পূর্ব জন্মের খবর জন্মকুণ্ডলীতে পাওয়া যায়, এই নিয়ে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য জ্যোতিষে নানা গবেষণার কথা অতীতের লেখা বইগুলিতে যেমন আছে, তেমনই আধুনিক পাশ্চাত্য জ্যোতিষেও এই নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে।
জন্মছকে সাউথনোড বা কেতুর এবং চন্দ্রের অবস্থান, জন্ম লগ্ন, শনির অবস্থান, ইউরেনাস, নেপচুন ও প্লুটোর বিভিন্ন ভাবে অবস্থান, কোনও ভাবে যদি তিনটির বেশি গ্রহ থাকে, বিশেষ করে কোনও গ্রহ যদি বক্রী অবস্থায় থাকে, কোনও ঘরে যদি কোনও গ্রহ না থাকে, যদি এক রাশিতে দু’টি ভাবস্ফুট পড়ে, এই সব থেকে পূর্ব জন্মের সূত্র পাওয়া যায়। বলা হয়, জাতক/জাতিকার চন্দ্রের অবস্থান দেখে বোঝা যায়, পূর্বজন্মে কোন কাজ সে অসমাপ্ত রেখে এসেছিল। রাশি বলে দেবে এ জীবনে তার প্রভাব কতটা। আর কেতু বা সাউথনোডের অবস্থান দেখে পূর্বজন্মের জীবন কী ধরনের ছিল তা আন্দাজ করা হয়।
আজকের আলোচনা আমরা সীমাবদ্ধ রাখব শুধুমাত্র কেতুর অবস্থান ও চন্দ্রের অবস্থানকে কেন্দ্র করে পূর্বজন্মের খবরা খবর বের করাতে।
(১) যদি আপনার জন্ম হয়ে থাকে মেষ রাশিতে বা মেষে কেতু থাকাকালীন, তা হলে আপনাকে পূর্বজন্মে কিছুটা একাকী কাটাতে হয়েছিল। আপনার জীবিকা ছিল হয় একজন যোদ্ধা, সৈনিক, জলদস্যু, শিকারী, পশুপালক বা এমন কোনও কাজ যা করতে প্রবল দৈহিক শক্তি বা ভয়ঙ্কর পরিশ্রম করতে হয়। আপনাকে সবসময় সোজাসুজি শক্তির পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হত। সে অর্থে আপনার বিশ্রামের অবকাশ ছিলনা, সব ব্যাপারে আপনি আগ্রহী হতেন।
এই সব গুণ বা যোগ্যতা এই জীবনে আপনার কাছে উপহার হিসেবে এসেছে। যার জন্য আপনি এখন মেষের জাতক বা জাতিকা হিসেবে জ্যোতিষের কাছে পরিচিত।
আরও পড়ুন: অন্যের সঙ্গে কেমন ভাবে কথা বলেন? বলে দেবে জন্মছক
এ ছাড়া, আপনার গত জীবন খুব কঠিন অবস্থায় ছিল। পাহাড়ের ঢালে হয়ত বাস করতে হত। নতুবা চারণভূমি খোঁজার জন্য স্থান থেকে স্থানান্তর যেতে হত। খাদ্য, জল ও বাসস্থানের জন্যে নিরন্তর নতুন স্থআনের খোঁজ করতে হত। খুব সামান্য আরাম বা বিশ্রাম আপনার কপালে জুটতো।
(২) আপনার জন্ম যদি হয়ে থাকে বৃষ রাশিতে বা বৃষে কেতু থাকাকালীন, তা হলে আপনার গত জন্মের জীবন সংযুক্ত ছিল মাটি বা চাষবাস সংক্রান্ত কাজে, অথবা ইমারতি কোনও কাজ বা ব্যবসায়। আরও বলা যায়, আর্থিক অবস্থার কারণে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি ছিলেন আপনি। যাযাবর জীবন আপনার ছিল না, বরং জীবন ছিল গুছনো। সে জীবনের একটা স্থির ও উন্নতিজনক ভবিষ্যৎ ছিল।
সেই জীবনের মন্ত্র ছিল নিশ্চয়তা এবং আপনার সঙ্গে যারা থাকত তারা শান্তিপূর্ণ স্থির জীবনে বিশ্বাসী ছিল। শুধু তাই নয়, সেই জীবনে সরল সুখভোগের ব্যবস্থাও ছিল। তখন হয়ত এখনকার মতো ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা ছিল না, কিন্তু সম্পদ জমাবার ব্যবস্থা ভালই ছিল। ফলে অতীতের প্রবণতা থেকে এই জীবনে বৃষের জাতক বা জাতিকারা খুব অল্প বয়স থেকে অর্থ সঞ্চয়ে, সুখভোগ ও বিলাসব্যসনে বিশেষ আগ্রহী হয়ে থাকে।
যদি দেখা যায়, জন্মছকে চন্দ্র বা কেতু শনি বা অন্য কোনও অশুভ গ্রহ দ্বারা বিশেষ ভাবে আক্রান্ত, তা হলে বুঝতে হবে জন্মান্তরের জীবনে চেষ্টা সত্ত্বেও খুব কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। অনেক দিন খাবার জোটেনি, দারিদ্রতা নিত্য সঙ্গী ছিল, বিভিন্ন ভাবে বঞ্চিত হতে হয়েছে। ফলে এই জীবনে জাতকের মধ্যে খাবারের প্রতি লোভ দেখা যায়।
আর্থিক সঙ্গতি সম্পন্ন বৃষের জাতক/জাতিকার মধ্যে প্রায়ই খাদ্যলোভী প্রবণতা দেখা যায় যেটাকে কেউ খাদ্যরসিক বলে থাকেন।
(৩) আপনার জন্ম যদি মিথুন বা মিথুনে কেতু থাকাকালীন হয়ে থাকে, তা হলে আপনি গত জন্মে নানা কিছু শেখার জন্য অনেক রকম চেষ্টা করে গিয়েছেন। সেটা পড়াশোনার দিক হতে পারে, শিল্পের দিকও হতে পারে। আপনার এই ক্ষমতা অতীতে গড়ে উঠেছে। আপনি যে কাজগুলি অতীতে করার চেষ্টা করেছেন সেগুলি হচ্ছে, ব্যবসা, কুমোর, বুনন, সেলাই, অঙ্কন, ক্যালিগ্রাফি, লেখক, কথক ইত্যাদি।
খুব সম্ভবত আপনারা সকলেই নগরবাসী ছিলেন। পুরোপুরি নগর যদি নাও হয়, অতীতের জন্মস্থানটি প্রায় নগরের মতোই ছিল। নগর না হলে উপরের এই পেশাগুলি আসবে না। ওই পেশাগুলির সঙ্গে দক্ষতার একটা ব্যাপার জড়িয়ে থাকে।
আবার অনেকে সেই সব পেশায় ছিলেন যার জন্যে আপনাদের এক স্থান থেকে আর একস্থানে পেশার কারণে যেতে হত।
যার ফলে বর্তমান মিথুনের জাতক/জাতিকারা জন্ম থেকে অস্থির হয়ে থাকে। খুব পরিবর্তনশীল জীবন হয়ে থাকে এদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy