Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

মারণ রোগের সঙ্গে লড়ছে দুই খুদে, অনুপ্রেরণা বন্ধুত্ব

সিন্ড্রেলার মতো সুন্দর একটা পোশাক পরে নেচে নেচে ঘুরে বেড়াচ্ছে ফুটফুটে মেয়েটা। বছর চারেক বয়স। হাসতে হাসতে, ঘুরতে ঘুরতে চিৎকার করে বলে চলেছে, “তুমিও ডিজনিল্যান্ড যাবে!” এ রকমই একটা ভিডিও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ক’দিনের মধ্যেই ওই ভিডিওটি দেখা হয়েছে এক লক্ষ বারেরও বেশি। কিন্তু এমন একটি আনন্দের দৃশ্যের পিছনে লুকিয়ে থাকা গল্পটা কিন্তু মোটেই আনন্দের নয়। ভিডিওর ছোট্ট মেয়ে ভায়োলেটের চোখে ক্যানসার ধরা পড়ে বছর দেড়েক আগে।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৬
Share: Save:

সিন্ড্রেলার মতো সুন্দর একটা পোশাক পরে নেচে নেচে ঘুরে বেড়াচ্ছে ফুটফুটে মেয়েটা। বছর চারেক বয়স। হাসতে হাসতে, ঘুরতে ঘুরতে চিৎকার করে বলে চলেছে, “তুমিও ডিজনিল্যান্ড যাবে!”

এ রকমই একটা ভিডিও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ক’দিনের মধ্যেই ওই ভিডিওটি দেখা হয়েছে এক লক্ষ বারেরও বেশি। কিন্তু এমন একটি আনন্দের দৃশ্যের পিছনে লুকিয়ে থাকা গল্পটা কিন্তু মোটেই আনন্দের নয়। ভিডিওর ছোট্ট মেয়ে ভায়োলেটের চোখে ক্যানসার ধরা পড়ে বছর দেড়েক আগে। তার পর থেকেই ঠিকানা হাসপাতাল। আর সেখানেই আলাপ জুনিপারের সঙ্গে। ভায়োলেটের থেকেও এক বছরের ছোট সেই মেয়েটির জীবনের একটা একটা করে অমূল্য দিন ফুরোচ্ছিল ওই একই হাসপাতালে। অমূল্য, কারণ একই মারণ রোগে আক্রান্ত সে-ও।

এভার্ট এবং ওয়াশিংটনের বাসিন্দা তিন ও চার বছরের জুনিপার আর ভায়োলেট দু’জনেই ২০১৩ থেকে রেটিনোব্লাস্টোমা রোগের সঙ্গে লড়াই করে চলেছে। এই রেটিনোব্লাস্টোমা চোখের রেটিনার ক্যনসার। তবে এই বিরল মারণ রোগই মিলিয়েছে দুই বন্ধুকে। খুঁজে দিয়েছে পরস্পরের জীবনের ছোট ছোট খুশিগুলো। খুশি ভাগ করে নিতে গিয়েই জানা গিয়েছিল, জুনিপার মিনি মাউসের ভক্ত এবং মিকি মাউসের ভক্ত ভায়োলেট। দু’জনেরই স্বপ্ন, পৃথিবীর সব চেয়ে মজার জায়গা ডিজনিল্যান্ড ঘুরে দেখতে চায় তারা।

আর এই স্বপ্নপূরণেই এগিয়ে এসেছিল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘মেক এ উইশ’। মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করা ছোট ছোট মুখগুলোয় হাসি ফোটানোই ওই সংস্থার কাজ। প্রতি বছর প্রায় ১৪ হাজার শিশুর ইচ্ছা পূরণ করে তারা। তাদের সৌজন্যে ২০১৩-র ডিসেম্বরেই ডিজনিল্যান্ড যাওয়ার সুযোগ মিলল ভায়োলেটের। ফিরে এসে ওই সংস্থার সাহায্যেই বন্ধুর জন্য একটা ভিডিও তৈরি করে ভায়োলেট। বারবার জোর গলায় চিৎকার করে জুনিপারের উদ্দেশে বলে, “তুমিও ডিজনিল্যান্ড যাবে!”

তত দিনে চিকিৎসায় একটা চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে জুনিপারের। মন ভেঙে গিয়েছে। জুনিপারের মা ড্যানিয়েল আউলেট বললেন, “ভিডিওয় ভায়োলেটকে দেখেই খুশি হয়ে গিয়েছিল জুনিপার। ওর মনের জোর সে দিনেই বেড়ে গিয়েছিল অনেকটা।” আর বেশি দিন অপেক্ষাও করতে হয়নি জুনিপারকে। ২০১৪ সালের অক্টোবরে সে-ও পাড়ি দেয় ডিজনিল্যান্ড।

হাসপাতালের কর্মচারীরাও এই দুই শিশুর বন্ধুত্বে আপ্লুত। জুনিপার ও ভায়োলেটকে একসঙ্গে দেখে আবেগে চোখের জল ধরে রাখতে পারেন না তাদের মায়েরাও। তাঁরা জানালেন, পরস্পরের সান্নিধ্যেই তারা মারণ রোগের সঙ্গে লড়াই করার অনুপ্রেরণা পাচ্ছে।

চিকিৎসা চলছে এখনও। তবে সকলের আশা, পরস্পরের বন্ধুত্ব আর ভালবাসার জোরই হয়তো এক দিন হারিয়ে দিতে পারবে মারণ ব্যাধিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cancer violet june
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE