এত দিন শহরের কিছু প্রেক্ষাগৃহ সংস্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজে জড়িয়েছিলেন তাঁরা। এ বার নাট্যচর্চার পৃষ্ঠপোষকতায় সামিল হচ্ছেন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ।
পাইকপাড়ার মোহিত মৈত্র মঞ্চকে ঘিরে কলকাতা পুরসভার উদ্যোগে গড়ে উঠতে চলেছে বিনোদিনী নাট্যচর্চা কেন্দ্র। রেপার্টরি থিয়েটারের আদলে সেখানে নাট্যপ্রযোজনার কাজ চলবে, যেমনটি চলে রাজ্যের মিনার্ভা রেপার্টরিতে। নতুন রেপার্টরির কাজ চালানোর ভার পুরসভা ‘নাট্যস্বজন’ সংস্থাকে দিয়েছে। কলকাতা ও জেলার নাট্যকর্মীদের নিয়ে গড়া এই নাট্যস্বজন সংস্থার সভাপতি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
কিন্তু পুরসভা কেন নাট্যপ্রযোজনায় নিজেকে জড়াল? মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার মনে করাচ্ছেন, পুরসভা ধারাবাহিক ভাবে কলকাতার সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহ সংস্কারের কাজ করেছে। স্টার থিয়েটার, টাউন হল থেকে শুরু করে উত্তম মঞ্চবহু নিদর্শনই রয়েছে। শহরের ৮ প্রেক্ষাগৃহ পুরসভার তত্ত্বাবধানেই চলে। রেপার্টরি নির্মাণকে তারই বিস্তার হিসেবে দেখছে পুরসভা। দেবাশিবাবু বলেন, “নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় দরপত্র বিলি করেই ‘নাট্যস্বজন’কে এই রেপার্টরির ভার দেওয়া হয়েছে।” আরও চার-পাঁচটি সংস্থা দরপত্রের ডাকে সাড়া দিয়েছিল। নাট্যকর্মী মনোজ মিত্রের তত্ত্বাবধানে একটি কমিটি নাট্যস্বজনকে বেছেছে।
পুর কর্তৃপক্ষ ও নাট্যস্বজন জানিয়েছে, প্রথম বছরে নাটকের খাতে ১৫ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। বিজ্ঞাপন দিয়ে শিল্পী-কলাকুশলীদের নেওয়া হবে। পরিচালকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠিত অভিনেতাকে নেওয়ার সুযোগও থাকবে। তবে মিনার্ভা রেপার্টরির আদলে সদস্যদের বেতন দেওয়া হবে না। শো-ওয়র্কশপ-মহড়া বাবদ সাম্মানিক দেওয়া হতে পারে।
রেপার্টরির প্রথম প্রযোজনা হিসেবে ভাবা হয়েছে শম্ভু মিত্রের লেখা ‘চাঁদ বণিকের পালা’ নাটকটি। শম্ভুবাবুর জীবদ্দশায় এর মঞ্চায়নের কাজ কিছু দূর এগিয়ে থমকে যায়। পরে বাংলাদেশের একটি দল এবং এখানে কৌশিক সেনের দল নাটকটির অংশ বিশেষ অভিনয় করে। বিনোদিনী রেপার্টরিতে নাটক পরিচালনা করবেন শাঁওলী মিত্র। সহকারী অর্পিতা ঘোষ, শেখর সমাদ্দার ও দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। ২০১৫-র জানুয়ারিতে মোহিত মৈত্র মঞ্চে নাটকটি মঞ্চস্থর পরিকল্পনা। ব্রাত্যর কথায়, “বিনোদিনীর নামে রেপার্টরি শম্ভু মিত্রের নাটকের অভিনয় করলে, তা পেশাদার মঞ্চ ও গ্রুপ থিয়েটারের পরম্পরাতে সেতু বন্ধন করবে।” শাসক দলের ঘনিষ্ঠ নাট্যকর্মীদের সংস্থা বলে পরিচিত ‘নাট্যস্বজন’-এর সদস্য না-হলেও এই প্রয়াসকে স্বাগত জানাচ্ছেন কৌশিক সেন। বলেন, “দারুণ উদ্যোগ! কে কোথায় নাটক করবে তা নিয়ে না ভেবে নাট্যস্বজন সিরিয়াস থিয়েটার-চর্চায় মন দিচ্ছে দেখে ভাল লাগছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy