শরীরের বিভিন্ন অংশে বৃহদাকারের টিউমার অস্ত্রোপচার করে বের করা এখন আর নতুন কিছু নয়। তবে জরায়ু মুখে বড় আকারের টিউমার সচরাচর পাওয়া যায় না। এ বার তেমনই এক টিউমার অস্ত্রোপচারে সাফল্য পেলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিত্সকেরা। টিউমারটির ওজন ছিল প্রায় ৬ কিলোগ্রাম। চিকিত্সক সব্যসাচী রায়ের কথায়, “প্রথমে বোঝাই যাচ্ছিল না, টিউমারের অবস্থানটা কোথায়। পরে দেখা যায় জরায়ু মুখে। বৃক্ক নালি, মুত্র থলি সব জড়িয়ে একাকার হয়েছিল। দীর্ঘ সময়ের অস্ত্রোপচারে সাফল্য মিলেছে।’’ এই অস্ত্রোপচারে সব্যসাচীবাবুর সঙ্গে ছিলেন চিকিত্সক কিঙ্কর সিংহ ও অ্যানাস্থেটিস্ট সুমন চট্টোপাধ্যায়।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদার বাসিন্দা আরতী ঘোষের শরীরে দীর্ঘদিন বাসা বেঁধেছিল ওই টিউমার। দরিদ্র পরিবারের আরতীদেবী গোড়ায় বিষয়টিতে গুরুত্ব দেননি। চিকিত্সকের কাছে পর্যন্ত যাননি। কিন্তু মাস দেড়েক ধরে কিছুই খেতে পারছিলেন। তারপর তিনি স্থানীয় চিকিত্সককে দেখান। যান বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালেও। চিকিত্সকেরা টিউমার হয়েছে জানান। সেই সঙ্গে ক্যানসারের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি। চূড়ান্ত দুশ্চিন্তায় পড়ে দরিদ্র পরিবারটি। কয়েক দিন আগে আরতিদেবীকে ভর্তি করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যালে।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে অস্ত্রোপচারটি হয়েছে। বিপন্মুক্ত হয়ে স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন আরতিদেবী। তাঁর কথায়, “খুব কষ্ট পেতাম। কী হয়েছে বুঝতেই তো পারিনি। এখন নিশ্চিন্ত লাগছে।’’ আরতীদেবীর ভাইপো রবীন ঘোষের কথায়, “পিসি তো আগে কিছুই বলত না। ধীরে ধীরে খাওয়া কমতে থাকে। তখনই আমাদের সন্দেহ হয়।’’
চিকিত্সকদের মতে, জরায়ুর বিভিন্ন অংশে টিউমার হতেই পারে। হয়ও। তাতে অস্ত্রোপচারে সমস্যা হয় না। কিন্তু জরায়ু মুখে বৃহত্ টিউমার দীর্ঘদন ধরে বাড়তে থাকায় আশপাশের সব নালীকে জড়িয়ে জটিল পরিস্থিতি তৈরি করে। সব নালী ধীরে ধীরে সরিয়ে অস্ত্রোপচারে দীর্ঘ সময় লাগে। আরতিদেবীর ক্ষেত্রে দীর্ঘ আড়াই ঘন্টার অস্ত্রোপচারে সাফল্য মেলায় সকলেই খুশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy