বছর চারেক আগে অবসর নিয়েছিলেন একমাত্র চিকিৎসক। তার পর নতুন কেউ আসেননি। ফলে ফার্মাসিস্ট, নার্স ও চর্তুথ শ্রেণির কর্মীর ভরসাতেই চলছে ভাটোরা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র।
মুণ্ডেশ্বরী ও রূপনারায়ণ নদ দিয়ে ঘেরা হাওড়ার ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া-চিতনান এলাকায় মূলত নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র মানুষের বাস। দুই পঞ্চায়েতের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নির্ভর করেন এই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উপর। প্রায় ৩০ বছর আগে তৈরি এই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীর চাপ বাড়তে থাকায় অন্তর্বিভাগ চালুর পরিকল্পনা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী ২০১০ সালে তৈরি হয় নতুন বাড়ি। আসে শয্যা। কিন্তু অর্ন্তবিভাগ আর চালু হয়নি। ২০১১ সালের জুন মাস নাগাদ একমাত্র চিকিৎসক অবসর নেওয়ার পরে এক জন ফার্মাসিস্ট, এক জন নার্স ও দু’জন চর্তুথ শ্রেণির কর্মী দিয়ে কোনওক্রমে চলছে আউটডোর।
উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক কর্মী জানান, নিয়মিত চিকিৎসক না থাকা সত্ত্বেও প্রতি দিন গড়ে ৮০-১০০ জন মানুষ আসেন। চিকিৎসা করেন ফার্মাটিস্ট। কয়েক মাস অন্তর ব্লক প্রশাসন থেকে স্বাস্থ্য শিবির করা হলেও সুরাহা হয় না। ফার্মাসিস্ট কেশবানন্দ রায় বলেন, ‘‘নিয়মানুযায়ী আমার চিকিৎসা করার কথা নয়। মানবিক কারণে চিকিৎসা করি। সমস্যা জটিল হলে ব্লক অথবা জেলা হাসপাতালে যেতে বলা হয়।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভাটোরা থেকে সবথেকে ‘কাছে’ বলতে জয়পুর ও বাগনান হাসপাতাল। প্রথমে নৌকা পার হয়ে তারপর ছোট গাড়িতে উঠে সেখানে পৌঁছানো যায়। ফলে কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে ভাগ্যের উপর ভরসা করা ছাড়া উপায় নেই। ভাটোরার বাসিন্দা অশোক সামন্ত, অজয় মালিক জানান, আগে এলাকাটি জেলার অন্য অংশের থেকে প্রায় বিছিন্ন হয়ে থাকলেও সম্প্রতি পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। নদীর উপর বাঁশের সেতু হয়েছে। ইটের রাস্তা দিয়ে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ছোট গাড়ি চলছে। তাঁদের দাবি, ‘‘উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগ না করলে আন্দোলনে নামা হবে।’’ ভাটোরার প্রধান অর্ধেন্দু আলু বলেন, ‘‘যাতায়াতের সমস্যা অনেকটাই মিটেছে। এ বার চিকিৎসক দেওয়ার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।’’
সমস্যার কথা স্বীকার করে আমতা-২ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক শর্মিলা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নিয়োগের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু যোগাযোগের সমস্যার জন্য কেউ যেতে চাননি। তাই ওখানে চুক্তিভিক্তিক চিকিৎসক রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘চুক্তিভিক্তিক চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়টি আলোচনার স্তরে রয়েছে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy