ভাইফোঁটা। এই উৎসবের মূলকথা বা তাৎপর্য ভাই ও বোনের মধ্যে প্রীতি ও ভালবাসা ও স্নেহের সম্পর্ককে প্রতি বৎসর নূতন করে উদযাপন করে সম্পর্ককে চিরন্তন করে তোলা। এই উৎসব আমাদের রাজ্যে ও বাংলাদেশে ‘ভ্রাতৃদ্বিতীয়া’ নামে পরিচিত। এই অনুষ্ঠানই পশ্চিম ভারতে ‘ভাইদুজ’, আবার উত্তর ভারতে কোথাও কোথাও ‘যম দ্বিতীয়া’ বলে পরিচিত। কর্নাটকে একে বলে ‘সোদরা বিজি’, নেপালে বলে, ‘ভাইটিকা’, মহারাষ্ট্রে ‘ভাব বিজ’, মনিপুরে আবার ‘নিঙ্গল চাকোবা’।
‘নিঙ্গল’ কথার মানে বিবাহিতা। আর ‘চাকোবা’ মানে বাবার বাড়ি। নিঙ্গল চাকোবা কথার সামাজিক তাৎপর্য পিতার বাড়িতে বিবাহিত মেয়ের আমন্ত্রণ। এই উৎসব প্রতি বৎসর এই কালীপূজার অমাবস্যার দ্বিতীয়া তিথিতেই আমাদের ভাইফোঁটার দিনেই হয়ে থাকে। মনিপুরে এই তিথিতে এখানে বোনেরা কখনও ভাইকে ফোঁটা দেয় না। মনিপুরের এই ভাইবোনের মিলন উৎসবে বোনদের অবশ্যই বাবার বাড়িতে আসতে হবে এই উৎসব উদ্যাপনের জন্যে।
সব প্রদেশের ভাইফোঁটার যেমন বিশেষ কিছু নিয়ম আছে, সে রকম নিঙ্গল চাকোবার নিজস্ব কিছু নিয়ম আছে। এখানে বিবাহিত বোনদের কার্ডের মাধ্যমে নিমন্ত্রণের রেওয়াজ নেই ঠিকই কিন্তু পানপাতার মধ্যে সুপারি দিয়ে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে বাবা, দাদা বা ভাইকে এই দ্বিতীয়া তিথিতে আসার জন্যে নিমন্ত্রণ করে আসতে হয়। মিষ্টি, ফল, আরও নানা রকম উপহার সামগ্রী নিয়ে বিবাহিত মেয়েরা এ দিন সেজেগুজে বাবার বাড়িতে আসে।
এই উৎসবে মনিপুরে মাছের বিরাট বিরাট হাট বসে। টন টন মাছের আমদানী হয় এই উৎসবকে কেন্দ্র করে। মাছ ছাড়া মাংস, মিষ্টি, ফল ও নানা রকমার খাবার এই উতসবের প্রধান অঙ্গ।
দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর আসে উপহার দেওয়ার পালা। এটা বহু পুরনো প্রথা। বাবা ও ভাই বা দাদারা, বোন বা দিদিদের এবং একই সঙ্গে ভাগ্নে ও ভাগ্নীদের। এই উপহার দেওয়াটা একেবারে মাস্ট। এই ভাবেই এই উৎসব শেষ হয়। কিন্তু কোথাও কেউ কাউকে ফোঁটা দেয় না। মনে করা হয়, এই উত্সব খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩ থেকে চালু রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy