পাড়ার দোকানে হালখাতার নেমন্তন্নে গিয়ে মিষ্টির প্যাকেট আর ক্যালেন্ডার সংগ্রহ? নাকি ইডেনে কেকেআরের হয়ে গলা ফাটানো? নতুন বছরের প্রথম সন্ধ্যা কী ভাবে কাটবে বাঙালির?
চৈত্রের শেষ বিকেলে কোথায় এই আলোচনায় গমগম করবে ইডেন ও শহরের ক্রিকেট মহল, তা নয়। আড্ডা, আলোচনা, তর্ক-বিতর্কের যেন একটাই বিষয়, একই প্রশ্ন। শনিবারও কি ওপেন করবেন কেকেআরের ‘সানি’ সুনীল নারাইন? যাঁর নামকরণ করা হয়েছিল সানি গাওস্করের নামে।
বৃহস্পতিবার শুরুতেই নারাইনকে ব্যাট হাতে নামতে দেখে চমকে গিয়েছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা-রা। কিংগসের পেসার ইশান্ত শর্মা ম্যাচ হেরে বৃহস্পতিবার রাতে বলছিলেন, ‘‘নারাইনকে হঠাৎ প্যাড-আপ করতে দেখে চমকে যাই আমরা। ভেবেছিলাম রবিন উথাপ্পা নামবে। কিন্তু নারাইনকে নামতে দেখে পরিকল্পনার বারোটা বেজে যায়।’’ গৌতম গম্ভীরদের সহকারী কোচ সাইমন ক্যাটিচ আবার শুক্রবার ইডেনে প্র্যাকটিসের আগে বললেন, ‘‘ওটা চমক ছিল না। আমরা জানতাম, নারাইন ব্যাট করতে পারে। আসলে ক্রিস লিনের জায়গায় এমন কাউকে দরকার ছিল, যে পাওয়ার প্লে-তে রান তুলতে পারবে।’’
আর নারাইন? কেকেআরের ওয়েবসাইটে তিনি বলেন, ‘‘ড্যারেন ব্র্যাভোর টিপস আমার কাজে লেগেছে। ওর টিপস নিয়ে নেটে অনুশীলন করে ভাল ব্যাট করলাম।’’
কিন্তু সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধেও কি এই চমক থাকবে নববর্ষে? বোধহয় না। ক্যাটিচ তেমনই ইঙ্গিত দিলেন, ‘‘সানরাইজার্স যথেষ্ট ভাল ও তৈরি টিম। ওদের সমীহ করতেই হবে। ওদের বিরুদ্ধে বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় না যাওয়াই ভাল।’’
বিপক্ষ কোচ টম মুডি যদিও বলে রাখলেন, ‘‘যে কোনও পরিস্থিতি ও চমকের জন্য তৈরি আমরা। সে নারাইন হোক বা অন্য কেউ। টি-টোয়েন্টিতে এমন হয়েই থাকে।’’
নিজেদের দলকে ফুরফুরে রাখতে চায় কেকেআর। সেই কারণে এ দিন প্রথম একাদশের ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দেওয়া হল। তাঁরা সবাই এ দিন হোটেলের সুইমিং পুলে ঝাঁপালেন। অনুশীলনে এসেছিলেন রিজার্ভ বেঞ্চের ছেলেরা। যে দলে এখন আছেন বাংলাদেশী অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান-ও। ইডেনের উইকেটে এ বার বাউন্স ও গতি আছে বলে হোম ম্যাচে সাকিব প্রথম একাদশে জায়গা পাচ্ছেন না। তবে শনিবার যেহেতু বিকেল চারটেয় ম্যাচ শুরু ও সারা দিনের রোদে পিচ শুকনো থাকার সম্ভাবনা বেশি, তাই সাকিবের সুযোগ আসতেও পারে।
তা যদি হয়, তা হলে ম্যাচটা দুই বাংলাদেশি তারকা সাকিব ও মুস্তাফিজুর রহমানের দ্বৈরথ হয়ে উঠতে পারে। এক জন বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পিনার-অলরাউন্ডার। অন্য জন বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন বাঁ হাতি কাটারের জন্য। শুক্রবার সন্ধ্যায় দুই দল ইডেনের দুই প্রান্তের নেটে একই সময়ে প্র্যাকটিস করলেও বাংলাদেশের দুই তারকাকে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে দেখা গেল না।
আরও পড়ুন: হ্যাটট্রিকের দিনেই হার দুই তারকার
ম্যাচটা আর একজনের কাছেও বড় পরীক্ষা। গব্বর— শিখর ধবন। যিনি এই ইডেনেই শেষ টেস্ট খেলে গিয়েছেন গত বছর অক্টোবরে। সেই ইডেনেই একটা স্মরণীয় ইনিংস খেলে ফের ভারতীয় দলের দরজা খুলতে চান। এ দিন প্র্যাকটিসের পর ইডেনে দাঁড়িয়ে সেই ইচ্ছার কথাই বলতে শোনা গেল তাঁকে, ‘‘চার দিকে আমাকে নিয়ে এত সমালোচনা হচ্ছে। সবাই আমার এত নিন্দা করছে। এগুলোই আমাকে বাড়তি শক্তি জোগায়। এই ইডেনেই কাল একটা বড় ইনিংস খেলতে চাই আমি।’’
ওদিকে মুখে কুলুপ যুবরাজ সিংহের। কিন্তু যে ভাবে ট্র্যাভেলিংয়ের ক্লান্তি উপেক্ষা করে মন দিয়ে অনুশীলন করলেন, মনে হচ্ছে ইডেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যুবিকে দেখবে আজ, শনিবার। সে নামুন, নাইটদের নববর্ষ ভেস্তে না দিলেই হল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy