রোজ কত ঘণ্টা ঘুমোন আপনি? প্রশ্নটা শুনলেই কি মাথা গরম হয়ে যায়? মনে আসে হাজার ফিরিস্তি। কী করে আর ঘুমোই বলুন? কাজের চাপে, ব্যস্ততায়, হাজারো ঝামেলায় ঘুম কি আর হয়? বয়স চল্লিশের কোটা পেরোতে না পেরোতেই ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্পন্ডিলাইটিস থাবা বসাচ্ছে শরীরে। এ দিকে সত্তর পেরনো বাবা এখনও ম্যারাথনে নামতে পারেন! তর্কের খাতিরে কাজের চাপ, অনিদ্রা এই সব হাবিজাবি অজুহাতে বাবাকে চুপ তো করিয়ে দেন, তবে জানেন কি বাবা আপনার থেকেও কম ঘুমিয়ে এত ফিট? কারেন্ট বায়োলজি জার্নালে প্রকাশিত একটা রিপোর্ট অন্তত সে রকমই বলছে। আমাদের পূর্বপুরুষরা নাকি আমাদের থেকে অনেক কম ঘুমোতেন। আমরা ‘ইনসমনিয়া,’ ‘ফাস্ট লাইফ’-এর হাজারো অজুহাত দিয়েও ঘুমের হিসেবে কিন্তু ওদের টেক্কা দিয়েই দিয়েছি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক জানাচ্ছেন একটা গোটা দিনে(২৪ ঘণ্টা) প্রাপ্তবয়স্ক মানুষরা এখন গড়ে সাড়ে ৭ ঘণ্টা ঘুমোন। এমনকী, অনিদ্রায় ভোগাও নাকি এখন বেশ বিরল ঘটনা। কিন্তু এদেরই আফ্রিকা বা দক্ষিণ আমেরিকার পূর্বসূরীদের ক্ষেত্রে এই গড় সংখ্যাটা ছিল সাড়ে ৬ ঘণ্টা। মানব সভ্যতার অগ্রগতি ও অভিযোজনের পাশাপাশি আবহাওয়ার পরিবর্তনই ঘুম বাড়ার কারণ বলে মনে করছেন গবেষকরা।
কাজের চাপ, ব্যস্ততা, রাত জেগে টিভি দেখা, স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। আর তাতেই বাড়ছে ঘুম। কিছু ইউরোপীয় গবেষক বৈদ্যুতিক বাতি বা কৃত্রিম আলোও ঘুমের হার বাড়ার কারণ বলে মনে করছেন। আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকার আদিম মানুষদের উদাহরণ দেখিয়ে তারা জানাচ্ছেন, সূর্যাস্তের পর আদিম মানুষরা গড়ে সাড়ে ৩ ঘণ্টা ঘুমোতেন। কিন্তু এখন সারাদিনই প্রায় কৃত্রিম আলোয় থাকার ফলে প্রভাব পড়ছে ঘুমে। লস অ্যাঞ্জেলস ইউনিভার্সিটির গবেষক জেরোম মিগুয়েল আবার অন্য কারণ দেখিয়েছেন। তাঁর মতে সূর্যাস্তের পর তাপমাত্রা কমতে থাকলেই ঘুমিয়ে পড়তেন আদিম মানুষরা। মধ্য রাতে তাপমাত্রা যখন একেবারে নেমে যেত তখন তাদের ঘুম ভেঙে যেত।
চিকিত্সকরা বলেন দিনে অন্তত ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। কাজেই সকাল বেলা বিছানা ছাড়তে ইচ্ছা না হলে অফিসের বসকে গালি দেওয়ার আগে একবার ভাববেন কি? নাকি ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন নিয়ে জোর গলায় তর্ক জুড়বেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy