Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Entertainment News

প্রয়াত রুদালী-র পরিচালক কল্পনা লাজমি

কল্পনার কেরিয়ারের শুরুতেই ইঙ্গিত ছিল ছকভাঙার। সিনেমা নয়, সাতের দশকে শুরুটা করেছিলেন শ্যাম বেনেগালের সহকারী হিসাবে।

কল্পনা লাজমি। —ফাইল চিত্র।

কল্পনা লাজমি। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১১:২৩
Share: Save:

হিন্দি ফিল্মের জগতে সাত-আটের দশকে হাতেগোনা মহিলাদের দেখা গিয়েছে ডিরেক্টরের চেয়ারে বসতে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম কল্পনা লাজমি। রবিরার ভোর সাড়ে ৪টায় প্রয়াত হলেন ৬১ বছরের এই পরিচালক। মাস কয়েক ধরেই কিডনির ক্যানসারে ভুগছিলেন। মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর ডায়ালিসিসও চলছিল। শেষমেশ ক্যানসারের কাছেই হার মানলেন কল্পনা।

গুরু দত্তের ভাইঝি কল্পনার মা খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী ললিতা লাজমি। মাত্র ১৭ বছর বয়সে ভুপেন হাজারিকার সঙ্গে কাজের সুযোগ হয়েছিল তাঁর। কল্পনার কেরিয়ারের শুরুতেই ইঙ্গিত ছিল ছকভাঙার। সিনেমা নয়, সাতের দশকে শুরুটা করেছিলেন শ্যাম বেনেগালের সহকারী হিসাবে। ১৯৭৭-এ শ্যামের ‘ভূমিকা’-য় কস্টিউম ডিজাইনার হিসাবেও দেখা যায় তাঁকে। এর পর তথ্যচিত্রে হাত পাকানো। প্রথম তথ্যচিত্র ১৯৭৮-এ। ‘ডি জি মুভি পায়োনিয়র’। এর পরের কয়েক বছরে আরও এল ‘আ ওয়ার্ক স্টাডি ইন টি প্লাকিং’ বা ‘অ্যালং দ্য ব্রহ্মপুত্র’-এর মতো তথ্যচিত্র। এর পর নিজের পূর্ণদৈর্ঘের ফিল্ম। ১৯৮৬ সালে শাবানা আজমি, নাসিরুদ্দিন শাহ এবং অনুজ সাহানিকে নিয়ে তৈরি করেন ‘এক পল’। সে ফিল্মের প্রযোজনাও তাঁর। গুলজারের সঙ্গে মিলে সে ফিল্মের চিত্রনাট্য লিখেছিলেন কল্পনা।

প্রথম ফিল্মেই শুনিয়েছিলেন নারীর যৌন ইচ্ছার কথা, একাকিত্ব এবং পরকীয়া সম্পর্কের গল্প। যে বিষয়গুলি ছুঁয়েও দেখেননি হিন্দি ফিল্মের বহু দুঁদে ফিল্পমেকার। কিন্ত, কল্পনার ফিল্মের কাহিনিতে বার বার উঠে এসেছে বহু না-ছোঁয়া বিষয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন তাঁর ফিল্মের নায়িকারা। নারী-পুরুষের গণ্ডি ছাড়িয়ে তাঁর ফিল্মেই শোনা গিয়েছে তৃতীয় লিঙ্গের কথাও। ব্যক্তিগত জীবনেও প্রথা ভেঙেছেন বরাবর। তাঁর ফিল্মেও ফুটে ওঠে সেই ছকভাঙার কথা।

আরও পড়ুন: অস্কারের দৌড়ে রীমা দাসের ছবি ‘ভিলেজ রকস্টার্স’

ব্যক্তিগত জীবনেও দেখা গিয়েছে প্রথাভাঙার ছবিটা। তাঁর থেকে ২৮ বছরের বড় ভুপেন হাজারিকার সঙ্গে লিভ-ইন নানা গসিপের জন্ম দিয়েছে। তাতে পরোয়া করেননি। নিজের শর্তেই জীবন কাটিয়েছেন। ভুপেন হাজারিকার অসুস্থতার জন্য নিজের কেরিয়ারকেও দূরে সরিয়ে রেখেছেন।

আরও পড়ুন: মুভি রিভিউ: সিনেমা শেষ হয়, নন্দিতার ‘মান্টো’ ফুরোয় না

কল্পনার ফিল্ম ‘রুদালী’-র প্রিমিয়ারে ডিম্পল কাপাডিয়া এবং ভুপেন হাজারিকা। —ফাইল চিত্র।

‘এক পল’-এর পর ফিল্ম থেকে লম্বা ব্রেক নেন। মন দেন টেলিভিশনে। ছোটপর্দায় ‘লোহিত কিনারে’ নিয়ে এলেন তিনি। মুখ্য চরিত্রে তনভি আজমি। সে সিরিয়ালও প্রবল জনপ্রিয় হয়। এর পর ১৯৯৩-তে ফের সিনেমার পর্দায় দেখা যায় তাঁর কাজ। এ বার ‘রুদালী’। মেনস্ট্রিমের নায়িকা ডিম্পল কাপাডিয়াকে নিয়ে রাজস্থানের পটভূমিতে গড়ে তোলা এক রুদালীর কাহিনি। সেই ফিল্মে সেরা অভিনেতার সম্মান পান ডিম্পল। প্রশংসিত হন কল্পনা। ১৯৯৭ ‘দারমিয়াঁ’ কিরণ খের ও তব্বুর পাশে দেখা গিয়েছিল ছোট পর্দায় নায়ক আরিফ জাকারিয়ার সমৃদ্ধ অভিনয়। মেনস্ট্রিম ফিল্মের অভিনেতাদের কাছে ফের ফিরে গিয়েছেন কল্পনা। ২০০১-এ ‘দমন’ দেখা যায় রবিনা টন্ডনকে। ডিম্পলের মতোই সে বার সেরা অভিনেতার জাতীয় পুরস্কার পান রবিনা। ২০০৬-এ তাঁর শেষ ছবিতে সুস্মিতা সেনকে নিয়ে ‘চিঙ্গারি’ করলেও অবশ্য বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি। তবে বক্স অফিসের সাফল্য দিয়ে কল্পনার মতো মানুষকে বোধহয় পরিমাপ করা যায় না।

(মুভি ট্রেলার থেকে টাটকা মুভি রিভিউ - রুপোলি পর্দার সব খবর জানতে পড়ুন আমাদের বিনোদন বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE