Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দুর্বল সিপিএমের সঙ্গে আঁতাঁতে নারাজ নীতীশ

বিহারে সিপিএমের সাংগঠনিক শক্তিতে ‘ভরসা’ নেই নীতীশ কুমারের। লোকসভার ভোট-যুদ্ধে সে রাজ্যে তৃতীয় ফ্রন্টের ‘বন্ধু’র সঙ্গে তা-ই আসন সমঝোতায় নারাজ জেডিইউ। তবে, পরিস্থিতি বিচার করে সিপিআইয়ের সঙ্গে জোট গড়েছেন নীতীশ। দু’টি আসনও ছেড়েছেন তাঁদের।

স্বপন সরকার
পটনা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৪ ০৮:৩৭
Share: Save:

বিহারে সিপিএমের সাংগঠনিক শক্তিতে ‘ভরসা’ নেই নীতীশ কুমারের।

লোকসভার ভোট-যুদ্ধে সে রাজ্যে তৃতীয় ফ্রন্টের ‘বন্ধু’র সঙ্গে তা-ই আসন সমঝোতায় নারাজ জেডিইউ। তবে, পরিস্থিতি বিচার করে সিপিআইয়ের সঙ্গে জোট গড়েছেন নীতীশ। দু’টি আসনও ছেড়েছেন তাঁদের।

বাম-নেতৃত্বাধীন তৃতীয় ফ্রন্টের শরিক জেডিইউয়ের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এতে তৃতীয় শক্তির উত্থানে ধাক্কা লাগতে পারে বলেও সংশয় ছড়িয়েছে। তবে এই পদক্ষেপের ব্যাখ্যা দিয়েছেন জেডিইউ নেতাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, সাংগঠনিক দিক থেকে বিহারে এখন অনেকটাই দুর্বল সিপিএম। সে দিকে তাকিয়েই লোকসভা নির্বাচনে ওই দলের সঙ্গে আঁতাঁত গড়া হচ্ছে না। তবে বিধানসভা নির্বাচনে সেই পথ খোলা রয়েছে।

এ নিয়ে নীতীশ আজ বলেন, “কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের প্রশ্নই নেই। সিপিআইয়ের সঙ্গে আমরা সমঝোতা করেছি। সিপিএমকে নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।” তবে সিপিএম সূত্রের খবর, জেডিইউ তাঁদের ইতিমধ্যেই কোনও আসন না-দেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে। সে কারণে রাজ্যের তিনটি আসনে দল একাই লড়াইয়ে নামতে প্রস্তুত হচ্ছে। সিপিআই অবশ্য জেডিইউয়ের কাছে সিপিএমের সঙ্গেও আসন-রফার অনুরোধ জানিয়েছে।

কংগ্রেস এবং বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়তে দেশের ১১টি দল একজোট হয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট গঠন করেছে। বামেদের সঙ্গে তাতে রয়েছে নীতীশের জেডিইউ, জনতা দল (সেকুলার), জয়ললিতার এডিএমকে-সহ আরও কয়েকটি দল। বামেরা জানিয়েছিল, জাতীয় স্তরে কোনও নির্বাচনী জোট না-গড়লেও, রাজ্যে রাজ্যে সম-মনোভাবাপন্ন দলগুলির সঙ্গে আসন সমঝোতা করে ভোট-ময়দানে নামা যেতে পারে। তামিলনাড়ুতে সিপিএমকে দু’টি আসন ছাড়তে রাজি হয়েছেন জয়ললিতা। সম্প্রতি, রাজস্থানে বিধানসভা ভোটের জন্য জেডিইউয়ের সঙ্গে সিপিএমের আঁতাঁতের প্রেক্ষিতে, বিহারেও একই সম্ভাবনার আশা ছিল। দু’দলের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনাও হয়। কিন্তু তৃতীয় ফ্রন্টের বাধ্যবাধকতায় সিপিআইকে সঙ্গে নিলেও, বিহারে সিপিএমের হাত ধরলেন না নীতীশ।

জেডিইউ সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা ভোটে বিহারে পাঁচটি আসন চেয়েছিল সিপিআই। সিপিএমের দাবি ছিল তিনটি কেন্দ্রেরসমস্তিপুরের উজিয়ারপুর, দ্বারভাঙা এবং বেতিয়া। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সিপিআইকে বেগুসরাই এবং বাঁকা আসন দু’টি ছাড়তে রাজি হলেও, সিপিএমকে কোনওটিই দিতে সম্মত হয়নি। জেডিইউয়ের সাধারণ সম্পাদক কে সি ত্যাগী বলেন, “এ রাজ্যে সিপিএম ততটা শক্তিশালী নয়। তাই ওদের সঙ্গে আপাতত কোনও সমঝোতা হচ্ছে না। তবে আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের সঙ্গে জোটের পরিকল্পনা রয়েছে।”

সিপিএমের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং বিহারে দলের ভারপ্রাপ্ত নেতা হান্নান মোল্লা বলেন, “জেডিইউ আমাদের কোনও আসন দিচ্ছে না। আমরা রাজ্যের তিনটি আসনে একাই লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী সপ্তাহে রাজ্য কমিটির বৈঠকে প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হবে।” তৃতীয় ফ্রন্টের পক্ষে এই পরিস্থিতি অস্বস্তির কি না, সে প্রশ্নে হান্নানের জবাব, “এতে কোনও সমস্যা হবে না। কংগ্রেস এবং বিজেপি-র বিরুদ্ধে আমরা একটা বিকল্প জোট গঠনের চেষ্টা করছি। ভোটের পর জোট শরিকদের আসন সংখ্যার নিরিখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”

সিপিআইয়ের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ইউ এন মিশ্র বলেন, “বিহারে সিপিএমকে একটি হলেও আসন ছাড়তে আমাদের দলের তরফে জেডিইউকে অনুরোধ করা হয়েছে। তা না-করা হলে সবাইকে নিয়ে কীসের নির্বাচনী আঁতাঁত!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

swapan sarkar patna nitish
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE