Advertisement
E-Paper

পোস্টার ছেঁড়া হচ্ছে ‘শেষ বলে কিছু নেই’-এর

কেনই বা অঞ্জন দত্তর ছবির সঙ্গে বারবার এমন হচ্ছে? কে বা কারা রয়েছে এই ঘটনার পিছনে? অনুসন্ধানে ইন্দ্রনীল রায়তিন বছর আগে ‘আবার ব্যোমকেশ’-এর মুক্তির ঠিক আগে অবধি গোটা কলকাতা জুড়ে সেই ছবির পোস্টার প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল। সেই সময় দুই যুযুধান প্রযোজক সংস্থা কৌস্তুভ রায়ের ‘আর পি টেকভিশন’ ও রানা সরকারের ‘দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া’র রেষারেষির জেরেই যে এই ঘটনা ঘটেছিল, তা তখন স্বীকার করেছিলেন দুই সংস্থার কর্ণধারই। আবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে ২০১৪-র জুন মাসের কলকাতাতে। এ বার পোস্টার ছেঁড়া চলছে মৌ রায়চৌধুরীর ভিথ্রিজি ফিল্মসের ‘শেষ বলে কিছু নেই’, যেখানে মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন যিশু সেনগুপ্ত ও শুভশ্রী।

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৪ ০০:০৫

তিন বছর আগে ‘আবার ব্যোমকেশ’-এর মুক্তির ঠিক আগে অবধি গোটা কলকাতা জুড়ে সেই ছবির পোস্টার প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল।

সেই সময় দুই যুযুধান প্রযোজক সংস্থা কৌস্তুভ রায়ের ‘আর পি টেকভিশন’ ও রানা সরকারের ‘দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া’র রেষারেষির জেরেই যে এই ঘটনা ঘটেছিল, তা তখন স্বীকার করেছিলেন দুই সংস্থার কর্ণধারই।

আবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে ২০১৪-র জুন মাসের কলকাতাতে। এ বার পোস্টার ছেঁড়া চলছে মৌ রায়চৌধুরীর ভিথ্রিজি ফিল্মসের ‘শেষ বলে কিছু নেই’, যেখানে মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন যিশু সেনগুপ্ত ও শুভশ্রী।

এই পোস্টার ছেঁড়ার ঘটনাতে যদি কোনও কমন ফ্যাক্টর থেকে থাকে, তিনি হলেন পরিচালক অঞ্জন দত্ত। বারবার শুধু অঞ্জন দত্তরই ছবির পোস্টার ছেঁড়া হচ্ছে কেন? এই নিয়ে এই মুহূর্তে তুমুল হইচই টলিউডে।

কেউ কি কোনও পুরনো রাগ মেটাচ্ছেন অঞ্জন দত্তর উপর? না কি কোনও বড় প্রযোজক সংস্থা (আকারে ইঙ্গিতে অফ দ্য রেকর্ড আলোচনায় অনেকেই ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের দিকেই আঙুল তুলছেন) ইচ্ছে করে পোস্টার ছিঁড়ে দিয়েছে?

“আমার মনে হয় না কেউ ইচ্ছে করে এ সব করছে। তবে ঘটনাটা যে ঘটছে, সেটা কলকাতা শহরে বেরোলেই আপনি দেখতে পাবেন। ‘আবার ব্যোমকেশ’-এর সময় যখন এ রকম হয়েছিল, তখন আমরা কারণটা জানতাম। ‘রঞ্জনা’র সময় এ রকম হয়েছিল। এটা কিন্তু ক্রমাগত হচ্ছে আমার ছবির সঙ্গে এবং আই ফিল ব্যাড ফর মাই প্রোডিউসরস। ওঁদের কত টাকা নষ্ট হচ্ছে বলুন তো,” বুধবার সকালে বলছিলেন ‘শেষ বলে কিছু নেই’-এর পরিচালক অঞ্জন দত্ত।

এর পিছনে কি ভেঙ্কটেশ ফিল্মস রয়েছে? “ধুর, ধুর, আমি বিশ্বাস করি না। আমার মনে হয় না। ওরা সিনেমার লোক। ওরা এ রকম কাজ করবেই না। তবে কেন আমাকে বারবার জড়ানো হচ্ছে, সেটা মিস্ট্রি। আমার কিন্তু কোনও অ্যাজেন্ডা নেই। তা-ও যে কেন লোকে আমাকে ভুল বোঝে, গড নোজ। আই ফিল স্যাড অ্যাবাউট দ্যাট,” সাফ বলেন অঞ্জন।

অঞ্জন দত্তর সঙ্গে দু’টো ছবি করেছেন রানা সরকার। তিনি অবশ্য বলছেন, এ রকম হয়েই থাকে টলিউডে। “দেখুন, ‘আবার ব্যোমকেশ’-এর সময় কৌস্তুভদা ওপেনলি পোস্টার ছিঁড়েছিল। অ্যান্ড হি ওয়াজ অনেস্ট এনাফ টু সে। তবে আজকাল কলকাতায় দেওয়ালের সংখ্যা কম। সবাই তাদের ছবির পোস্টার লাগাতে চায়। সে দিক থেকে দেখতে গেলে একটা পোস্টারের লাইফ তিন দিনের বেশি নয়। এ রকম আগেও হয়েছে। ভবিষ্যতেও হবে। তবে ইচ্ছে করে কেউ অঞ্জন দত্তর ছবি বলে পোস্টার ছিঁড়ে দিচ্ছে, এটা আমি মনে করি না,” বলছেন প্রযোজক রানা সরকার।

তাঁর পোস্টার যে ছেঁড়া হয়েছে, তা দক্ষিণ কলকাতার রাস্তায় দেখেছেন ছবির মুখ্য অভিনেতা যিশু সেনগুপ্তও। “হ্যাঁ দেখেছি। আমার তো ন্যাচারালি খারাপ লেগেছে। বাট আই বিলিভ এভরিথিং ইজ ফেয়ার ইন লভ অ্যান্ড ওয়ার। তবে আমরা ছোট ইন্ডাস্ট্রি। সেখানে সবাই সবার সঙ্গে মিলেমিশে চললেই ইন্ডাস্ট্রির ভাল। ইন্ডাস্ট্রিটাকে যুদ্ধক্ষেত্র বানানোটা কারও পক্ষেই ঠিক হবে না ইন দ্য লং রান। আমার ধারণা আমাদের ছবি নিয়ে মানুষের মধ্যে একটা কৌতূহল আছে। তাঁরা আমাদের ছবিটা দেখবেন,” বলছেন যিশু।

অন্য দিকে ‘শেষ বলে কিছু নেই’-এর প্রযোজক মৌ রায়চৌধুরীও যথেষ্ট ব্যথিত তাঁদের ছবির পোস্টার ছেঁড়া নিয়ে। “আমি সেদিন সায়েন্স সিটি থেকে পার্ক সার্কাস যাওয়ার পথে দেখলাম আমাদের সব পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। অঞ্জনদা ও ছবির কার্যনির্বাহী প্রযোজক সুমন্ত চট্টোপাধ্যায়ও দেখেছেন কী পরিমাণ পোস্টার ছেঁড়া হয়েছে কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে। এর আগে আমি দেখেছি ‘জাতিস্মর’, ‘আবার ব্যোমকেশ’ ও ‘ইতি মৃণালিনী’র পোস্টার ছেঁড়া হয়েছে কলকাতায়। তার মানে একটা গ্রুপ আছে, যারা এটা করে,” বলছেন মৌ।

আপনারা কি মনে করছেন ভেঙ্কটেশ ফিল্মস এটা করাচ্ছে?

“না, আমি মনে করি না। ‘ইতি মৃণালিনী’ তো ভেঙ্কটেশের ছবি। আমি দেখেছিলাম ‘ইতি মৃণালিনীর’ও পোস্টার ছেঁড়া হয়েছিল। আমার মনে হয় না ভেঙ্কটেশ কী রিল্যায়ান্স কেউ এটা করাবে। ওরাও তো প্রোডিউসর। পোস্টার ছিঁড়লে যে প্রোডিউসরের কত ক্ষতি হতে পারে, সেটা ওরা বুঝবে,” ধীরে সুস্থে বলেন মৌ।

মৌ বা অঞ্জন দত্ত অস্বীকার করলেও টলিউডের বহু প্রযোজকই ঘরোয়া আলোচনায় অভিযোগ করেন তাঁদের ছবির পোস্টার ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের নির্দেশেই ছেঁড়া হয়।

এই ব্যাপারে কী বলছেন ভেঙ্কটেশ-এর মহেন্দ্র সোনি?

এ রকম অভিযোগ কেন বারবার করা হয় আপনাদের বিরুদ্ধে?

“সত্যি, এ সব শুনে হাসব না কাঁদব এটাই ভাবছি। আমাদের কি কোনও কাজ নেই? এই মুহূর্তে পাঁচটা বিগ বাজেট ছবি প্রায় রেডি। আরও পাঁচটা ছবি ফ্লোরে যাচ্ছে। এত কাজের মধ্যে আমরা অন্যদের ছবির পোস্টার ছেঁড়ার প্ল্যান করব? যদি কেউ মনে করে আমরা কোনও ছবির পোস্টার ছিঁড়েছি, তা হলে প্রোডিউসরকে বলছি আপনি দু’হাজার পোস্টার দিয়ে যান। আমি আমার লোককে দিয়ে আমাদের ছবির পোস্টারের জায়গায় আপনার পোস্টার লাগিয়ে দেব। আর পোস্টার যদি ছবি হিট করাত, তা হলে অনেক ছবিই ব্লকবাস্টার হত,” বলে ফোনটা কেটে দেন মহেন্দ্র সোনি।

যে রকম অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছে, এই পোস্টার ছেঁড়া নিয়ে জল যে আরও গড়াবে তা এখনই বলে দেওয়া যায়।

সত্যি, বিতর্কেরও ‘শেষ বলে কিছু নেই’।

‘আবার ব্যোমকেশ’-এর সময় হয়েছিল... ‘রঞ্জনা’র সময় হয়েছিল... এ বারও হচ্ছে... ভেরি ভেরি স্যাড
অঞ্জন দত্ত

indranil roy poster film rip tore tear tearing
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy