বাসের ছাদে রাখা ছিল সারি সারি সাইকেল। গ্রাম থেকে বার হওয়ার সময়ে ওভারহেড বিদ্যুতের তারে সাইকেল লাগতেই গোটা বাস তড়িদাহত হয়ে ঘটনাস্থলেই চার জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার রাত পৌনে দশটা নাগাদ অসমের বঙ্গাইগাঁও জেলার মানিকপুর থানার কীর্তনপারা-ভান্ডারা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। মৃতদের মধ্যে এক জন মহিলা,এক জন কিশোর এবং দুজন যুবক। ওই ঘটনার গুরুতর আহত হয়েছেন ওই বাসের আরও ২৫ জন যাত্রী। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে পাঁচ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃত এবং আহতরা সকলেই ইট ভাটার শ্রমিক। চালকের অসাবধানতাতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের দাবি। বাস চালক,কনডাক্টর ও খালাসি পলাতক। বঙ্গাইগাঁও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমদাদ আলি বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বাসটি আটক করা হয়েছে। চালক, খালাসি ও বাসের কন্ডাক্টরকে খোঁজা হচ্ছে।”
পুলিশ জানিয়েছে,মৃতদের নাম, ময়নাল হক (১১), টাকমিনা বেগম (২০),আব্দুল রসিদ আলি (২১) এবং গিয়াসউদ্দিন (৩৫)। এদের চার জনেরই বাড়ি,বঙ্গাইগাঁও জেলার অভয়াপুরি থানার হলদিবাড়ি গ্রামে। আহতদের মধ্যে আট জন পুরুষ এবং ১৭ জন মহিলা। তাদের বরপেটা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, ইট ভাটায় কাজ করার জন্য বঙ্গাইগাঁও জেলার অভয়াপুরি, এবং মানিকপুর থানা এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ৫০ জন শ্রমিক তেজপুর যাচ্ছিলেন। এক জন ঠিকাদারের মাধ্যমে অসম পরিবহন নিগমের একটি বাস ভাড়া করা হয়েছিল।
এদিন রাতে কয়েক জন শ্রমিককে নিতে ওই বাসটি মানিকপুর থানার কীর্তনপারা-ভান্ডারা গ্রামে ঢুকে ছিল। সেখানে ১০ জন শ্রমিককে বাসে তোলা হয়। তাঁদের বেশ কিছু জিনিসপত্র এবং দশটি সাইকেল ওই বাসের ছাদে তুলে দেওয়া হয়। গ্রাম থেকে বেড়িয়ে ৩১ নং জাতীয় সড়কে ওঠার সময়, ওই গ্রামের ওপর দিয়ে যাওয়া ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের তারের সংস্পর্ষে আসে বাসের ওপরে থাকা সাইকেলগুলি। সঙ্গে সঙ্গে বাসটি তড়িদাহত হয়ে যায়। বাসের মধ্যেই চারজন যাত্রীর মৃত্যু হয়।
অন্য যাত্রীরা আর্তনাদ করে জানালা দিয়ে লাফিয়ে বার হন। বাসের মধ্যে থেকে বের হতে পারেননি ২৫ জন যাত্রী । তাঁরা গুরুতর আহত হন। ঘটনার পরেই বাসটির চালক, কন্ডাক্টর ও খালাসি পালিয়ে যান। গ্রামবাসীরাই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুত্ বিভাগের বঙ্গাইগাঁও কন্ট্রোল রুমে খবর দিয়ে সরবরাহ বন্ধ করিয়ে দেয়। এর পরেই স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে পুলিশ আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে বরপেটা সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, ওই গ্রামে ১১ হাজার ভোল্টের পরিবাহী তার অনেক নিচুতে রয়েছে। তার গুলি উঁচু করে দেওয়ার জন্য বিদ্যুত্ বিভাগের কাছে বারবার আবেদন করেও কোনও ফল হয়নি। তাই এমন ঘটনা ঘটেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy