Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

এইআইভি মিলছে বেশি, চিকিৎসা হবে দুর্গাপুরেও

এইচআইভি পজিটিভ ও এইডস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে শিল্পাঞ্চলে। পরীক্ষা থেকে যে তথ্য-পরিসংখ্যান মিলছে, তাতে এমন ধারার কথাই জানিয়েছে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ বার দুর্গাপুরেই ‘অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি’ (এআরটি) পরিষেবা চালু করতে উদ্যোগী হয়েছেন মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘এখানে লিঙ্ক এআরটি গড়ার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের অনুমোদন এসে গিয়েছে। ঘর ও অন্য পরিকাঠামো নির্দিষ্ট করার কাজ চলছে।’’

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৫ ০১:৫১
Share: Save:

এইচআইভি পজিটিভ ও এইডস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে শিল্পাঞ্চলে। পরীক্ষা থেকে যে তথ্য-পরিসংখ্যান মিলছে, তাতে এমন ধারার কথাই জানিয়েছে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ বার দুর্গাপুরেই ‘অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি’ (এআরটি) পরিষেবা চালু করতে উদ্যোগী হয়েছেন মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘এখানে লিঙ্ক এআরটি গড়ার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের অনুমোদন এসে গিয়েছে। ঘর ও অন্য পরিকাঠামো নির্দিষ্ট করার কাজ চলছে।’’

মহকুমা হাসপাতালের পরিসংখ্যান থেকে দেখা গিয়েছে, ২০১৪ সালে মোট ৬৪ জনের রক্তে এইচআইভি পজিটিভের নমুনা মিলেছিল। সে বার বছরের প্রথম চার মাসে এই সংখ্যা ছিল ২৬। কিন্তু এই বছর প্রথম চার মাসে তা বেড়ে হয়েছে ৩০। অর্থাৎ, এ বার প্রথম চার মাসেই আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের প্রায় অর্ধেক। কয়েক বছর আগে এইআইভি পজিটিভ এবং এইডস আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য ‘নোডাল এআরটি সেন্টার’ গড়ে ওঠে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আসানসোলে চালু হয় লিঙ্ক এআরটি সেন্টার। কিন্তু, দুর্গাপুরের রোগীদের চিকিৎসার জন্য ছুটতে হত বর্ধমানে। ফলে, খরচের পাশাপাশি যাতায়াতের ধকলও সামলাতে হত। অনেকেই ধারাবাহিক ভাবে চিকিৎসা করাতে পারতেন না। যা এই রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান অন্তরায় বলে মনে করেন ডাক্তারেরা। সেই সমস্যা মেটাতে এ বার দুর্গাপুরে এইচআইভি পজিটিভ মানুষজনের চিকিৎসার ব্যবস্থা চালু হবে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি’ (এআরটি) পদ্ধতিতে চিকিৎসার সময়ে এক সঙ্গে অন্তত তিনটি ‘অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল ড্রাগ’ ব্যবহার করা হয়। তাতে এইচআইভি-র সংক্রমণ থমকে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৩ থেকে এইচআইভি সংক্রমণের ক্ষেত্রে এআরটি পদ্ধতি ব্যবহারে জোর দিয়েছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এই চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলনের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই চিকিৎসা পদ্ধতি আরও উন্নত করার চেষ্টাও চালাচ্ছে তারা। এই পদ্ধতি ব্যবহারে বিশেষত নতুন রোগীদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য ভাবে রোধ করা গিয়েছে বলে তাদের দাবি।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে এই চিকিৎসা পদ্ধতি আগেই চালু হয়েছে। সেখানে এইচআইভি পজিটিভ এবং এইডস রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। দুর্গাপুরে যে সেন্টারটি গড়ে উঠবে সেটি সহায়কের ভূমিকা নেবে। হাসপাতাল সুপার দেবব্রত দাস জানান, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র রোগীরা এখানেই পাবেন। তাঁদের আর বর্ধমান যেতে হবে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুর্গাপুরের এইচআইভি পজি়টিভ এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘হাতের কাছে চিকিৎসার সুযোগ পেলে আমাদের অনেক সমস্যার সুরাহা হবে।’’

শুধু হাসপাতালের পরীক্ষায় নয়, স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির থেকে পাওয়া রক্তেও এইচআইভি-র উপস্থিতি মিলছে বলে ডাক্তারেরা জানাচ্ছেন। তবে ব্লাড ব্যাঙ্কে এরকম রক্ত পাওয়া গেলে রক্তদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে বলে হাসপাতালের এক ডাক্তার জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

subrata sit HIV durgapur blood bank AIDS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE