পোশাক পরে রোগী প্রস্তুত। অপারেশন টেবিলে গিয়ে চিকিৎসক জানতে পারলেন যে হাসপাতালে অজ্ঞান করার ইঞ্জেকশনই নেই! বাধ্য হয়েই শনিবার অস্ত্রোপচার করা বাতিল করে দিলেন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। চরম হয়রান হতে হল রোগীদের। ফের কবে অস্ত্রোপচার হবে সেটিও নিশ্চিত করে বলতে পারেননি চিকিৎসকেরা। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ রোগীদের পাশাপাশি চিকিৎসকেরাও।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে জেলা হাসপাতালে বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো চিকিৎসকেরা সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে জানিয়ে রাখেন। শনিবার রোগীদের অস্ত্রোপচারের জন্য প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু পরে জানা যায় রোগীদের অজ্ঞান করার ইঞ্জেকশন নেই। শল্য চিকিৎসক অনির্বাণ জানা বলেন, ‘‘আজ ৭টা অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল। দু’দিন আগেই তা জানিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে জানতে পারি যে অজ্ঞান করার ইঞ্জেকশনই নাকি নেই।’’ তিনি বলেন, ‘‘পুরোপুরি অজ্ঞান করার দরকার হয় না এমন পাঁচটি অস্ত্রোপচার করেছি। বাকি দু’টি অস্ত্রোপচার বাতিল করতে বাধ্য হই।’’
পড়ে দিয়ে হাত ভেঙেছে ধুবুলিয়ার বাসিন্দা বছর সাতেকের শিবা বিশ্বাসের। ঠাকুমা মিনু বিশ্বাস বলেন, ‘‘এক্স-রে করার পর চিকিৎসক দেখেন যে ভাঙা হাড় ঠিকমত জোড়া লাগেনি। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। আজ অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তা হল কই।’’ একই অবস্থা চাপড়ার সুঁটিয়ার বাসিন্দা বছর দশেকের দিনবন্ধু ঘোষেরও। গাছ থেকে পড়ে গিয়ে পা ভেঙেছেন। তাঁকেও অস্ত্রোপচার না করে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অস্ত্রোপচারের জন্য পোশাক পরানো হয়েছিল হরিণডাঙার নিমাই ঘোষকে। পরে জানতে পারেন অস্ত্রোপচার হবে না। তিনি বলেন, ‘‘জেলা হাসপাতাল অথচ অস্ত্রোপচারের আগে জানা যাচ্ছে ইঞ্জেকশন নেই! এ ভাবে হয়রান করার কোনও মানে হয়?’’ নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছিুক এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘হয় তো এই অস্ত্রোপচার তেমন জরুরি ছিল না। কিন্তু যদি জরুরি কিছু হত তা হলে কী হত ?’’
খবর পেয়েই ছুটে আসেন হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক দেবব্রত দত্ত। সদর হাসপাতালের জননী সুরক্ষা বিভাগ থেকে ইঞ্জেকশন নিয়ে এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। তাঁর কথায়, ‘‘এমনটা হওয়ার হওয়ার কথা নয়। কোথাও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। চেষ্টা করছি যাতে ভবিষ্যতে এমনটা না হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy