Advertisement
২৬ মার্চ ২০২৩

সারাহায় শিহরণ

আমজনতা তো এই চিঠি-চাপাটির খেলায় দিব্যি মেতেছে। সেলেব্রিটিরা কী বলছেন? আমজনতা তো এই চিঠি-চাপাটির খেলায় দিব্যি মেতেছে। সেলেব্রিটিরা কী বলছেন?

সুদীপা ও রাহুল

সুদীপা ও রাহুল

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৭ ১১:১০
Share: Save:

সোশ্যাল মিডিয়ায় সারাহা ডট কম-এর নামে যে তোলপাড় চলছে, তাকে এক ধরনের শিহরণ বলা যায় বইকী। ছেলে-বুড়ে কেউই বাদ নেই মেঘনাদের অমোঘ বাণীর মায়াজাল থেকে! ফেসবুক, টুইটারে গত এক সপ্তাহ ধরে চলা হইচই থেকে স্পষ্ট, বেনামি চিঠি পাওয়ার কতটা আকুলতা সকলের। সারাহা জমানা হোয় গয়া দিওয়ানা গোছের ব্যাপার!

Advertisement

সারাহা-য় অ্যাকাউন্ট খুললে অ্যানোনিমাস বার্তা আসছে। ভাল-মন্দ যা কিছু হতে পারে। প্রেরকের নাম-পরিচয় জানার উপায় নেই। এই খেলায় আমজনতা মাতলেও সেলেবরা একটু তফাতেই। এমনিতে তাঁদের জীবনে বিড়ম্বনার শেষ নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা পোস্টের পাল্টা হাজার হাজার কমেন্ট ভেসে আসে। তার মধ্যে অশ্লীল, অপমানজনক কথাও থাকে। তাই যেচে পড়ে কাউকে ‘সুবিধে’ করে দিতে রাজি নন টলি-তারকারা।

মিমি চক্রবর্তীকে প্রশ্নটা করতেই জবাব এল, ‘‘পাগল নাকি!’’ এই সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলতে রাজি নন পার্নো মিত্র বা তনুশ্রী চক্রবর্তীরাও। বেনামি চিঠি যে ঝামেলার, তা স্বীকার করলেন দু’জনেই। কিছু দিন আগে ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি দিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন পার্নো। অশ্লীল মন্তব্যে ভরে গিয়েছিল তাঁর সাইট। পার্নো সে সবের তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। কিন্তু জেনে বুঝে কাউকে সুযোগ করে দিতে রাজি নন তিনি। সাফ বলে দিলেন, ‘‘এ সব পাগলামিতে কোনও আগ্রহ নেই।’’

অনিন্দ্য

Advertisement

তবে কিছু সেলেব মজেছেন সারাহা-য়। অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় যেমন। এক দিনের জন্য অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। আবার ডিলিটও করে দিয়েছেন। ‘‘১৩৪৫ টা মেসেজ পেয়েছি। ভালগুলো শেয়ার করেছি। অনেকে গালাগালও দিয়েছে। বিক্রমের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আর কী! তবে পুরো বিষয়টাই মজার জন্য করেছিলাম,’’ বললেন অনিন্দ্য। রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিজ্ঞতা আবার অন্য রকম। হুজুগে পড়েই সারাহা-য় এসেছিলেন। তবে তিনি স্রেফ প্রেমের বার্তাই পেয়েছেন। রাহুলের কথায়, ‘‘আমি সাহিত্য ভালবাসি, প্রেম ভালবাসি। তাই হয়তো প্রচুর প্রেমের বার্তা পেয়েছি। ভালও লেগেছে সেগুলো পেয়ে। আমাকে খারাপ কথা কিন্তু একজনও পাঠায়নি।’’ তবে বেশি দিন হয়তো সারাহা নিয়ে তাঁর আগ্রহ থাকবে না। বললেন, ‘‘আমার ল্যাদ এত বেশি যে হয়তো অ্যাকাউন্টটা ডিলিটও করব না। যেমন আছে তেমনই প়ড়ে থাকবে দিনের পর দিন।’’ রাহুলের মতো ভাল অভিজ্ঞতা হয়নি সঞ্চালক সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের। কৌতূহলী হয়ে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। তবে এমন কিছু অশ্লীল বার্তা পেয়েছেন যে অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। বললেন, ‘‘অন্যদের দেখে উৎসাহী হয়েছিলাম। প্রথম দিকে ভাল চিঠি আসছিল। সেগুলো ফেসবুকে শেয়ারও করেছি। তার পর খুব নোংরা কথাবার্তা পেতে শুরু করলাম। বাধ্য হয়েই অ্যাকাউন্ট ডিলিট করলাম।’’ সারাহা-র মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাক হয়ে যেতে পারে, এমন গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে। সুদীপাও সে সব ভেবে আর হুজুগে মাততে রাজি নন।

অনেক সেলেব্রিটির ফেক অ্যাকাউন্ট থাকে সোশ্যাল সাইটে। সেই সব বেনামি সাইটের মালিকেরা সারাহা-য় অ্যাকাউন্ট খুলেছে। এবং দেদার অ্যানোনিমাস চিঠির জবাব দিয়ে যাচ্ছে। অভিনেতা অর্জুন চক্রবর্তীর নামে যেমন ফেক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে। এবং সেখানে সারাহা-র মাধ্যমে চিঠি-চাপাটি চলছে। অর্জুন গোটা বিষয়টা জানেনও না। বললেন, ‘‘এই সোশ্যাল সাইটের হুজুগগুলোয় আমি কোনও দিনই থাকি না। আর বেনামি অ্যাকাউন্ট নিয়ে কী বলব বলুন!’’

সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করতে হেসে বললেন, ‘‘আমাকে গালাগাল দেওয়ার থাকলে কেউ এমনিই দিতে পারে। সারাহা-র সাহারা লাগবে না।’’ অতএব সেলেবরা ধরেই নিয়েছেন এখানে অ্যাকাউন্ট খুললে ইতিবাচক কথার পাশাপাশি নিন্দেমন্দও জুটবে।

আসলে, যে মেঘনাদকে কেউ বধ করতে পারবে না তাকে সুযোগ করে দেওয়াটাও বুদ্ধিহীনতার পরিচয় বলেই অনেকের মত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.