সিঙ্ঘুতে পুলিশকে আক্রমণ। ছবি— রয়টার্স।
দিল্লি-হরিয়ানার সিঙ্ঘু সীমানায় শুক্রবারের হিংসার ঘটনায় এখনও অবধি ৪৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশকে তরোয়াল নিয়ে আক্রমণ করা ব্যক্তিও। ধৃতদের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টা, সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়া-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার বিশদ তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে।
হামলার ঘটনায় আলিপুরের স্টেশন হাউস অফিসার প্রদীপ পালিয়ালের হাতে গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি এখন চিকিৎসাধীন। ওই স্টেশন হাউস অফিসারকে আক্রমণ করা রণজিৎ সিংহ (২২)-কে আজ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বাড়ি পঞ্জাবের কাজামপুর গ্রামে।
নয়া কৃষি আইনের প্রতিবাদে গত দু’মাসের বেশি সময় ধরে দিল্লি সীমানায় যে আন্দোলন চলছে তার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হল সিঙ্ঘু। শুক্রবার দুপুরে আন্দোলনকারী কৃষক এবং স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। বিশাল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও শুরু হয় ঢিল ছোড়াছুড়ি। পুলিশের উপরও আক্রমণ হয়েছে। পরস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠির পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটায় পুলিশ।
সিঙ্ঘু সীমানা দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় তাঁদের অসুবিধা হচ্ছে। তাই সেখান থেকে উঠে যেতে হবে। এই দাবি নিয়ে কাল ২০০-র বেশি স্থানীয় গ্রামবাসী বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন আন্দোলনকারীদের তাঁবুর সামনে। সেখানে আন্দোলনকারীদের কিছু তাঁবু এবং নিত্যদিনের ব্যবহারিক জিনিস নষ্ট করা হয় বলে অভিযোগ। এই সময়ে পুলিশের সামনেই শুর হয় সংঘর্ষ। এ নিয়ে দিল্লি পুলিশের কর্তা অনিল মিত্তল বলেছেন, ‘‘বিক্ষোভকারীরা জানাচ্ছিলেন গত দু’মাস ধরে আন্দোলনে সহযোগিতা করলেও এই রাস্তা অবরোধের জেরে তাঁদের জীবনযাত্রার অসুবিধা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারও কয়েক জন এই রাস্তা খালি করার দাবি নিয়ে সিঙ্ঘু সীমানায় বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন।’’ যদিও আন্দোলনকারীদের বক্তব্য শুক্রবার সিঙ্ঘুতে বিক্ষোভকারীরা আদতে স্থানীয় কেউ নন। তাঁরা ভাড়া করা গুণ্ডা। পঞ্জাব থেকে আসা এক আন্দোলনকারী বলেছেন, ‘‘তাঁরা স্থানীয় নন। ভাড়া করা গুণ্ডা। আমাদের দিকে পাথর, পেট্রল বোমা ছুড়ছিল। বাধ্য হয়ে আমরা তাঁদের আটকাতে যাই। আমরা এই জায়গা ছাড়ব না।’’
গত দু’মাস ধরে চলে আসা আন্দোলনের তাল কাটে প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানীর বুকে ট্র্যাক্টর মিছিলকে ঘিরে। রাস্তায় নেমে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। লালকেল্লাতেও ভাঙচুর করে একটি দল। ঘটনায় জখম হন বহু পুলিশকর্মী। তার পর থেকেই সমালোচনার মুখে পড়েছে এই আন্দোলন। যদিও কৃষক সংগঠনের নেতারা সংযত এবং শান্তিপূর্ণ থাকার জন্য বারবার আবেদন করেছেন আন্দোলনকারীদের। প্রজাতন্ত্র দিবসের হিংসার ঘটনার তদন্তের জন্য ইতিমধ্যেই ৯ জন শীর্ষস্থানীয় কৃযক নেতাকে ডেকে পাঠিয়েছে দিল্লি পুলিশ। সিঙ্ঘু, টিকরির পাশাপাশি গাজিপুর সীমানায় ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের ডাকে প্রচুর লোকের সমাগম হয়। ৩০ জানুয়ারি মহাত্মা গাঁধীর প্রয়ান দিবস পালনের উদ্দেশে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা অবধি অনশনের ডাক দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীদের সেই অনশনে যোগ দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন কৃষক নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy