Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

লাখো শিশুর ডায়াবেটিস, যথেষ্ট সজাগ কি স্কুলগুলি

ছোট্ট মেয়েটি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তাকে প্রতি দিন ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নিতে হয়। ইন্টারভিউয়ে তা শুনেই স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, এমন ছাত্রীকে ভর্তি নেওয়া যাবে না। ঝুঁকি হয়ে যাবে। আর একটি মেয়ে এক দিন হঠাৎ ক্লাসে অজ্ঞান হয়ে গেল। শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানতেন না তার ডায়াবেটিস রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৫ ০২:৩০
Share: Save:

ছোট্ট মেয়েটি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তাকে প্রতি দিন ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নিতে হয়। ইন্টারভিউয়ে তা শুনেই স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, এমন ছাত্রীকে ভর্তি নেওয়া যাবে না। ঝুঁকি হয়ে যাবে। আর একটি মেয়ে এক দিন হঠাৎ ক্লাসে অজ্ঞান হয়ে গেল। শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানতেন না তার ডায়াবেটিস রয়েছে। নিয়মিত ওষুধ খায় বলেই মেয়েটির শরীরে শর্করার পরিমাণ হঠাৎ কমে গিয়ে (হাইপোগ্লাইসিমিয়া) এমন হয়েছিল। সে সময় একমুঠো চিনি খাইয়ে দিলেই সে সুস্থ হয়ে উঠত। কিন্তু কেউ তা করেননি। শিক্ষক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ সচেতন হলে এমন অনেক ঘটনাই এড়ানো যায়, বলছেন এই রোগের চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা।

শনিবার শহরের এক হোটেলে কলকাতা ডায়াবেটিস অ্যান্ড এন্ডোক্রিনোলজি ফোরাম, পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়া, অ্যাপোলো সুগার ও ইন্টারন্যাশন্যাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের আয়োজিত এক আলোচনাসভায় উঠে এল শিশুদের ডায়াবেটিস ও তা নিয়ে সচেতনতার অভাবের কথা। ভারতের মতো দেশ, যাকে ‘পৃথিবীর ডায়াবেটিস রাজধানী’ বলা হয় সেখানে শিশুদের মধ্যেও ক্রমশ এই রোগ বাড়ছে। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে এখন ‘টাইপ-ওয়ান’ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৯৭ হাজার ৭০০-র বেশি। তাদের দিনে ৪টি করে ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নিতে হয়। তাই এই রোগের নানা দিক সম্পর্কে পড়ুয়া বা অভিভাবকরা সচেতন হলেই হবে না, স্কুল স্তরে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী থেকে শুরু করে স্কুল কর্তৃপক্ষকেও সজাগ করে তোলাটা সমান জরুরি বলে মনে করছেন চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা।

সংগঠনগুলির তরফে এ দিন জানানো হয়, তারা কলকাতার সরকারি, বেসরকারি স্কুলে ডায়াবেটিস নিয়ে নিখরচায় প্রচার অভিযান চালাতে আগ্রহী। এর আগে দিল্লির বেশ কিছু স্কুলে তারা এই কাজ করেছে। আলোচনাসভায় উপস্থিত রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আশ্বাস দেন, সরকারি স্কুলে যাতে এ নিয়ে সচেতনতা অভিযান চালানো যায়, সে ব্যাপারে তাঁরা সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত।

ঠিকঠাক জীবনশৈলী কী ভাবে এই রোগ থেকে শিশুদের দূরে রাখতে পারে, সেই দিকটির উপরেও এ দিনের আলোচনাসভায় বিশেষ জোর দেন এন্ডোক্রিনোলজিস্ট শুভঙ্কর চৌধুরী, তীর্থঙ্কর চৌধুরীরা। তাঁদের বক্তব্য, বাচ্চাদের নিয়মিত খেলাধুলো, ব্যায়াম এবং সুষম খাওয়াদাওয়ার দিকে স্কুল কর্তৃপক্ষকেও লাগাতার নজর রাখতে হবে। স্কুলে ক্যান্টিন থাকলে সেখানে যাতে স্বাস্থ্যকর খাবার পাওয়া যায়, তা-ও দেখতে হবে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত শিশুদের সুস্থ রাখতে ও নতুন করে কোনও শিশু যাতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত না হয়, এই দুই কারণেই এখন এটা অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE