মৃণাল সেনের জীবনবোধ কেমন ছিল? কিছুটা তিনি ক্যামেরাবন্দি করেছেন তাঁর বিভিন্ন ছবিতে। ‘ইন্টারভিউ’, ‘খণ্ডহর’, ‘পুনশ্চ’, ‘মহাপৃথিবী’, ‘ভুবন সোম’, ‘পদাতিক’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘বাইশে শ্রাবণ’-এর মতো ছবি সেই তালিকায়। চলচ্চিত্রের মধ্যে দিয়ে নতুন রূপে আবিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন পার্থিব জীবনকে। মানুষের প্রকৃত রূপ, তার ভিতরে থাকা লুকনো চেহারা টেনে বার করে আনতেন প্রতিটি ছবিতে। দর্শকদের বোঝাতে চাইতেন, আসলে জীবন কী ভাবে বইছে! ব্যক্তি মৃণালের উপলব্ধি কেমন ছিল? শোনা যায়, তিনি জীবনকে উপভোগ করতেন। উপভোগ করতেন প্রতিটি সম্পর্ককে। তাই ছেলে কুণাল সেন আর তিনি ‘বন্ধু’। আজীবন একে অন্যকে এই সম্বোধনেই ডেকে এসেছেন!
কিছুটা জানা যায় তাঁর ব্যক্তিগত চিঠি থেকে। প্রতি জন্মদিনে তিনি একটি করে চিঠি লিখতেন। নিজের জন্মদিন নিয়ে। তাঁর জন্মদিন নিয়ে বাকিদের উন্মাদনা নিয়ে। একটি করে বছর পেরিয়ে যাওয়া নিয়ে। কখনও তিনি জন্মদিনে ছেলেমানুষের মতোই খুশি। কোনও বছরের জন্মদিনে তিনি যেন একটু সজাগ, বেলা যে পড়ে আসছে! আবার কখনও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, ‘বয়স বাড়ছে’... মানতে মোটেই রাজি নন তিনি। তাঁর শেষের দিকের লেখনিতে যেন অল্প ক্লান্তির আভাস। প্রতি বছর বিশেষ দিনে সকাল সকাল পাটভাঙা সাদা গিলে করা পাঞ্জাবি আর চোস্ত পাজামায় সাজিয়ে নিতেন নিজেকে। এটাই ছিল পরিচালকের ‘সিগনেচার’ পোশাক। ভাল-মন্দ আর কিছু রান্না হোক বা না হোক, স্ত্রী গীতা সেন নিজের হাতে রসগোল্লার পায়েস রেঁধে দিতেন। খুব তৃপ্তি করে খেতেন মৃণাল ওই পছন্দের পদটি। ১৪ মে, তাঁর ৯৯তম বছরে শতবর্ষের প্রাক্কালে সেই সব নিয়ে রক্তমাংসের মৃণাল সেন উপস্থিত আনন্দবাজার অনলাইনের পাতায়।