Advertisement
E-Paper

২০০৪-এর অবস্থা হলে কংগ্রেসকে নিয়ে ভাববেন বুদ্ধ

রাজনীতি যে সম্ভাবনার শিল্প, বুঝিয়ে দিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য! ভোটে বামেদের লড়াই বিজেপি এবং কংগ্রেস, দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই। কিন্তু ২০০৪-এর মতো পরিস্থিতি আবার হলে এবং অন্য কোনও বিকল্প না-থাকলে ভোটের পরে কংগ্রেসকে সমর্থনের সম্ভাবনা ভেবে দেখতে হবে বলে মন্তব্য করলেন বুদ্ধবাবু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৪ ০৪:১৫
Share
Save

রাজনীতি যে সম্ভাবনার শিল্প, বুঝিয়ে দিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য!

ভোটে বামেদের লড়াই বিজেপি এবং কংগ্রেস, দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই। কিন্তু ২০০৪-এর মতো পরিস্থিতি আবার হলে এবং অন্য কোনও বিকল্প না-থাকলে ভোটের পরে কংগ্রেসকে সমর্থনের সম্ভাবনা ভেবে দেখতে হবে বলে মন্তব্য করলেন বুদ্ধবাবু। যদিও তাঁরই দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেসের জন্য বামেদের দরজা বন্ধ। সিপিএম পলিটব্যুরোর দুই নেতার মতের এই ফারাক ভোটের মুখে জল্পনা উস্কে দিয়েছে।

কেন্দ্রে ২০০৪ সালের মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে ভোটের পরে বামেরা কি আবার কংগ্রেসকে সমর্থন করতে পারে? এই প্রশ্নের জবাবে সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে বুদ্ধবাবু বলেছেন, “একমাত্র যদি ২০০৪-এর মতোই পরিস্থিতি আসে এবং সেখানে অন্য কোনও রাস্তা যদি খোলা না থাকে!” তবে একই সঙ্গে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “আমাদের আশা, ২০০৪-এর মতো পরিস্থিতি আর হবে না। তখন সাম্প্রদায়িক বিজেপি-কে ঠেকানোর জন্য আমাদের কংগ্রেসের দিকে যেতে হয়েছিল।”

বুদ্ধবাবুর মন্তব্য ফের জল্পনা খুঁচিয়ে তুললেও সিপিএমের অন্দরেই এই প্রশ্নে দু’রকমের ব্যাখ্যা মিলছে। দলের একাংশের মতে, ইদানীং বিজেপি-কে বেশি আক্রমণ করে তৃণমূল নেত্রী কংগ্রেসের জন্য সম্ভাবনার দরজা খুলে রাখছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে বুদ্ধবাবুও কংগ্রেসের প্রতি কৌশলে বার্তা দিয়ে রাখলেন। আবার সিপিএমেরই অন্য একাংশের বক্তব্য, ২০০৪-এর উদাহরণ দিয়ে বুদ্ধবাবু একটি তাত্ত্বিক অবস্থানের কথা বলেছেন। কিন্তু একই সঙ্গে বলেছেন যে, ওই পরিস্থিতি আর ফিরবে বলে তাঁরা মনে করেন না। সুতরাং, তার পরে আর নতুন জল্পনা অর্থহীন!

বস্তুত, সংবাদসংস্থাকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে বুদ্ধবাবু এ-ও বলেছেন, “যেমন করে হোক কিছু রাজনৈতিক শক্তিকে একজোট করে ভোটের পরে আবার কংগ্রেসের ধামাই ধরতে হবে, এটা আমাদের দলের কৌশলগত লাইনের অংশ নয়!” তিনি পরিষ্কারই জানিয়েছেন, সর্বশক্তি দিয়ে তাঁরা বিজেপি-কে ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। পরাস্ত করতে চাইছেন কংগ্রেসকেও। গড়ে তুলতে চাইছেন বিকল্প শক্তি।

বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর উত্থানের সঙ্গে হিটলারের তুলনাও টেনেছেন বুদ্ধবাবু। বলেছেন, “জার্মানিতে ১৯৩৩ সালে নির্বাচনে জিতেছিলেন হিটলার। তার মানে কি তাঁর নীতি ঠিক ছিল?” তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কংগ্রেসের রাহুল গাঁধী সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাননি বুদ্ধবাবু। তাঁর কথায়, “তিনি দায়িত্ব নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ওঁকে চেষ্টা করতে দিন। ওই যুবক সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাই না।”

রাজ্যে প্রায় ২৭% সংখ্যালঘু ভোটের কথা ভেবে বিজেপি-কে আক্রমণ এখন বাকি সব দলেরই মূল রাজনৈতিক কৌশল হয়ে উঠেছে। মমতার মতো বুদ্ধবাবুরাও আক্রমণ করছেন মোদীকে। আবার একই সঙ্গে সিপিএম-কে রাজ্যে প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ভোটের বেশির ভাগ ঝুলি টনার চেষ্টা চালাতে হচ্ছে। তৃণমূল-বিরোধী ভোটের বিভাজন আটকাতে তাই কংগ্রেস এবং বিজেপি-র বিরুদ্ধে সূর্যকান্ত মিশ্রদের অভিযোগ, তারা অনেক আসনে দুর্বল প্রার্থী দিয়েছে। বাম সূত্রের ব্যাখ্যায়, চতুর্মুখী লড়াইয়ে এ বার সামান্য কিছু ভোটও তফাত গড়ে দিতে পারে। তাই সম্ভাব্য সব পথই বাজিয়ে দেখতে হচ্ছে সকলকে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে রবিবারই দলীয় প্রার্থী সুজন চক্রবর্তীর কেন্দ্রে কর্মিসভা করতে গিয়ে কংগ্রেস-সহ সব দলের সমর্থকদের কাছেই সমর্থন চাওয়ার জন্য দলের কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন সিপিএম পলিটব্যুরোর আর এক সদস্য সূর্যবাবু। তিনি বলেছেন, “ভাঙড়ে তৃণমূলের একাংশের অত্যাচারে সিপিএম, কংগ্রেস-সহ সব দলের কর্মীরা ভীত হয়ে পড়েছেন। আপনারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করা শুরু করুন। অন্য রাজনৈতিক দলের সমর্থকেরা গালিগালাজ করলেও কিছু মনে করবেন না। একজোট হয়ে লড়াই করার চেষ্টা করুন।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}