Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল

বহির্বিভাগ সপ্তাহে এক দিন, ক্ষোভ

গত চার মাস ধরে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের মেডিসিন বহির্বিভাগ বন্ধ ছিল। সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত ওই বহির্বিভাগ চালু রাখার নির্দেশ দেয়। কিন্তু চিকিৎকের অভাবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সেই নির্দেশ কার্যকরী করা যাচ্ছে না বলে দাবি করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৫ ০২:২১
Share: Save:

গত চার মাস ধরে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের মেডিসিন বহির্বিভাগ বন্ধ ছিল। সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত ওই বহির্বিভাগ চালু রাখার নির্দেশ দেয়। কিন্তু চিকিৎকের অভাবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সেই নির্দেশ কার্যকরী করা যাচ্ছে না বলে দাবি করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সপ্তাহে ছ’দিন তা চালু রাখার সরকারি নিয়ম থাকলেও গত দু’সপ্তাহ ধরে সপ্তাহে এক দিন ওই বিভাগ চালু থাকছে বলে অভিযোগ। এতে প্রতিদিনই বহু রোগী ঘুরে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অনেক রোগী বাধ্য হয়ে সাধারণ বহির্বিভাগের চিকিৎকদের দেখাতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও অভিযোগ।

হাসপাতাল সুপার অনুপ হাজরা বলেন, ‘‘মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎকের অভাবে গত দু’সপ্তাহ ধরে আপাতত প্রতি বৃহস্পতিবার করে মেডিসিন বহির্বিভাগ চালু রাখা হচ্ছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর চিকিৎক না দিলে আমাদের পক্ষে সপ্তাহে ছ’দিন ওই বিভাগ চালু রাখা সম্ভব নয়। অন্তত দু’জন চিকিত্সক পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।’’

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর বরুণ সাঁতরা জানান, রাজ্য জুড়ে চিকিৎসকের অভাব থাকায় রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালেও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎক নিয়োগ করতে সাময়িক দেরি হচ্ছে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে তিন জন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মধ্যে গত জানুয়ারি মাসে এক জন অন্য হাসপাতালে বদলি হয়ে যান। সেই থেকে মেডিসিন বহির্বিভাগটি বন্ধ হয়ে যায়। হাসপাতাল সুপার অনুপ হাজরার দাবি, বাকি দু’জন মেডিসিনের চিকিৎসকের পক্ষে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, ইনডোর ওয়ার্ড ও কলবুক সামনে বহির্বিভাগের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হচ্ছিল না। তিনি জানান, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে গত দু’সপ্তাহ ধরে বাকি দু’জন চিকিৎককে দিয়েই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কোনও রকমে প্রতি বৃহস্পতিবার করে বহির্বিভাগ চালু করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, হাসপাতালের সাধারণ বহির্বিভাগে জ্বর, সর্দি, কাশি ছাড়া অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয় না। সেই রোগীদের মেডিসিন বহির্বিভাগে চিকিৎসকদের দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। গত শুক্রবার বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালের সাধারণ বহির্বিভাগে চিকিত্সককে দেখাতে গিয়েছিলেন ইটাহারের মারনাই এলাকার বাসিন্দা পেশায় বিড়িশ্রমিক মামণি বর্মন। একই দিনে পেটে ব্যথা ও বমির উপসর্গ নিয়ে ওই বহির্বিভাগের চিকিৎককে দেখাতে গিয়েছিলেন করণদিঘির টুঙ্গিদিঘি এলাকার বাসিন্দা পেশায় ভ্যানচালক মহম্মদ আলি। তাঁরা জানান, সাধারণ বহির্বিভাগের চিকিৎকেরা আমাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে মেডিসিন বহির্বিভাগের চিকিৎসককে দেখানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু ওই বহির্বিভাগ বন্ধ থাকায় আমরা চিকিৎকদের দেখাতে না পেরে ফিরে আসি। পরে টাকা খরচ করে প্রাইভেটে চিকিৎকদের দেখাই।

জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অমল আচার্য বলেন, ‘‘প্রায় তিন মাস আগে আমি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কাছে লিখিত ভাবে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ করার দাবি জানিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE