দিল্লিতে সরকার গড়ার জন্য ফের আম আদমি পার্টিকে সমর্থন দেওয়ার সম্ভাবনা আজ সরাসরি খারিজ করে দিল কংগ্রেস। লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের মতোই ভরাডুবি হয়েছে আপের। এর পরেই আপের কয়েক জন নেতা কাল প্রস্তাব দেন, ফের কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়ার চেষ্টা করা হোক। প্রস্তাবটা রাজনীতির পাতে পড়তেই সাফ না বলে দিয়েছেন দিল্লির কংগ্রেস নেতারা। তাঁদের মত মেনে নিয়েছে দলের হাইকম্যান্ডও।
প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরে রাতে এক টুইটে আপ গোটা বিষয়টিকেই সংবাদমাধ্যমের একাংশের প্রচার বলে দায় এড়াতে চাইলেও এটা ঘটনা যে, তাদের প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনার জন্যই রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি অরবিন্দ সিংহ লাভলি আজ বৈঠক ডেকেছিলেন প্রদেশ দফতরে। এতে দলেই বেজায় চাপে পড়ে যান লাভলি। বৈঠকের কথা শুনেই দিল্লি কংগ্রেসের বহু নেতা প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানাতে শুরু করেন সকাল থেকেই। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের ছেলে সন্দীপ বলেন, “এই বৈঠক ডাকারই কোনও প্রয়োজন ছিল না।” বেকায়দায় পড়ে লাভলি বৈঠকের শুরুতেই জানান, আপের প্রস্তাব নিয়ে নয়, ২১ মে রাজীব গাঁধীর মৃত্যুদিবসে কী কর্মসূচি নেওয়া হবে তা ঠিক করতেই এই বৈঠক।
পরে দিল্লি কংগ্রেসের মুখপাত্র মুকেশ শর্মা বলেন, “দিল্লিতে সরকার গড়ার নৈতিক অধিকারই নেই অরবিন্দ কেজরীবালের। আপকে সরকার চালানোর সুযোগ দিয়েছিল কংগ্রেস। ওঁরা বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। স্রেফ ধোঁকা দিয়েছেন দিল্লিবাসীকে। তাঁদের সমর্থন করার প্রশ্নই উঠছে না। দিল্লিতে ফের ভোট হওয়াই এখন শ্রেয়।” দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে দিল্লির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদও একই কথা জানিয়ে দেন।
কংগ্রেসের এক সদ্য প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আজ ঘরোয়া আলোচনায় কবুল করেন, কেজরীবাল ও অণ্ণা হজারের বাহিনীকে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলার ব্যাপারে কংগ্রেস প্রথম থেকে ভুল নীতি নিয়েছে। দিল্লি বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের নেপথ্যে ছিল আপ। কিন্তু সেই কেজরীবাল যখন নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হন, তখন কংগ্রেসেরই অনেকে আহ্লাদিত হন। তলে তলে আস্কারাও দিচ্ছিলেন তাঁকে। অথচ দেখা গেল আপের জন্য দিল্লির ৭টি লোকসভা আসনেই হারতে হয়েছে কংগ্রেসকে, পঞ্জাবেও খোয়াতে হয়েছে ৪টি আসন।
কংগ্রেসের নেতারা মনে করেন, লোকসভা ভোটের পর দিল্লি-সহ গোটা দেশেই আপ এখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। দিল্লিতে তারা আরও জনভিত্তি হারালেই কংগ্রেসের ভোট বাড়বে। তাই এখন আপকে রীতিমতো তুলোধোনা করাই হওয়া উচিত কংগ্রেসের নীতি।
কেজরীবাল ৪৯ দিনের মাথায় সরকার ভেঙে দেওয়ায় পর দিল্লিতে এখন রাষ্ট্রপতি শাসন চললেও বিধানসভা জিইয়ে রাখা হয়েছে। কারণ, লোকসভা ভোটের সঙ্গে দিল্লিতে বিধানসভা ভোট করানোয় আপত্তি ছিল কংগ্রেসের। কেন্দ্রে মোদী সরকার আসার পর যে কোনও মুহূর্তে বিধানসভা ভেঙে দেওয়া হতে পারে। নির্বাচন কমিশন সে ক্ষেত্রে জুলাই মাস নাগাদ ভোটের দিন ঘোষণা করে দিতে পারে। গোটা দেশে বিজেপির বিপুল জয়ের পরেও দিল্লিতে ঘুরে দাঁড়ানো যাবে, এমনটা আশা করছেন না কংগ্রেসের নেতারা। তবে ভোটের জন্য প্রস্তুত থাকতেই আপ-সঙ্গ বর্জনই নিরাপদ বলে মনে করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy