মোদী সরকারের রেল ও সাধারণ বাজেটে খুশি নয় অসম। ক্ষোভ ছড়িয়েছে বরাকেও।
উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে ‘এইমস্’ তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। কিন্তু অসমের বিভিন্ন সংগঠনের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যতটা আশ্বাস দিয়েছিলেন, বাজেটে তার সিকিভাগও মেলেনি। নাগাল্যান্ড আইআইটি, অরুণাচলপ্রদেশ চলচ্চিত্র শিক্ষাকেন্দ্র পেলেও, একই মত সে সব রাজ্যের বাসিন্দাদেরও।
রেল বাজেটে বঙ্গাইগাঁও-গোয়ালপাড়া-গুয়াহাটি প্রকল্পে ১ হাজার ৮৩২ কোটি ও দিগারু-হোজাই প্রকল্পে ৯৪৬ কোটি বরাদ্দ হয়েছে। উত্তর-পূর্ব রেলের সব জায়গায় ‘ডবল লাইন’ প্রকল্পের জন্য ৫০৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তা গত বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেশি। অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেন, “এই বাজেট দেশের ধনকুবের ও ব্যবসায়ীদের জন্য। অসম-সহ উত্তর-পূর্বে বেকারত্ব দূরীকরণ, বন্যা ও ভূমিক্ষয় রোধ, ক্ষুদ্রশিল্পের বিকাশ ও কৃষি উন্নয়নে কোনও আশ্বাস দেওয়া হয়নি। এখানে এইম্স তৈরির জন্য রাজ্য সরকার গত বছরই জমি বরাদ্দ করেছে। রেল বাজেটেও আমরা নতুন কিছু পাইনি।”
এইমস্ গঠনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে আসু। তবে, অসমের বন্যা ও ভূমিক্ষয় নিয়ে প্রকল্প ঘোষণা না হওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ। রাজ্যে নদী গবেষণা কেন্দ্র, আইআইএম গঠনের দিকেও কেন্দ্রীয় সরকার নজর দেয়নি বলে তাদের অভিযোগ। অসম সিপিএম বাজেটকে জনবিরোধী বলে চিহ্নিত করেছে। এআইইউডিএফ জানায়, সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে বেশি বরাদ্দ করা হয়নি।
ওই সংগঠন নামনি অসমে এইমস্ তৈরির দাবি তুলেছে।
শিলচরের বিজেপি বিধায়ক দিলীপকুমার পাল অসমে এইমস্ তৈরির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “আয়কর ছাড় কিছুটা বাড়লে মানুষের সুবিধা হতো।” কাছাড় জেলা কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক মৃদুল মজুমদারের বক্তব্য, “বাজেট মধ্যবিত্তদের হতাশ করেছে। এতে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে।” শ্রমিক-কর্মচারী-শিক্ষক সমন্বয় সমিতির সভাপতি পরিতোষ দে-র বক্তব্য, “আমরা অন্য বছরের মতোই উপেক্ষিত।” বণিক সংগঠন ফিকি জানায়, উত্তর-পূর্ব বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নীতি ফের চালুর বিষয়ে বাজেটে কথা বলা হয়নি।
উত্তর-পূর্বে যোগাযোগ পরিকাঠামো বৃদ্ধি নিয়েও অর্থমন্ত্রী কিছু বলেননি। বণিক সংগঠন ‘ফাইনার’-এর চেয়ারম্যান আর এস যোশী বলেন, “উত্তর-পূর্ব বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নীতি ফের চালুর অপেক্ষা করছি।”
অসম চেম্বার অফ কর্মাস অবশ্য বাজেটে খুশি। সংগঠনের বক্তব্য, আরও বেশি বিদেশি নাগরিক ‘ভিসা অন অ্যারাইভাল’-এর সুবিধা পাওয়ায় পর্যটনের উন্নয়ন হবে। বিভিন্ন বণিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের একাংশ জানিয়েছেন, বাজেটে উত্তর-পূর্বে তথ্য-প্রযুক্তি প্রকল্প ও পর্যটন শিল্পকে অবহেলা করা হয়েছে।
অন্য দিকে, বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন শুরুর আগে অসম মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজ্যের সব দফতরের বরাদ্দ থেকে ৫ শতাংশ পড়শি রাজ্যগুলির সীমানাবর্তী এলাকার উন্নয়নে খরচ করা হবে। তা ছাড়া, ভূমিক্ষয়ে জমি হারানো পরিবারগুলিকে ৭৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। বন্যা ও ভূমিক্ষয় রোধে ‘জল কমিশন’ তৈরি করা হবে। এমবিবিএস পাঠ্যক্রমে চা ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জন্য আসন সংরক্ষণ বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy