Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

যত বেশি সম্ভব দলকে পাশে চান মোদী

দরকার হোক বা না-হোক, ফল বেরনোর পর নতুন শরিকদের সঙ্গে নেওয়ার জন্য এখন থেকেই জমি তৈরি করে রাখছেন নরেন্দ্র মোদী। গোড়া থেকেই মোদী একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো গড়ার ব্যাপারে জোর দিয়ে আসছেন। প্রচারে তিনি প্রতিটি রাজ্যে গিয়ে সেখানকার আঞ্চলিক প্রত্যাশা পূরণের কথা বলে এসেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৪ ০২:৪৭
Share: Save:

দরকার হোক বা না-হোক, ফল বেরনোর পর নতুন শরিকদের সঙ্গে নেওয়ার জন্য এখন থেকেই জমি তৈরি করে রাখছেন নরেন্দ্র মোদী।

গোড়া থেকেই মোদী একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো গড়ার ব্যাপারে জোর দিয়ে আসছেন। প্রচারে তিনি প্রতিটি রাজ্যে গিয়ে সেখানকার আঞ্চলিক প্রত্যাশা পূরণের কথা বলে এসেছেন। মোদী মনে করছেন, এই লক্ষ্যে এগোতে গেলে যত বেশি সম্ভব দলকে বিজেপির ছাতার তলায় নিয়ে আসা দরকার। যাঁরা সরাসরি আসতে পারবেন, তাঁরা স্বাগত। যাঁরা রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার জন্য আসতে পারবেন না, তাঁদের প্রতিও বিরূপ মনোভাব নেওয়া হবে না। তা ছাড়া বুথফেরত সমীক্ষা এখনও পর্যন্ত মোদীকে অনেকটা এগিয়ে রাখলেও বিজেপি নেতৃত্ব নিশ্চিন্ত হয়ে বসে নেই। অনেকেই মনে করছেন, আসন সংখ্যা কম হতেও পারে। তা হলে শরিকদের প্রয়োজন বাড়বে আর তার প্রস্তুতিও এখন থেকে সেরে রাখা প্রয়োজন।

আজ গাঁধীনগরে গিয়ে মোদীর সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক করেন বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ, অরুণ জেটলি, অমিত শাহ ও নিতিন গডকড়ীরা। সেখানেই স্থির হয়, ভোটের পর প্রয়োজন না হলেও চেষ্টা করতে হবে আরও অনেক দলকে সঙ্গে নিয়ে চলার। সেই উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই কথাবার্তা শুরু করা হয়েছে। বিভিন্ন আঞ্চলিক দলও এনডিও সরকারকে সমর্থন করার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

আজই যেমন নবীন পট্টনায়েকের দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার বরাবরই ওড়িশার প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করে এসেছে। এই অবস্থায় এনডিএ সরকার যদি রাজ্যের উন্নয়ন সুনিশ্চিত করে, শর্তসাপেক্ষে তাকে সমর্থন করতে অসুবিধা নেই। নবীন নিজে অবশ্য খোলাখুলি এখনও সমর্থনের কথা বলেননি। আবার সমর্থন করার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি তিনি।

বিজেপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, মোদী অনেক দিন আগেই নতুন শরিকদের সঙ্গে নিয়ে চলার কথা বলে আসছেন। বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মায়াবতী, জয়ললিতার জন্য দরজা খোলা রাখার কথা বলেছেন তিনি। মায়াবতী-মমতার পক্ষ থেকে মোদীর বিরোধিতা করা হলেও জয়ললিতা কিন্তু টুঁ শব্দটি করেননি। মনে করা হচ্ছে, জয়া যোগ দিতেই পারেন এনডিএতে।

বিজেপি নেতারা বলছেন, অন্ধ্রপ্রদেশে জগন্মোহনের সঙ্গেও তাঁদের আলোচনা চলছে। সীমান্ধ্রে চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গে এমনিতেই তাঁদের জোট রয়েছে। কংগ্রেস-বিরোধী রাজনীতিতে সওয়ার হয়ে এ বারে জগনও বিজেপির কাছাকাছি আসতে পারেন। তেলঙ্গানায় টিআরএস-কে কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন দিগ্বিজয় সিংহরা। কিন্তু চন্দ্রশেখর রাও সেই পথ ধরেননি। বিজেপির জন্য দরজা খোলা রেখেছেন তিনিও। সে ক্ষেত্রে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের পর সরকার গড়ার জন্য কংগ্রেসের উপর নির্ভর করতে না-হলে টিআরএসও কেন্দ্রে হাত মেলাতে পারে বলে বিজেপি নেতৃত্বের আশা।

হরিয়ানায় ওমপ্রকাশ চৌটালার সঙ্গে অরুণ জেটলির আলোচনা আগেই হয়ে গিয়েছিল । কিন্তু ভোটের আগে জোট হয়নি শুধুমাত্র চৌটালার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকায়। এ বারে ভোটের পর তাঁর দলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে পারে বিজেপি। উত্তর-পূর্বের নেতা পি এ সাংমা ভোট শেষ হতেই গাঁধীনগরে গিয়ে বৈঠক করে এসেছেন। তাঁকে দিয়ে উত্তর-পূর্বের আরও ছোট-ছোট দলগুলিকে কাছে পেতে চাইছেন মোদী।

এনডিএর এই প্রসারের পিছনে মোদীর যুক্তরাষ্ট্রীয় ভাবনা তো রয়েইছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক কৌশলও আছে। যত বেশি দলকে এনডিএ-র ছাতার তলায় নিয়ে আসা যাবে, বিরোধীরা তত বেশি দুর্বল হবে। ইউপিএর দীর্ঘদিনের সঙ্গী শরদ পওয়ারের দলের সঙ্গেও যে কারণে বোঝাপড়ায় আসতে চাইছে বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

election 2014 modi political alliance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE