আদিবাসীদের সঙ্গে ছবির মুখ্য অভিনেতা রাজকুমার রাও। ছবি: সংগৃহীত।
বলিউডি ছবিতে অভিনয় করাটাই ছিল ওঁদের কাছে মস্ত বিষয়, তার উপর প্রেক্ষাগৃহে প্রথম বার সিনেমা দেখতে যাওয়া। তাও আবার নিজেদের অভিনীত ছবি সিনেমা হলে গিয়ে দেখার সুযোগ।
ওঁরা সকলেই ‘নিউটন’-এর অভিনেতা। যদিও ‘অভিনয়’টা ওঁদের করতে হয়নি। কেননা বাস্তবে ওঁরা যা, ছবিতে তার একচুলও নড়চড় হয়নি।
কথা হচ্ছে রাজকুমার রাও অভিনীত ‘নিউটন’-এর। অস্কারের দরবারে দেশের আপাতত একমাত্র অফিসিয়াল সিলেকশন ‘নিউটন’। ছবিতে এক দিকে কিছু চরিত্রে যেরকম রাজকুমার রাও, পঙ্কজ ত্রিপাঠি এবং সঞ্জয় মিশ্ররা অভিনয় করেছেন, অন্য দিকে পরিচালক অমিত মাসুরকর বেশ কিছু চরিত্রের জন্য বাস্তবের কিছু মুখকেই বেছে নিয়েছেন। সে তালিকায় রয়েছেন ছত্তীসগঢ়ের ২৫ জন আদিবাসী, রয়েছেন ২৬ বছরের তরুণ সাংবাদিক মঙ্গল কুঞ্জম। এঁরা সকলেই নিজেদের জীবনের চরিত্রগুলিই ছবিতে তুলে ধরেছেন।
আরও পড়ুন: ‘নিউটন’এর এই রিয়েল লাইফ সাংবাদিককে চেনেন?
ওঁদের জন্যই একদিন স্পেশ্যাল স্ক্রিনিংয়ের আয়োজন করেছিল টিম ‘নিউটন’। দক্ষিণ ছত্তীসগঢ়ের কোন্দগাঁও জেলার সাংবাদিক ইসরার আহমেদের হাতে ছিল সমস্ত দায়িত্বভার। তবে সেদিন ইসরার বেশ দুঃখী ছিলেন। ছবিতে যে ২৫ জন আদিবাসী অভিনয় করেছেন তাঁদের সকলেরই আমন্ত্রণ ছিল। হঠাৎই মারা যান বৈশাখো ও গান্দোরাম নামের দুই আদিবাসী অভিনেতা। তবে তাঁদের পরিবারের বাকি সকলে এসে দেখে গিয়েছেন ছবিটা। তাছাড়া কোঙ্গেরা আর কিয়েভালেন্ডা জেলার বাকি সকল আদিবাসীই বেশ আনন্দেই ছবিটা দেখেছেন। সাংবাদিক ইসরার আহমেদ যিনি ছবির একজন চিত্রগ্রাহকও, বলছেন, “প্রথমত একটা বলিউড ছবিতে ওঁরা অভিনয় করছেন। তার উপর এই প্রথম বার সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখলেন ওঁরা। ওঁদের কাছে এটা যেন একটা আলাদা পাওনা।”
কোন্দগাঁওতে সিনেমা দেখতে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণপত্র। ছবি সৌজন্যে: ফেসবুক।
তবে ছবি দেখতে গিয়ে বেজায় আনন্দ অনুভব করছিলেন ‘নিউটন’-এর সেই সাংবাদিক মঙ্গল কুঞ্জম। বাস্তবের নির্ভীক সাংবাদিক মঙ্গল কুঞ্জম রাজনীতিবিদ থেকে পুলিশ, কাউকেই কড়া প্রশ্ন করতে দ্বিধা বোধ করেন না। আর এমনই সব প্রশ্ন করার জন্য রীতিমতো খুনের হুমকি অবধি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। নিউটন-এও মঙ্গল কুঞ্জমের চরিত্রটা এক্কেবারে এক। এলাকার আইজিকে অস্বস্তিকর প্রশ্ন করে ফেলে সে। ২৬ বছরের এই সাংবাদিকের কথায়, “পরিচালক আমাকে বলেছিলেন যে পুলিশকে তুমি যে কোনও প্রশ্ন করতে পারো। আর তাই যে প্রশ্নগুলো আমাকে বেশি করে ভাবায়, তার কোনওটাই আমি বাদ দিইনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy