ভোট দিচ্ছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। ছবি: পিটিআই
প্রচারে জম্মু-কাশ্মীরে বিজেপির ‘মুখ’ ছিলেন তিনি। রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোটের দিন বিতর্কে জড়ালেন আমিরা কাদাল বিধানসভা কেন্দ্রের সেই প্রার্থী হিনা বাট। শ্রীনগরের কাছে ছানাপোরা এলাকার এক ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ঢুকে পোলিং অফিসারকে চড় মারার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে।
আজ চতুর্থ দফার ভোট ছিল জম্মু-কাশ্মীরে। পুলিশ জানাচ্ছে, রাজ্যে ভোট শান্তিপূর্ণ হলেও ছোট-বড় প্রায় ১৮টি বুথে বিক্ষিপ্ত ঝামেলা হয়েছে। যার মধ্যে হিনার ঘটনাটি অন্যতম। হিনা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেন, “ওই পোলিং অফিসার এক ভোটারকে ইভিএম-এর কাজ দেখানোর অছিলায় নিজেই ভোটযন্ত্রের বোতাম টিপছিলেন। আমি প্রতিবাদ করায় দু’পক্ষের বচসা বাধে। আমি কাউকে চড় মারিনি।” হিনার অভিযোগ, “আমাদের দলের বুথকর্মীদের দু’ঘণ্টা বুথে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। ওখানে কী হচ্ছে, তা জানতে ওই কেন্দ্রে গিয়ে দেখি রিগিং চলছে।” তবে এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে হিনাকে একহাত নিয়েছে ন্যাশনাল কনফারেন্স আর পিডিপি। মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার ব্যঙ্গ, “শ্রীনগরে বিজেপির প্রার্থী যিনি আগে ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ লোপের জন্য অস্ত্র ধরার ডাক দিয়েছিলেন, এ বার পোলিং অফিসারকে চড় মেরেছেন। খুব ভাল।” পিডিপি সভাপতি মেহবুবা মুফতি একই সুরে বলেছেন, “যা-ই হয়ে থাকুক। কারও কাউকে মারার অধিকার নেই।” যা শুনে হিনার বক্তব্য, “আসলে তো আমি কাউকে মারিনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আমার ওই কাজটাই করা উচিত ছিল।”
বুথে ঢুকে ভোটকর্মীদের উপর রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের চড়াও হওয়ার ঘটনা দেশে নতুন নয়। চলতি বছর লোকসভা ভোটে প্রায় একই অভিযোগ উঠেছিল দীপালি সাহা নামে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ার এক তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে। তিনি বুথে ঢুকে প্রিসাইডিং অফিসার-সহ একাধিক ভোটকর্মীকে মারেন বলে অভিযোগ। দীপালির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হলেও পুলিশ প্রথমে তাঁকে গ্রেফতার করেনি। পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। আদালতে দীপালির হয়ে সওয়াল করেছিলেন বাংলারই এক মন্ত্রী, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।
কাশ্মীরে শুধু হিনাই নন। বুথে ঢুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে অপর এক বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধেও। দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ানের মুছওয়াড় এলাকার ঘটনা। প্রার্থীর নাম আহমেদ কাদরি। তিনি জানিয়েছেন, ন্যাশনাল কনফারেন্স আর পিডিপির সমর্থকেরা রিগিং করছিল। প্রতিবাদ করতেই তিনি বুথে ঢোকেন। কাউকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাদরিও। তবে একটি সূত্র জানাচ্ছে, বুথের ওই ঘটনার ছবি সিসিটিভিতে উঠেছে। জেলার নির্বাচনী অফিসার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “মারধরের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ দোষ করলে শাস্তি হবে।” রাতের দিকে কাদরির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়।
তবে এত গোলমাল আর প্রবল শীতের মধ্যে আজও প্রচুর মানুষকে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। আগের তিন দফায় উপত্যকায় ঠিক যে ছবিটা দেখা গিয়েছিল, আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। নিবার্চনী অফিস সূত্রে খবর, গোটা রাজ্যে আজ ৪৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ভোট বয়কটের ডাক উপেক্ষা করে প্রচুর ভোট পড়েছে খাস রাজধানী শ্রীনগরেও। আজ ভোট দিতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাকে। যদিও ভোট দিতে পারেননি তাঁর বাবা, ফারুক আবদুল্লা। চিকিৎসার জন্য আপাতত বিদেশে রয়েছেন তিনি।
ঝাড়খণ্ডে নির্বাচন নির্বিঘ্নেই
ভোটের লাইনে। রবিবার ধানবাদে। ছবি: চন্দন পাল
ঝাড়খণ্ডে চতুর্থ দফার বিধানসভা নির্বাচন মিটল শান্তিতেই। রবিবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া হিসেব অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ধানবাদ, বোকারো, গিরিডি, নিরসা, দেওঘর, মধুপুর-সহ মোট ১৫টি কেন্দ্রে এ দিন ভোট পড়েছে ৬১.৮ শতাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy