Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

লালু-নীতীশ দু’দরজাই খোলা রাখছে কংগ্রেস

লালু প্রসাদের সঙ্গে বোঝাপড়া চলাকালীনই নীতীশ কুমারের সঙ্গে সমঝোতার দরজা খুলে দিল কংগ্রেস। দলের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, রামবিলাস পাসোয়ান বিজেপি-র হাত ধরার পর এখন লালু-নীতীশ দুই বিকল্পই খতিয়ে দেখছে কংগ্রেস। তবে কোনওটাই এখনও চূড়ান্ত নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৪ ০৮:৪০
Share: Save:

লালু প্রসাদের সঙ্গে বোঝাপড়া চলাকালীনই নীতীশ কুমারের সঙ্গে সমঝোতার দরজা খুলে দিল কংগ্রেস। দলের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, রামবিলাস পাসোয়ান বিজেপি-র হাত ধরার পর এখন লালু-নীতীশ দুই বিকল্পই খতিয়ে দেখছে কংগ্রেস। তবে কোনওটাই এখনও চূড়ান্ত নয়।

সে দিক থেকে আজ জল্পনা উস্কে দিয়েছে আরও একটি ঘটনা। তা হল, লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে বুধবার ফের মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। প্রধানমন্ত্রী আজ মায়ানমার সফরে গিয়েছেন। ফিরবেন আগামিকাল রাতে। কংগ্রেস ও সরকারি সূত্রে খবর, নীতীশ কুমারের সঙ্গে সমঝোতা চূড়ান্ত হলে মন্ত্রিসভার ওই বৈঠকে বিহারকে বিশেষ মর্যাদা দিতে পারে সরকার। কেন না, কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের ব্যাপারে নীতীশের একটাই শর্ত পিছিয়ে পড়া রাজ্য হিসেবে বিহারকে বিশেষ মর্যাদা দিতে হবে। সে দিক থেকে সরকার এক প্রস্ত জমি তৈরি করেই রেখেছে। সম্প্রতি অনগ্রসরতার সূচকের নতুন মাপকাঠি স্থির করে বিহারকে অন্যতম পিছিয়ে পড়া রাজ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে রঘুরাম রাজন কমিটি।

কংগ্রেসের গতিপ্রকৃতি লালু প্রসাদ যে আঁচ করতে পারছেন না, তা নয়। আরজেডি-র অনেকেই মনে করছেন, এ-ও হতে পারে কংগ্রেস চাপের রাজনীতি করছে। স্নায়ুর লড়াই চালাচ্ছে তাঁদের সঙ্গে। শুধু লালু নন, কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশ আজও বলেন, আরজেডি-র সঙ্গে কংগ্রেসের জোটের অভিজ্ঞতা রয়েছে। জেডিইউ-এর সঙ্গে তা নেই। তাই লালু প্রসাদের সঙ্গেই শেষ পর্যন্ত জোট হবে। দু’-তিন দিনের মধ্যে তা ঘোষণাও হয়ে যাবে।

কিন্তু কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, রামবিলাস পাসোয়ান বিজেপি-র হাত ধরার পর আরজেডি-র তুলনায় জেডিইউ এখন জোটের জন্য ভাল বিকল্প হতে পারে। কারণ, কংগ্রেসকে লালু যে সব আসন ছাড়ছেন, সেখানে জেতা মুশকিল। এই অবস্থায় নীতীশের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা যেতেই পারে। কংগ্রেস সূত্রে খবর, নীতীশ কুমার ঘনিষ্ঠ জেডিইউ নেতা এন কে সিংহের সঙ্গে এখন জোট প্রশ্নে আলোচনা চলছে আহমেদ পটেলদের। তবে এই পরিস্থিতিতে মূল প্রশ্নটা থেকেই যায়, কংগ্রেস কি বিহারকে বিশেষ মর্যাদা দিতে প্রস্তুত? জবাবে দলের এক শীর্ষ সারির নেতা বলেন, নীতীশের সঙ্গে রফা চূড়ান্ত হলে তবেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগেভাগে সিদ্ধান্ত নিয়ে ঠকতে চায় না কংগ্রেস।

তাৎপর্যপূর্ণ হল, লোকসভা ভোটের আগে বিহারে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলের এই গন্ধ এখন পাচ্ছেন বিজেপি নেতারাও। ফলে তাঁরাও এখন বিষয়টি নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, নীতীশের সঙ্গে বিজেপি-র বিচ্ছেদ হয়েছে বটে, কিন্তু তাই বলে কংগ্রেস আর জেডিইউ-এর মধ্যে সমঝোতা হয়ে যাক, এটাও চাইছেন না তাঁরা। বরং ভোটের পর নীতীশের জন্য দরজা খোলা রাখারই বার্তা দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা। নীতীশের ব্যক্তিগত বন্ধু ও মোদীর কৌশল রচনার রূপকার অরুণ জেটলি আজ তাই বলেন, বিহারের জন্য বিশেষ প্যাকেজের দাবি ন্যায্য। জোটে থাকার সময় বিজেপিও নীতীশের সঙ্গে মিলে এই দাবি করেছে। কিন্তু কংগ্রেস যে সেই প্যাকেজ দেবে না, তা-ও নীতীশের বোঝা উচিত। দেওয়ার হলে এত দিনেই দিয়ে দিত। লালু আর নীতীশের মধ্যে কাউকে বাছতে হলে প্রথম জনকেই বেছে নেবে তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

lalu nitish
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE