Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সরতে হল সুজাতাকে, বিদেশসচিব জয়শঙ্কর

মেয়াদ শেষের আগেই বিদেশসচিবের পদ থেকে ইস্তফা দিতে হল সুজাতা সিংহকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রাষ্ট্রদূত সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্করকে আনা হল বিদেশসচিব পদে। সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন গোয়েন্দা-প্রধান তথা উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল টি ভি রাজেশ্বরের কন্যা সুজাতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০৪:০৫
Share: Save:

মেয়াদ শেষের আগেই বিদেশসচিবের পদ থেকে ইস্তফা দিতে হল সুজাতা সিংহকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রাষ্ট্রদূত সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্করকে আনা হল বিদেশসচিব পদে।

সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন গোয়েন্দা-প্রধান তথা উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল টি ভি রাজেশ্বরের কন্যা সুজাতা। তাঁকে ২০১৩-র অগস্টে বিদেশসচিব পদে নিয়োগ করেছিল মনমোহন সরকার। সনিয়ার অঙ্গুলিহেলনেই হয়েছিল তা। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকারে আসার পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে সুজাতার সম্পর্ক ভাল ছিল না মোটেই। শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিদেশ সচিব সুজাতার কথাবার্তাই প্রায় হতো না। অথচ বিশ্বে ভারতের উপস্থিতি ও অবস্থান মজবুত করতে, বিদেশসচিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে বিশেষ নির্ভরযোগ্য কাউকেই দরকার ছিল মোদীর। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভারত সফরের পরপরই চিন-সহ এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক বাড়ানোর কাজে যেখানে দ্রুত গতিতে এগোতে চাইছেন মোদী।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের সচিবের সম্পর্কই যদি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে তবে সেই কাজ হবে কী ভাবে! ফেব্রুয়ারির গোড়ায় চিন সফরে যাচ্ছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। চিনের সঙ্গে কথাবার্তা চালানো ভার পড়েছে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের উপরে। আদতে তিনি পুলিশ-গোয়েন্দা জগতের মানুষ। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিদেশনীতিতে বিশেষ দড় কাউকেই প্রয়োজন ছিল মোদীর। জয়শঙ্করকে এনে সেই প্রয়োজন পূরণ করলেন তিনি। ২০১৩-র সেপ্টেম্বর থেকে আমেরিকায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে অন্য সব বিষয়ের সঙ্গে ওবামার ভারত সফরের প্রস্তুতি-পর্ব ভালই সামলেছেন জয়শঙ্কর। এর আগে বছর চারেক চিনেও রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। জাপান, সিঙ্গাপুর, চেক প্রজাতন্ত্র-সহ বহু দেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। সুজাতাকে অনেক আগেই সরানোর তাগিদ থাকলেও ওবামার সফরের আগে জয়শঙ্করকে আমেরিকা থেকে ফেরানোটা সঙ্গত মনে করেননি মোদী। সেই সফরের সাফল্যের ভিতে দাঁড়িয়ে মোদী এ বার বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর করতে চাইছেন দ্রুত। সেই কাজে জয়শঙ্করই হবেন মোদীর দূত। বিদেশমন্ত্রী সুষমাও এখন মোদীর সঙ্গে মোটামুটি কাজের সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। বিদেশ মন্ত্রকে প্রধানমন্ত্রী এ বার আস্থাভাজন কাউকে নিয়ে এলেন।

মোদী এই কাজটি সারলেন জয়শঙ্করের অবসরের ঠিক মুখে। ৯ জানুয়ারি ৬০ বছর হয়েছে জয়শঙ্করের। আইএফএস অফিসার হিসেবে চলতি মাসের ৩১ তারিখ, শনিবারই তাঁর অবসর নেওয়ার কথা। তার মাত্র তিন দিন আগে আজ তাঁকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হলো দু’বছরের জন্য। এতে আরও দু’বছর বিদেশনীতির ক্ষেত্রে সক্রিয় থাকতে পারবেন জয়শঙ্কর।

সুজাতাকে কিন্তু অবসরের ৭ মাস বাকি থাকতেই কিছুটা অস্বস্তিকর ভাবে সরে যেতে হল। এমন কিছু যে ঘটতে পারে, তা নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকে জল্পনা ছিলই। ২৫ জানুয়ারি খানিকটা আঁচ মিলেছিল রাষ্ট্রপতি ভবনে ওবামার সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে। সেখানে হাজির থাকলেও বিদেশসচিবের তেমন কোনও ভূমিকাই ছিল না। প্রায় দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন যেন সুজাতা। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে তাঁকে উপযুক্ত পুনর্বাসনেরই আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

এখন বড় প্রশ্ন হলো, আমেরিকায় রাষ্ট্রদূত করে কাকে পাঠানো হবে এ বার? প্রাক্তন বিদেশ সচিব শ্যাম শারন বা সদ্য বিজেপিতে আসা হরদীপ পুরী, নাকি অন্য কেউ, এখনও স্পষ্ট নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sujata singh foreign secretary jayshankar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE