Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

রং খেলুন চোখ বাঁচিয়ে, পরামর্শ চিকিত্‌সকদের

দোলের দিন দুর্ঘটনার ভয়ে বাড়িতে লুকিয়ে বসে থাকাটা কোনও কাজের কথা নয়। তা হলে উপায়টা কী? চিকিত্‌সকেরা বলছেন, সব চেয়ে নিরাপদ ভেষজ রঙে দোল খেলা। কিন্তু সেই পরামর্শ ক’জনই বা শোনেন! এ ক্ষেত্রে তাই কিছু সতর্কতার কথা খেয়াল রাখাই ভাল। আর দোলের দিন সেই তালিকায় এক এবং অন্যতম সাবধানতার জায়গা হল চোখ। ডাক্তারেরা বলছেন, দোলের রংবাজি স্বাগত। কিন্তু তা যেন দৃষ্টিশক্তির ক্ষেত্রে কোনও ঝুঁকির কারণ না হয়ে দাঁড়ায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০২:২১
Share: Save:

দোলের দিন দুর্ঘটনার ভয়ে বাড়িতে লুকিয়ে বসে থাকাটা কোনও কাজের কথা নয়। তা হলে উপায়টা কী? চিকিত্‌সকেরা বলছেন, সব চেয়ে নিরাপদ ভেষজ রঙে দোল খেলা। কিন্তু সেই পরামর্শ ক’জনই বা শোনেন! এ ক্ষেত্রে তাই কিছু সতর্কতার কথা খেয়াল রাখাই ভাল। আর দোলের দিন সেই তালিকায় এক এবং অন্যতম সাবধানতার জায়গা হল চোখ। ডাক্তারেরা বলছেন, দোলের রংবাজি স্বাগত। কিন্তু তা যেন দৃষ্টিশক্তির ক্ষেত্রে কোনও ঝুঁকির কারণ না হয়ে দাঁড়ায়।

কর্নিয়া বিশেষজ্ঞ মৃন্ময় দাসের কথায়, “রং ভরা বেলুন চোখে লাগলে তা খুবই বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ ওই আঘাত সরাসরি রেটিনায় হওয়ার ঝুঁকিই বেশি। এ ক্ষেত্রে চোখে জলের ঝাপটা দিলে আরও ক্ষতি। চোখ বন্ধ রেখে কোনও ভাবে কাছের কোনও হাসপাতালে পৌঁছে যাওয়াই শ্রেয়।”তিনি জানিয়েছেন, ছোট-ছোট দানাদার চিকচিকে রংও চোখের পক্ষে বিপজ্জনক। কারণ রাসায়নিক ওই দানাগুলি কর্নিয়ার ক্ষতি করে। এ ক্ষেত্রে কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিত্‌সকের কাছে না গেলে পরবর্তী সময়ে চোখে সংক্রমণ হতে পারে।

তা হলে বাঁচার উপায় কী? চিকিত্‌সকেরা জানাচ্ছেন, কেউ রং দিতে এলে তখন চোখ বন্ধ রাখাটাই শ্রেয়। কনট্যাক্ট লেন্স কোনও ভাবেই পরা যাবে না। রং খেলার পরে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলা ভাল। রং খেলার আগে মাথার চুলে ভাল করে নারকেল তেল মেখে নিলে ক্ষতিকর রঙের প্রভাব থেকে এক দিকে যেমন চোখ বাঁচবে, তেমনই স্নানের সময়ে চোখে রং ঢোকার ভয়ও খানিকটা কমবে। অনেক সময়ে রং দিতে গিয়ে আঙুলের খোঁচা লেগেও কর্নিয়া বা কনজাংটিভায় ক্ষত তৈরি হতে পারে। এ ছাড়া কিছু কিছু রং কর্নিয়ায় আটকে থাকে। সেটা তোলার ব্যবস্থা না করলে পরবর্তী সময়ে দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

চক্ষু চিকিত্‌সক জ্যোতির্ময় দত্ত সতর্ক করে বলেন, চোখে রং লাগলে রগড়াবেন না। তাঁর কথায়, “নিজে জোর করে রং তোলার চেষ্টাও করবেন না। ডাক্তারের কাছে যান। অনেক সময়ে আমাদের কাছে এমন লাল, ফোলা চোখ নিয়ে অনেকে আসেন যে বাধ্য হয়ে স্টেরয়েড দিতে হয়।”

চক্ষু বিশেষজ্ঞ শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “চোখে রং গেলে কেমিক্যাল কনজাঙ্কটিভাইটিস হতে পারে। কর্নিয়ায় লাগলে কেরাটাইটিস হতে পারে। আবিরও চোখের পক্ষে ক্ষতিকর।”

চক্ষু চিকিত্‌সক সুমিত চৌধুরী পরামর্শ দিয়েছেন, “চোখে রং ঢুকলে ভাল করে চোখ ধুয়ে অ্যান্টিবায়োটিক মলম লাগান। চোখ জ্বালা করলে লুব্রিকেটিং ড্রপ দিলেও আরাম পাওয়া যায়। তাতেও যদি না কমে, তা হলে ডাক্তারের কাছে যাওয়াই শ্রেয়।”

প্রশ্ন উঠেছে, ছুটির দিনে ডাক্তার খুঁজলেই কি পাওয়া যাবে? ছুটির দিনে হাসপাতালের যা দশা থাকে, সেখানে গিয়েও কি তত্‌ক্ষণাত্‌ চিকিত্‌সা মিলবে? কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজির অধ্যাপক হিমাদ্রি দত্ত বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠানে ২৪ ঘণ্টা ডাক্তার থাকবেন। দোল এবং কালীপুজোয় আমরা সাধারণ দিনের চেয়ে বেশি সংখ্যক ডাক্তারকে ডিউটিতে রাখি। কারণ এই দুটো দিনই চোখের নানা সমস্যা নিয়ে রোগীরা ছুটতে ছুটতে আসেন। তখন পরিষেবা না পেলে খুব সমস্যা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

holi colour eye eye care
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE