Advertisement
E-Paper

হংকং ফ্লু নিয়ে আতঙ্কের মাঝে কী ভাবে যত্নে রাখবেন শিশুকে? টোটকা দিলেন পুষ্টিবিদ

সদ্যোজাতদের তো মায়ের দুধ ছাড়া কিছুই খাওয়ার কথা নয়। তা হলে তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে কী করে? আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন পুষ্টিবিদ অর্পিতা ঘোষ দেব।

Image of child

বাড়ির খাবারের চেয়ে আদর্শ কিছুই নেই। সেখান থেকেই প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে পারে বাচ্চারা। ছবি- সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৩ ১৯:২৯
Share
Save

আবহাওয়ার ঘন ঘন পরিবর্তনে সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশির মতো সমস্যা তো আগেও ছিল। মরসুমি এই ঠান্ডা লাগায় নিয়ম করে আক্রান্ত হত খুদেরা। এখনও তার অন্যথা হয়নি কিন্তু এই সাধারণ ঠান্ডা লাগা বা ইনফ্লুয়েঞ্জা কখন যে ফ্লু-এর আকার নিচ্ছে, তা ঠিক আঁচ করতে পারছেন না মা-বাবারা। করোনার প্রকোপ একটু কমতেই দেশ জুড়ে চোখ রাঙাচ্ছিল অ্যাডিনোভাইরাস। পর পর শিশুমৃত্যুর ঘটনাও চিন্তায় ফেলেছিল চিকিৎসদের। এখন আবার সেই ভাইরাসটিই নিজের চরিত্র বদলেছে। ‘হংকং ফ্লু’ নামে পরিচিত নতুন এই ভাইরাস। বয়স্কদের যেমন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ভয় রয়েছে, তেমন বাচ্চাদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কিন্তু উড়িয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। অনেকেই মনে করেন যে কোনও রোগের আক্রমণ ঠেকাতে চিকিৎসার পাশাপাশি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা জরুরি। করোনার গতিবিধি দেখার পর ভাইরাসের ক্ষেত্রেও তা বিশেষ ভাবে প্রযোজ্য। তাই বড়রা সকালে খালি পেটে কখনও হলুদ, কখনও নিমপাতা, আবার কখনও সাপ্লিমেন্টও খেয়ে ফেলছেন। কিন্তু সদ্যোজাত শিশুদের তো মায়ের দুধ ছাড়া কিছুই খাওয়ার কথা নয়। তা হলে তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে কী করে? আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন পুষ্টিবিদ অর্পিতা ঘোষ দেব।

এই প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা রকম ধারণা প্রচলিত রয়েছে। করোনাকালে এ নিয়ে অনেকেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। বড়দের ক্ষেত্রে এই সব প্রযোজ্য হলেও শিশুদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা একেবারেই উচিত নয়। বিশেষ করে সদ্যোজাতদের ক্ষেত্রে কোনও রকম ঝুঁকি নেওয়া একেবারেই উচিত নয়। পুষ্টিবিদ অর্পিতা ঘোষ দেব বলেন, “আসলে কী জানেন তো, প্রতিরোধ ক্ষমতা কিন্তু বংশপরম্পরায় পাওয়া আশীর্বাদের মতো। শিশুর মা, মায়ের মা, তার মা এই ভাবে পারিবারিক ইতিহাসের মতো প্রতিরোধ ক্ষমতাও কিন্তু প্রজন্মের পর প্রজন্মে বাহিত হয়। একটা বয়সের পর বাইরে থেকে কিছু খেয়ে বা খাইয়ে কিন্তু আলাদা করে ‘ইমিউনিটি বুস্ট’ করা সম্ভব নয়।”

তা হলে সদ্যোজাতদের ক্ষেত্রে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখার উপায় কী?

ভাইরাসবাহিত যে কোনও রোগই আগে শিশু এবং বয়স্কদের আক্রমণ করে। চিকিৎসকরা বলেন দুই ক্ষেত্রেই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা প্রায় থাকে না বললেই চলে। অর্পিতা মতে, “সদ্যোজাতদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বা়ড়াতে প্রথম হাজার দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মায়ের জঠরে থাকার দিন থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ১ বছর বয়স পর্যন্ত সঞ্চিত পুষ্টিই কিন্তু বহু দিন পর্যন্ত শিশুদের যে কোনও রোগের সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে।”

কার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কেমন হবে, তা কিসের উপর নির্ভর করে?

গর্ভে থাকাকালীন মায়ের শরীর থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করেই ভ্রূণ বেড়ে ওঠে। তাই প্রাথমিক ভাবে ভ্রূণের ভাল-মন্দ অনেকটাই নির্ভর করে মায়ের খাওয়াদাওয়ার উপর। কিন্তু অর্পিতার মতে, “বাচ্চার জন্মের আগে মায়ের শরীর থেকে এবং জন্মের পর মায়ের দুধ থেকে যে পরিমাণ পুষ্টি পায়, তাতেই প্রাথমিক পর্যায়ে ইমিউনিটির ভিত মজবুত হয়ে যায়। তাই মায়ের পুষ্টি এ ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর পর যখন বাচ্চা বাইরের খাবার খেতে শুরু করে, তখন থেকেই প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে।”

নানা ধরনের ভাইরাস বা ফ্লু-র আক্রমণ থেকে শিশুদের বাঁচাতে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখতে হবে?

অনেকেই মনে করেন, বাড়ির খাবারের চেয়ে আদর্শ কিছুই নেই। সেখান থেকেই প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে পারে বাচ্চারা। কিন্তু প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণে ভরপুর খাবার খাওয়ানো সম্ভব হয় না। তাই অনেক শিশুর ক্ষেত্রেই অপুষ্টিজনিত সমস্যা দেখা যায়। নিজে হাতে খাওয়া, জল খাওয়া, মল-মূত্র ত্যাগ করে সঠিক ভাবে হাত ধোয়ার মতো অভ্যাসও কিন্তু এই প্রতিরোধ ব্যবস্থার অঙ্গ। পুষ্টিবিদের মতে, “প্রতিরোধ ক্ষমতা এক দিনে হুশ করে শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া যায় না। শুধু খাবার খাওয়ানো নয়, ছোট ছোট কিছু বিষয় একদম ছোট বয়স থেকেই তাদের অভ্যাস করাতে হবে। যার উপর নির্ভর করে গোটা প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও মজবুত হবে। এ ছাড়াও সারা দিনে অল্প অল্প করে বিভিন্ন খাবার খাওয়ানো, সঠিক সময়ে ঘুমের অভ্যাস করানোও জরুরি।”

Image of child and mother

এ ছাড়াও সদ্যোজাতদের ক্ষেত্রে নিয়ম করে টিকা নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। ছবি- সংগৃহীত

পরিবারের কেউ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কী করণীয়?

১) শিশুর কাছাকাছি না যাওয়াই ভাল

২) শিশুকে দেখাশোনা করেন যিনি, তাঁর স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখা জরুরি

৩) এ ছাড়াও সদ্যোজাতদের ক্ষেত্রে নিয়ম করে টিকা নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ

৪) ছোটদের মাস্ক পরানো সম্ভব নয়। তাই বড়দের সব সময়ে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে

৫) সদ্যোজাতদের চেয়ে একটু বড় যারা, তাদের নিয়ম করে হাত ধোয়া অভ্যাস করানো দরকার

এমন কিছু নিয়ম মেনে চললে খানিকটা হলেও সুরক্ষিত রাখা যাবে শিশুকে।

Hong Kong Flu Precaution Diet Tips

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}