Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

দশমহাবিদ্যা ও নবগ্রহের সম্পর্ক

একই সত্য ১০টি ভিন্ন রূপে প্রকাশিত; দিব্য জননী ১০টি বিশ্বরূপে দৃষ্ট ও পূজিত হয়ে থাকেন। এই ১০টি রূপই হল দশমহাবিদ্যা। মহাবিদ্যাগণ প্রকৃতিগত ভাবে তান্ত্রিক। তাঁদের সাধারণ নামগুলি হল:

পার্থপ্রতিম আচার্য
শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০৪
Share: Save:

একই সত্য ১০টি ভিন্ন রূপে প্রকাশিত; দিব্য জননী ১০টি বিশ্বরূপে দৃষ্ট ও পূজিত হয়ে থাকেন। এই ১০টি রূপই হল দশমহাবিদ্যা। মহাবিদ্যাগণ প্রকৃতিগত ভাবে তান্ত্রিক। তাঁদের সাধারণ নামগুলি হল:

কালী: সর্বসংহারকারিণী, জন্ম ও শক্তির দেবী। কালীকুল সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ দেবী।

তারা: পথপ্রদর্শক ও রক্ষাকারিণী (তারিণী) দেবী। বিশ্বের উৎস হিরণ্যগর্ভের শক্তি এবং মহাশূন্যের প্রতীক।

ত্রিপুরসুন্দরী বা ললিতা-ত্রিপুরসুন্দরী (ষোড়শী): পূর্ণতা ও পূর্ণাঙ্গতার স্বরূপ। শ্রীকুল সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ দেবী। তান্ত্রিক পার্বতী নামে পরিচিতা।

ভুবনেশ্বরী: বিশ্বজননী। পার্থিব জগতের শক্তিসমূহের প্রতীক।

আরও পড়ুন: দশমহাবিদ্যার দশ রূপ ও তার ব্যাখ্যা (প্রথম পর্ব)

ভৈরবী: ভয়ঙ্করী দেবী। কামনা ও প্রলোভনের স্বরূপ যা মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যায়।

ছিন্নমস্তা: উলঙ্গিনী দেবীমূর্তি। তিনি স্বহস্তে নিজ মস্তক ছিন্ন করে নিজ রক্ত নিজেই পান করেন। চক্রপথে আত্মধ্বংস ও আত্মপুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে সৃষ্ট জগতের অবিরাম বিদ্যমানতার শক্তির প্রতীক।

ধূমাবতী: বিধবা দেবীমূর্তি। অগ্নির দ্বারা জগৎ ধ্বংসের পর ভষ্মরাশির মধ্য থেকে যে ধূম নির্গত হয়, তার স্বরূপ। তিনি কখনও কখনও অলক্ষ্মী বা জ্যেষ্ঠাদেবী নামেও অভিহিতা হন।

বগলামুখী: শত্রুনিষ্ক্রিয়কারিনী দেবী। ঈর্ষা, ঘৃণা ও নিষ্ঠুরতার মতো মানবচরিত্রের অন্ধকার দিক নিয়ন্ত্রণ করেন। তাঁকে সারস-মুণ্ড রূপেও কল্পনা করা হয়।

মাতঙ্গী: কর্তৃত্ব শক্তির দেবী। জাতিহীন দেবী (কালীকুল সম্প্রদায়), ললিতার প্রধানমন্ত্রী (শ্রীকুল সম্প্রদায়); তান্ত্রিক সরস্বতী।

কমলেকামিনী: বরাভয় প্রদায়িনী শুদ্ধ চৈতন্যের দেবী। ভাগ্যদেবী লক্ষ্মীর অন্যরূপ। তান্ত্রিক লক্ষ্মী নামেও অভিহিতা।

এখন জেনে নেওয়া যাক দশমহাবিদ্যা ও নবগ্রহের সম্পর্ক:

১ .শনিগ্রহের ইষ্টদেবী কালীকা

২. গুরুগ্রহ বা বৃহস্পতির ইষ্টদেবী তারা

৩. বুধগ্রহের ইষ্টদেবী ষোড়শী

৪. চন্দ্রের ইষ্টদেবী ভুবনেশ্বরী

৫. ভৈরবী সময় ও লগ্নের নিয়ন্ত্রণ করে

৬. রাহুগ্রহের ইষ্টদেবী প্রচণ্ড চন্ডিকা ছিন্নমস্তা

৭. কেতুগ্রহের ইষ্টদেবী ধূমাবতী

৮. মঙ্গলগ্রহের ইষ্টদেবী বগলামুখী

৯. সূর্যগ্রহের ইষ্টদেবী মাতঙ্গী

১০. শুক্রগ্রহের ইষ্টদেবী কমলা বা কমলেকামিনী

মহাভাগবত পুরাণ ও বৃহদ্ধর্ম পুরাণে ত্রিপুরসুন্দরীকে দেবীরই অপর নাম ষোড়শী নামে অভিহিত করা হয়েছে। গুহ্যাতিগুহ্য তন্ত্রে বলা হয়েছে মহাবিদ্যাগণই হলেন বিষ্ণু দশ অবতারের উৎস। দেবীর এই দশ রূপ, তা ভয়ঙ্করই হোক বা কোমল, বিশ্বজননী রূপে পূজিত হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dasa Mahavidya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE