Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
এম আর বাঙুর

এসি থেকে আগুন, আতঙ্ক হাসপাতালে

বছর চারেক আগে ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের স্মৃতি ফিকে হয়নি এখনও। ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর ভোরের সেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল ক্রমশ। প্রাণ হাতে করে বেরিয়ে এসেছিলেন অনেকে। কিন্তু বহু রোগী ও হাসপাতালের কর্মী আটকে পড়েছিলেন ভিতরে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ছুঁয়েছিল ৯৩।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৩৫
Share: Save:

বছর চারেক আগে ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের স্মৃতি ফিকে হয়নি এখনও। ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর ভোরের সেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল ক্রমশ। প্রাণ হাতে করে বেরিয়ে এসেছিলেন অনেকে। কিন্তু বহু রোগী ও হাসপাতালের কর্মী আটকে পড়েছিলেন ভিতরে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ছুঁয়েছিল ৯৩।

আমরির মতো ভয়ানক না হলেও মঙ্গলবার সকালে টালিগঞ্জের এম আর বাঙুর হাসপাতালের এসিতে আগুন লাগায় অনেকটা সেই রকম আতঙ্কই ছড়িয়ে পড়ল রোগীদের মধ্যে। আগুন লাগে তিনতলায় অর্থোপেডিক বিভাগের পাশের ঘরের এসিতে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, কালো ধোঁয়ায় ঘর ভরে গিয়েছিল। তবে ওই ঘরে মাত্র চার জন রোগী থাকায় খুব দ্রুত হাসপাতালের নার্স ও নিরাপত্তারক্ষীরা চাকা লাগানো শয্যার রোগীদের বার করে আনেন। কেউ আবার আতঙ্কে স্যালাইন হাতেই লিফ্‌টে করে নেমে পড়েন বলে খবর। আতঙ্কে চিৎকার শুরু করেন অনেকে। তবে এই ঘটনার জেরে কেউ আহত হননি।

ঠিক কী ঘটেছিল এ দিন?

হরিদেবপুরের বাসিন্দা অমর কর জানান, রবিবার তাঁর স্ত্রী কাজল কর পেটে যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হন এম আর বাঙুরে। হাসপাতালের তিন তলায় ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ওই ঘরটিতে আগে ‘বার্ন ইউনিট’ থাকলেও বর্তমানে যে সব রোগীদের অস্ত্রোপচার হবে বা হয়ে গিয়েছে, তাঁদের রাখা হয়। সেখানেই রয়েছেন কাজলদেবী। অমরবাবু আরও জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ হাসপাতালের নীচেই ছিলেন তিনি। হঠাৎই তিন তলা থেকে চিৎকার শুনে তিনি দেখেন, তাঁর স্ত্রী যে ওয়ার্ডে রয়েছেন, সেখান থেকে গলগল করে ধোঁয়া বার হচ্ছে।

অমরবাবু বলেন, ‘‘দৌড়ে তিন তলায় উঠে দেখি একটি ঘরে কালো ধোঁয়া ভরে গিয়েছে। বারান্দায় চাকা লাগানো শয্যায় শুয়ে রয়েছেন তিন জন মহিলা রোগী। অর্থোপেডিক বিভাগ থেকে বেশ কয়েক জন রোগী বেরিয়েও এসেছেন। সকলের মুখেই আতঙ্কের ছাপ।’’ তিনি জানান, ঘটনার পরেই নিরাপত্তারক্ষীরা দ্রুত আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন।

এক নিরাপত্তারক্ষী জানান, ওয়ার্ডের নার্সেরাই প্রথম আগুন দেখতে পেয়ে খবর দেন। নিরাপত্তারক্ষীরা নিজেরাই প্রথমে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। সংখ্যায় কম থাকায় রোগীদেরও দ্রুত বার করে আনা সম্ভব হয়। কিছুক্ষণের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করে দেওয়া হয় ওই ওয়ার্ডে। খবর দেওয়া হয় দমকলেও। দমকল সূত্রে জানানো হয়েছে, দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও হাসপাতালের চেষ্টাতেই প্রায় দশ মিনিটের মধ্যে আগুন নিভে গিয়েছিল। পরে দমকলের কর্মীরা ওই ঘরের জানলার কাচ ভেঙে ধোঁয়া বার করেন।

হাসপাতালের সুপার সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুন নিভিয়ে দেওয়ায় বড় ধরনের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। দশ মিনিটের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তবে প্রাথমিক ভাবে রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। সবাই অবশ্য অক্ষতই আছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE