‘ডিয়ার জ়িন্দেগি’ ছবির জন্য গোয়ার রাস্তায় আলিয়া ভট্ট এবং শাহরুখ খান-এর সাইকেল ভ্রমণ। ছবি- সংগৃহীত
যত ক্ষণ না ‘লেডিবার্ড’ সাইকেল কিনে দেওয়া হচ্ছে, কোনও মতেই বন্ধুদের মুখ দেখাব না। একটা সময় এমন জেদ ধরে বসেছিলাম। বাবা বলেছিলেন, কোম্পানি দেখে সাইকেল শিখতে যেয়ো না। মনের আনন্দে সাইকেল চালাতে শেখো। পরে কাজে দেবে। কিন্তু সেই সময়ে বুঝতে পারিনি এই সাইকেল চালাতে পারা একটা সময়ে আমার জীবনধারার অঙ্গ হয়ে উঠবে।
মানসিক চাপ, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার অভ্যাসে আগের সেই তন্বী, ছিপছিপে চেহারার খোলস ছেড়ে এসেছি অনেক আগেই। বহু বার জিমে ভর্তি হয়েও সময়ের অভাবে ছেড়ে দিতে হয়েছে। ডায়েট করব ভেবেও বিরিয়ানির গন্ধে মন উচাটন হয়েছে। এ দিকে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শরীরে বাসা বাঁধতে থাকা নানা রকম রোগও ভয় ধরাচ্ছে। শরীর ভাল রাখতে যে কিছুই করতে পারছি না, সেই চিন্তায় জটিলতা আরও বাড়ছে। এই সব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে ফোন করলাম ছোটবেলার বন্ধু বর্ষাকে। পুষ্টিবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করার পাশপাশি ফিটনেস প্রশিক্ষক হিসাবেও কাজ করছে। তার নিদান হল, সাইকেল চালাতে হবে। সুস্থ থাকতে নাকি এ ছাড়া খুব বেশি কিছু না করলেও চলে। দিনের যে কোনও সময়ে সাইকেল চালালেই হবে। কিন্তু তা নিয়মিত চালাতে হবে। কলকাতা জুড়ে নাকি এখন ছোট ছোট ক্লাবও তৈরি হয়েছে সাইকেল প্রেমীদের নিয়ে। সেই দলের সদস্যেরা দলবেঁধে নিয়মিত সাইকেল চালাতে বেরোন।
সাইকেল চালালে শরীরে এবং মনে কেমন প্রভাব পড়ে?
১) ওজন নিয়ন্ত্রণ
ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, রোজ নিয়ম করে অন্তত পক্ষে আধ ঘণ্টা সাইকেল চালালে বিপাকহার বেড়ে যায়। ক্যালোরির খরচ বেশি হয়। এর ফলে শরীরের মেদ ঝরতেও সময় লাগে না। জোরে সাইকেল চালালে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৪৯৮ থেকে ৭৩৮ ক্যালোরি খরচ হয়।
২) হার্টের স্বাস্থ্য
চিকিৎসকদের মতে, সাইকেল চালানো খুব ভাল শরীরচর্চা। এই অভ্যাস রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, ফলে হৃদ্রোগের আশঙ্কা কমে এবং শরীরের রক্ত সঞ্চালনও ভাল হয়।
৩) ফুসফুসের স্বাস্থ্য
নিয়মিত সাইকেল চালালে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ে। সাইকেল চালানোর সময়ে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছলে বাড়তে থাকে শ্বাস-প্রশ্বাসের হার। যা ফুসফুস সংলগ্ন পেশিগুলিকে মজবুত করে তুলতে সাহায্য করে।
৪) মানসিক স্বাস্থ্য
কেবল শরীরের নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতেও এই অভ্যাসটি দারুণ কার্যকর। একাকিত্ব, মানসিক চাপ, উদ্বেগ যেন কমবেশি সবাইকে ঘিরে ধরেছে। নিয়মিত সাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তুললে মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি সম্ভব।
৫) ক্যানসার প্রতিরোধী
বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, নিয়মিত সাইকেল চালালে ক্যানসারের মতো মারণরোগের ঝুঁকিও অনেকটা কমে যায়। গবেষকদের দাবি, কেউ যদি নিয়মিত সাইকেল চালান, তা হলে তাঁর ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। যত বেশি সাইকেল চালানো যায়, এই আশঙ্কা তত কমতে থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy