Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বনগাঁয় প্রস্তাবিত সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ঘুরে দেখলেন কর্তারা

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর প্রায় দু’বছর পার হতে চলেছে। রাজ্যে প্রস্তাবিত ৪০টি মাল্টি স্পেশ্যালিটি ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের একটিও এখনও চালু হয়নি। শনিবার বনগাঁ-র প্রস্তাবিত ৩০০ শয্যার সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরির কাজ সরেজমিনে খতিয়ে দেখলেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। হাসপাতাল পরিদর্শনে যাওয়া ওই দলে ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের মাল্টি ডিসিপ্লিনারি এক্সপার্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সুব্রত মৈত্র,উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য-সহ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক আধিকারিক।

স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।

স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।

বনগাঁ
নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৫ ০৩:৩২
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর প্রায় দু’বছর পার হতে চলেছে। রাজ্যে প্রস্তাবিত ৪০টি মাল্টি স্পেশ্যালিটি ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের একটিও এখনও চালু হয়নি। শনিবার বনগাঁ-র প্রস্তাবিত ৩০০ শয্যার সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরির কাজ সরেজমিনে খতিয়ে দেখলেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। হাসপাতাল পরিদর্শনে যাওয়া ওই দলে ছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের মাল্টি ডিসিপ্লিনারি এক্সপার্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সুব্রত মৈত্র,উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য-সহ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক আধিকারিক। সুব্রতবাবু এ দিন বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার শুভেন্দু প্রসাদ মণ্ডল এবং ব্লাড ব্যাঙ্কের আধিকারিক গোপাল পোদ্দারের সঙ্গে বৈঠকও করেন।

রাজ্যে পিছিয়ে-পড়া এলাকায় ৩৪টি, এবং পিছিয়ে-পড়া নয় এমন এলাকায় ছ’টি মাল্টি স্পেশ্যালিটি ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরির কথা। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, হাসপাতালগুলি অর্থ দফতরের অনুমোদন পেয়েছে চলতি বছর জানুয়ারিতে। তার পর অনেক জায়গাতে মাটি পরীক্ষা, নকশা তৈরির কাজ হয়েছে। কিন্তু আদৌ কবে কাজ শেষ করে, এবং ডাক্তারের ব্যবস্থা করে রোগীর চিকিৎসা শুরু করা যাবে তা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের একাংশের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

বনগাঁর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পড়ছে পিছিয়ে-পড়া নয় এমন এলাকায়। এই তালিকার আরও পাঁচটি হাসপাতাল হল কালনা, বসিরহাট, আরামবাগ, আসানসোল ও শ্রীরামপুর হাসপাতাল। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য এ দিন বলেন, ‘‘বনগাঁ হাসপাতাল তৈরি করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। দরপত্র ডাকার কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হচ্ছে।’’ বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির একজিকিউটিভ চেয়ারম্যান তথা বনগাঁর মহকুমা শাসক বলেন, ‘‘ওই হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরুর জন্য কিছু গাছ কাটবার প্রয়োজন ছিল। তা নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। এখন তা মিটে গিয়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, জুলাই মাসের মধ্যে মহকুমা হাসপাতালে একটি ছয়টি শয্যার এইচডিইউ(হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট) তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে। একই সঙ্গে ওই সময়ের মধ্যে ওই ইউনিটের পাশেই তৈরি হয়ে যাবে ছয় শয্যার ইমার্জেন্সি অবজারভেশন ওয়ার্ড। সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি হয়ে গেলে শুধু বনগাঁর মানুষের নয়, গোটা জেলার মানুষের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান, নতুন প্রসূতি বিভাগ, এসএনসিইউ, দিবারাত্রি ব্লাড ব্যাঙ্ক পরিষেবা, ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে সর্বক্ষণ দু’জন চিকিৎসক থাকা, নিরন্তর বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা চালু হয়েছে।

বনগাঁ মহকুমার প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ ওই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। রোগীর আত্মীয়দের অবশ্য অভিযোগ, কারণে-অকারণে চিকিৎসকেরা রোগীদের কলকাতায় রেফার করে দেন। আয়ারা রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। চিকিৎসার গাফিলতিকে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ মাঝেমধ্যেই উঠছে। রয়েছে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর অভাব। এই সমস্যাগুলির সমাধান না হলে উন্নত প্রযুক্তি আনলেও তা কি কার্যকর হবে?

রোগী কল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যান তথা বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন ‘‘রোগী ও তাদের আত্মীয়দের অভিযোগ জানানোর জন্য ইতিমধ্যেই অভিযোগ বক্স বসানো হয়েছে। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও বসানো হচ্ছে।’’ হাসপাতালে পরিকাঠামো উন্নতির সরকারি পদক্ষেপে বনগাঁর বাসিন্দাদের আশা, এ বার হয়তো আর রোগী নিয়ে রাতবিরেতে কলকাতায় দৌড়াতে হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE