্ত অলোক আমাকে ধরে টানতে শুরু করেছিলেন... মুখ খুললেন সন্ধ্যা

কিন্তু আখ্যানের ট্যুইস্টগুলো নিয়ে কি পরিচালক আরও ভাবতে পারতেন না? কারণ পরিচালকের নাম যেহেতু কৌশিক। সাসপেন্স আর ক্লাইম্যাক্সগুলো একটু একঘেয়ে লাগে। ছবির চলনের সঙ্গে বেমানান যেন-বা। ছবি দেখতে দেখতে প্রায়ই মনে হচ্ছিল, কেন এ ছবি স্ট্রাগলার গায়কের ছবি হয়ে উঠল না? হয়ে উঠল অপহরণ, তা থেকে মুক্তির ছবি। আতঙ্কবাদ নিয়েও তো সিরিয়াস কিছু বললেন না পরিচালক। শুধু আখ্যানের দরকারে তা এল আর চলে গেল।

তবু আমি মনে রাখব এ ছবি। কারণ, এ ছবি প্রথম কণ্ঠী শিল্পীদের নিয়ে কথা বলল। কথা বলল তাঁদের আবেগ, নিত্যদিনের মাচা অনুষ্ঠানের শ্রম ও কষ্ট নিয়ে। তাঁদের স্ত্রী-পুত্র পরিবারের কথা বলল। সেখানে এ ছবি মানুষের। যা কিছু মানবিক, তাই তো সাধুবাদ যোগ্য!

(মুভি ট্রেলার থেকে টাটকা মুভি রিভিউ - রুপোলি পর্দার সব খবর জানতে পড়ুন আমাদের বিনোদন বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE