Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

‘ছবির সামনে গানকে রাখে সৃজিত’

বললেন ‘এক যে ছিল রাজা’-র গীতিকার শ্রীজাত। শ্রেয়া ঘোষাল, অরিজিৎ সিংহ, কৌশিকী চক্রবর্তী থেকে কৈলাস খের— এ বার পুজোয় বাংলা গানের দিগন্ত খুলে যাবে রাজকীয় মেজাজে। কেমন করে? শুনলেন স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায় এমন গান নির্মাণের জন্য প্রয়োজন এমন এক পরিচালককে যিনি শুধু পরিচালক নন, তাঁর ভেতরে কাজ করছে এক গীতিকারের সত্তা। সৃজিত মুখোপাধ্যায়। প্রয়োজন ছিল এমন এক গীতিকারকে যিনি নিজে গায়ক

শ্রীজাত।ফাইল চিত্র

শ্রীজাত।ফাইল চিত্র

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:০০
Share: Save:

সমারোহে এসো হে পরমতর
সুন্দর এসো হে...
কেদারার আলতো ঝঙ্কারে মুখরিত এই সময়ের ইউটিউব।
না, কোনও সহজ কথার, শহুরে ছবি বা মেঠো গানের গিটার উন্মাদনা নয়। এই গান যেন বাঙালির আধুনিকতার আত্মপ্রকাশে তার চিহ্ন রেখে যাবে।
এই গান যেন নিয়ে যাচ্ছে বাঙালির সেই সময়ে যখন রবীন্দ্রনাথ গান লিখছেন, ব্রহ্মমন্দিরে বেজে উঠছে উপাসনার গান। দ্বিজেন্দ্রলাল রায় কলম ধরছেন সুরের জন্য।
এ কোন গান? ‘এক যে ছিল রাজা’র ‘সমারোহে এসো’ এই গান কোথায় যেন দ্রুত চলার জীবনকে খানিক থমকে দিচ্ছে। জানিয়ে দিচ্ছে, বাংলা গানের প্রচার ও প্রসারণের একটি সুনির্দিষ্ট ইতিহাস আছে যা বাঙালির সাংস্কৃতিক অগ্রচারিতার সঙ্গে জড়িত।

এমন গান নির্মাণের জন্য প্রয়োজন এমন এক পরিচালককে যিনি শুধু পরিচালক নন, তাঁর ভেতরে কাজ করছে এক গীতিকারের সত্তা। সৃজিত মুখোপাধ্যায়। প্রয়োজন ছিল এমন এক গীতিকারকে যিনি নিজে গায়ক। এই যুগলবন্দি পূর্ণতা পেল সঙ্গীত পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তর সুর মাধুর্যে। ছবিতে রাজার জৌলুস ঠিকরে পড়ল শ্রেয়া ঘোষাল আর ঈশান মিত্র-র কণ্ঠে।‘এক যে ছিল রাজা’-র এই গানটাই প্রথম লিখেছিলেন শ্রীজাত। তাঁর কলমে ‘পরমতর’ আরও সুন্দর হয়ে এল যেন! ‘‘ভয়ঙ্কর মুশকিলে পড়েছিলাম আমি। এই ছবিতে চারটে গান লিখতে হবে, কিন্তু চারটে চার রকমের। চারটে ঘোড়াকে চারটে দিকে ছুটতে বলা হল। সৃজিতের পক্ষেই এটা সম্ভব। ওর খুঁতখুঁতানির শেষ নেই। আসলে সেখান থেকেই তো ‘ভাল’ কিছু সৃষ্টি হয়।’’ বললেন এই গানের গীতিকার শ্রীজাত। এই গানটার ক্ষেত্রে তাঁকে অতীতে নিয়ে গিয়েছিলেন সৃজিত। শ্রীজাত বললেন, ‘‘সৃজিত বলেছিল তুমি ভাব, এমন একটা সময়ে তুমি গান লিখছ যখন রবীন্দ্রনাথ গান লিখছেন। কিন্তু তোমার গানের শব্দে যেন কোনও রাবীন্দ্রিক ছোঁয়া না থাকে...’’ শ্রীজাত বুঝেছিলেন, সৃজিতের এই ছবির জন্য তাঁকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। ‘‘এটা ‘উমা’ নয়, বা ‘ইয়েতি অভিযান নয় যে আজকের সাউন্ডস্কেপে গান লেখা হবে। গীতবিতান খুলেও শব্দ নিয়ে ভাবা যাবে না। ‘‘উল্টে আমার ভেতরের রবীন্দ্রনাথকে খানিক সরিয়ে ওই সময়ের মধ্যে চলে যেতে হবে। ভেবেছিলাম এ ভাবে গান লিখলে কেউ কি আজ শুনবে?’’ নিজেকেই প্রশ্ন করেছিলেন শ্রীজাত।দেখা গেল, এক দিনেই এই গান ইউটিউব ট্রেন্ডিং-এর পাঁচ নম্বরে।

এ ছবির বাকি তিনটে গানের একটি ঠুমরি যা কৌশিকী চক্রবর্তী গেয়েছেন। আর উর্দু-হিন্দি ঘেঁষা সুফি গান বেজে উঠবে কৈলাশ খেরের আবেগে, জানালেন শ্রীজাত।
‘‘ছবির শেষ গান অরিজিৎ গেয়েছে। আর আমার মনে হয়েছে, এই গান ওর শ্রেষ্ঠ গানের অন্যতম।’’ উত্তেজনা শ্রীজাত-র কণ্ঠে।বহু দিন পরে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে রাগাশ্রয়ী গান এল বাংলা ছবিতে।আরাধনার এমন রাজকীয় মেজাজ ইদানীং তো শোনা যায় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Srijato Song Movie Bengali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE