Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

রোগ রুখতে বিষ্ঠা দাওয়াই!

অঙ্গ প্রতিস্থাপনের কথা তো শুনেছেন। কিন্তু, মল প্রতিস্থাপন? পড়েই গা গুলিয়ে উঠছে? না, অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মতো অন্য কারও মল আপনার শরীরে প্রতিস্থাপন করা হবে না। করা হবে আপনার নিজেরই মল। আর তাতেই তরতর করে বেড়ে যাবে আপনার ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। শুধু তাই নয়, মোটা থেকে রোগা হওয়ার জন্যও কাজে আসতে পারে আপনার মল। আধুনিক চিকিত্সা বিজ্ঞানের এই নতুন আবিষ্কারকে চিকিত্সকরা বলছেন ‘অটোলোগাস ফেসাল ট্রান্সপ্লান্ট’।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৫ ১৪:৩৪
Share: Save:

অঙ্গ প্রতিস্থাপনের কথা তো শুনেছেন। কিন্তু, মল প্রতিস্থাপন? পড়েই গা গুলিয়ে উঠছে? না, অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মতো অন্য কারও মল আপনার শরীরে প্রতিস্থাপন করা হবে না। করা হবে আপনার নিজেরই মল। আর তাতেই তরতর করে বেড়ে যাবে আপনার ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। শুধু তাই নয়, মোটা থেকে রোগা হওয়ার জন্যও কাজে আসতে পারে আপনার মল। আধুনিক চিকিত্সা বিজ্ঞানের এই নতুন আবিষ্কারকে চিকিত্সকরা বলছেন ‘অটোলোগাস ফেসাল ট্রান্সপ্লান্ট’।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে শৈশবে, মূলত জন্ম থেকে ১০ বছর বয়স পর্যন্ত যদি কোনও রোগের কারণে শরীরে বেশি অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয় তবে বড় হয়ে হাঁপানি, ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিসিজ, মোটা হয়ে যাওয়া বা বাতের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিত্সকরা বলছেন, এই সব উপসর্গ রুখতে পারে আপনার নিজেরই মল। এ ক্ষেত্রে আপনার ত্যাগ করা মল প্রথমে চিকিত্সকরা রেফ্রিজারেটরে জমিয়ে রাখবেন, এর পর নির্দিষ্ট সময় পর মলের ক্ষতিকারক জীবাণু বা মাইক্রোব মরে গেলে অথবা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল তৈরি হয়ে গেলে সেই মলই আবার ভরে দেওয়া হবে আপনার শরীরে। যাকে বলা যেতে পারে মাইক্রোবিয়াল রেস্টোরেশন। আর এতেই নাকি আপনার হাঁপানি, পেটের সমস্যা, মোটা হয়ে ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা বা বাতের সমস্যাও কমে যাবে। ব্যাপারটা অনেকটা আমাদের কম্পিউটার ‘রিবুট’ করার মতো।

তবে এই স্ব-প্রতিস্থাপনের ধারণা কিন্তু নতুন নয়। পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে স্ট্যানলি ফকো নামের এক মেডিক্যাল প্রযুক্তিবিদ এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছিলেন। ফেসাল রিকন্সটিটিউশন নামের চিকিত্সা পদ্ধতিতে তিনি অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের আগে রোগীদের মল রেফ্রিজারেটরে জমিয়ে রাখতেন। সেই মল দিয়ে তৈরি করতেন ক্যাপসুল। অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের পর রোগীদের দেওয়া হত তাদেরই নিজেদের মল দিয়ে তৈরি ক্যাপসুল। তবে রোগীরা কিন্তু না জেনেই গিলে ফেলতেন নিজেদের মলসমৃদ্ধ ক্যাপসুল। জানাজানি হওয়ার পর চাকরি গিয়েছিল ফকোর। এই ঘটনার ছয় দশক পর এখন মল প্রতিস্থাপনেই নতুন দিশা দেখছেন চিকিত্সকরা।

‘পিকু’ ছবিটা দেখেছেন? জীবনের সায়াহ্নে পৌঁছে পিকুর বাবা ভাস্কর ব্যানার্জির (অমিতাভ বচ্চন) জীবনে একটা মাত্রই চিন্তা ছিল। পর দিন সকালে মলত্যাগটা ঠিকঠাক হবে তো? আবার ঘাড়ে চেপে বসবে না তো কোষ্ঠকাঠিন্যের ভূত? পিকুর বাবার ভয়টা আসলে অল্পবিস্তর প্রায় সব ‘বুড়ো বাঙালি’র মধ্যেই থাকে। আসলে বাঙালি যে এই ব্যাপারটা নিয়ে বেশ ‘অবসেসড’ সেটা প্রায় একটা ‘ওপেন সিক্রেট’। তবে যা ত্যাগ করেই স্বস্তি তা যদি আবার আপনার শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, আর তাতে কমে যায় পেট খারাপ, বাত বা হাঁপানির মতো বিরক্তিকর রোগগুলো তবে তো ভালই হয়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE