Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

উত্তর সিকিমের পাঁচ রাস্তায় ধস, দুর্ভোগে পর্যটকরা

টানা বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমের বেশ কয়েকটি জায়গায় মাঝারি ও ছোট ধস নামায় বুধবার বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তাতে আটকে থাকতে হল পর্যটকদের। ধসে উত্তর সিকিমের অন্তত ৫টি রাস্তায় যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ওই দিন দুপুরের পর থেকে বেশ কিছু ক্ষণের জন্য মঙ্গন, চুংথাম, লাচেন থেকে গ্যাংটকের যোগাযোগ বন্ধ ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৪ ০২:৫৭
Share: Save:

টানা বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমের বেশ কয়েকটি জায়গায় মাঝারি ও ছোট ধস নামায় বুধবার বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তাতে আটকে থাকতে হল পর্যটকদের। ধসে উত্তর সিকিমের অন্তত ৫টি রাস্তায় যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ওই দিন দুপুরের পর থেকে বেশ কিছু ক্ষণের জন্য মঙ্গন, চুংথাম, লাচেন থেকে গ্যাংটকের যোগাযোগ বন্ধ ছিল। পাথর সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করতে মধ্য রাত পার হয়ে যায়। রাস্তা পরিষ্কার হওয়ার পরে শুরু হয় তীব্র যানজট। উত্তর সিকিম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে পর্যটকদের অন্তত ৪০টি গাড়ি আটকে পড়েছিল। দুর্ভোগে পড়েছেন প্রায় ৪০০ পর্যটক। তাঁদের অনেকে হোটেলে পৌঁছতে পেরেছেন মাঝরাতেরও পরে।

বৃহস্পতিবার সকালে বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। সিকিম প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরের আগেই সব পর্যটকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। যদিও লাচেন থেকে চুংথামের রাস্তা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের বন্ধ হয়ে যায়। বিকেলে তা আবার খুলেছে। তবে সেই রাস্তায় তখন আর কোনও পর্যটক আটকে ছিলেন না। আবহাওয়া দফতরও আশার কথা শুনিয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “যে নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টি হচ্ছিল, সেটি দুর্বল হয়ে সিকিম এবং লাগোয়া এলাকা থেকে সরে গিয়েছে। সে কারণেই এ দিন সে ভাবে বৃষ্টি হয়নি। আগামী ২৪ ঘণ্টাতে বৃষ্টি হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।” নতুন করে বৃষ্টি না নামায় এ দিন সকাল থেকে দার্জিলিঙের রাস্তাতেও ধস নামেনি। উত্তরবঙ্গের সমতল এলাকাতেও এ দিন দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি। সিকিমে এ দিন সকাল থেকেই রোদ ঝলমলে পরিবেশ ছিল।

কিন্তু তার আগের দিন দীর্ঘক্ষণ কেটেছে পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ি-বন্দি অবস্থায়। দুপুর দেড়টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লাচুং থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে আটকে থাকেন দিল্লির বাসিন্দা রাজা দে। বুধবার দুপুরে ইয়ুংথান ভ্যালি থেকে লাচুং-এ গিয়েছিলেন তিনি। দুপুরে ধস নেমে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তাতেই আটকে যান পর্যটকেরা। রাজাবাবুর কথায়, “দুপুর দেড়টা নাগাদ হঠাৎই তুলোর মতো তুষারপাত শুরু হয়। সেই সঙ্গে বৃষ্টি। হঠাৎই গাড়ি থেমে যায়।” দুপুর দেড়টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত রাস্তাতেই তাঁদের গাড়ি থেমে ছিল। তাঁরা হোটেলে ফিরতে পেরেছেন মধ্যরাতে।

ধসে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাত তিনটে পর্যন্ত গাড়িতেই কাটাতে হয় অর্ঘ্য দাশগুপ্তকে। বেহালার বাসিন্দা অর্ঘ্যবাবু মঙ্গন থেকে গ্যাংটকে আসার পথে ধসে আটকে পড়েন। অর্ঘ্যবাবুর কথায়, “দুপুরে হঠাৎই নির্জন এলাকায় আটকে পড়ি। সামনে আরও বেশ কয়েকটি গাড়ি। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও রাস্তা খোলেনি। শেষে রাত দেড়টা নাগাদ রাস্তা খোলে।” যানজটের জন্য ফের গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। অর্ঘ্যবাবু জানিয়েছেন, সন্ধ্যের সময় পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর জওয়ানরা তাঁদের জল এবং শুকনো খাবার দিয়ে সাহায্য করে।

তবে ট্যুর অপারেটরদের বক্তব্য, উত্তর সিকিমে যাওয়ার রাস্তাও দ্রুত সংস্কার করা দরকার। ট্যুর অপারেটর সম্রাট সান্যাল বলেন, “রাস্তা সংস্কার না হওয়াতেও ওই এলাকায় বারবার ছোট-বড় ধসের ঘটনা ঘটছে। উত্তর সিকিমে মোবাইল যোগাযোগ বাড়াতেও প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে হবে।” মোবাইল সংযোগ দুর্বল হওয়ায় আটকে থাকা পর্যটকদের সঙ্গে অনেক সময়েই যোগাযোগ করা যায় না। তাতে দুর্ভোগ বাড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

north sikkim landslide road blocade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE