Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ছ’মাস ধরে হাসপাতালে বন্ধ ছানির অস্ত্রোপচার, সমস্যা

সংক্রমণের জেরে কোচবিহার জেলা সদর এমজেএন হাসপাতালে ছ’মাস ধরে বন্ধ চোখের ছানির অস্ত্রোপচার। তার জেরে সমস্যায় পড়েছেন রোগীরা। গত বছর জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে হাসপাতালে ছানির অস্ত্রোপচার করার পরে ৮ জন রোগীর চোখে সংক্রমণ দেখা দেয়। তাঁদের দৃষ্টিশক্তি বিপন্ন হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:২৮
Share: Save:

সংক্রমণের জেরে কোচবিহার জেলা সদর এমজেএন হাসপাতালে ছ’মাস ধরে বন্ধ চোখের ছানির অস্ত্রোপচার। তার জেরে সমস্যায় পড়েছেন রোগীরা।

গত বছর জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে হাসপাতালে ছানির অস্ত্রোপচার করার পরে ৮ জন রোগীর চোখে সংক্রমণ দেখা দেয়। তাঁদের দৃষ্টিশক্তি বিপন্ন হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার এত দিন বাদেও অস্ত্রোপচার শুরু না হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে স্বাস্থ্যকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য দাবি করেছে, সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে নতুনভাবে ওই অস্ত্রোপচারের ঘর সাজিয়ে তোলার কাজ হচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মার্চ থেকে ছানির অস্ত্রোপচার চালু করা যাবে।”

কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিস সাহা, হাসপাতালের সুপার জয়দেব বর্মন-সহ পদস্থ স্বাস্থ্যকর্তারা বৃহস্পতিবার ওই কাজের অগ্রগতি সরেজমিনে ঘুরে দেখেন।

কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভাশিস সাহা বলেন, “সমস্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে অস্ত্রোপচারের ঘরটিকে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলার কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। ওই ঘরটি কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পুরোপুরি সংক্রমণমুক্ত বলে নিশ্চিত হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। মার্চের শুরুতে অস্ত্রোপচার শুরুর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।”

ওই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি, পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “অত্যাধুনিকভাবে অস্ত্রোপচারের ঘরটি সংস্কার ও পুরোপুরি নিরাপদ করে গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে খানিকটা সময় লাগছে। কারও গড়িমসির ব্যাপার নেই।”

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলা সদর এমজেএন হাসপাতালের দোতলার একটি ঘরে চোখের ছানির অস্ত্রোপচারের জন্য ‘অপারেশন থিয়েটার’ রয়েছে। সেখানে গত বছরের ২৪ জুলাই অস্ত্রোপচার করানোর পরে ৮ জন রোগীর চোখে সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তাঁদের শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িতে চিকিৎসা করাতে হয়। তার পর থেকে সেখানে অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে রয়েছে। তাই ফি মাসে গড়ে অন্তত ৩০ জন রোগীকে অস্ত্রোপচারের জন্য বাইরের জেলার হাসপাতালে কিংবা নার্সিংহোমে যেতে হচ্ছে।

কোচবিহার নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের সভাপতি রাজু রায় বলেন, “জেলা হাসপাতালে এত দিন ধরে চোখের ছানির অস্ত্রোপচার বন্ধ থাকাটা জেলার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের বড় ব্যর্থতা। এতে রোগীদের নার্সিংহোম কিংবা বাইরের জেলার হাসপাতালে যেতে বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে। যাঁদের সেই সামর্থ্য নেই, তাঁরা ফের জেলা হাসপাতালে অস্ত্রোপচার চালুর অপেক্ষায় রয়েছেন। বারবার হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করে সঠিক তারিখ পাচ্ছেন না।”

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে বলেন, “রোগীদের ওই হয়রানির ব্যাপারে অনেকেই অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু আমি নিজে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ওই ব্যাপারে যোগাযোগ করে স্পষ্ট কিছু জানতে পারিনি। দ্রুত ফের চোখের ছানির অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা না হলে আন্দোলনের কথা ভাবতে হবে।”

কোচবিহার পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মহানন্দ সাহার অভিযোগ, “গোটা রাজ্যের স্বাস্থ্যের নৈরাজ্যের ছবিই ওই ঘটনায় উঠে এসেছে। আমরাও আন্দোলনে নামব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cataract operation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE