Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সকালে উচ্ছেদ অধীরকে, আদালতের নির্দেশে বিকেলে পিছু হঠল কেন্দ্র

অধীর চৌধুরীকে সরকারি বাংলো থেকে উচ্ছেদ করেও আদালতের নির্দেশে পিছু হঠল কেন্দ্র। সকালে জলের লাইন, বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে নিউ মোতিবাগের বাংলো থেকে কংগ্রেস সাংসদের সব জিনিসপত্র বার করে দেওয়া হল। দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ উচ্ছেদে স্থগিতাদেশ দেওয়ায় বিকেলেই আবার জুড়ে দেওয়া হল জলের লাইন, বিদ্যুৎ সংযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১৬:৪৩
Share: Save:

অধীর চৌধুরীকে সরকারি বাংলো থেকে উচ্ছেদ করেও আদালতের নির্দেশে পিছু হঠল কেন্দ্র। সকালে জলের লাইন, বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে নিউ মোতিবাগের বাংলো থেকে কংগ্রেস সাংসদের সব জিনিসপত্র বার করে দেওয়া হল। দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ উচ্ছেদে স্থগিতাদেশ দেওয়ায় বিকেলেই আবার জুড়ে দেওয়া হল জলের লাইন, বিদ্যুৎ সংযোগ। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর নিউ মোতিবাগ এলাকায় অধীরের বাংলোয় পুলিশ নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালায় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক। বিকল্প বাংলো মেরামত না করেই এই বাংলো থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে অধীর অভিযোগ করেন। বিকেলে দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ উচ্ছেদ স্থগিত করে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অধীরের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে বিজেপি।

অধীর চৌধুরীকে যে কায়দায় সরকারি বাংলো থেকে এ দিন উচ্ছেদ করার চেষ্টা হয়েছে, তা বেশ খানিকটা বেনজির। সাত সকালেই অধীরের বাংলোয় হানা দেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তারা। সঙ্গে দিল্লি পুলিশ। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদের বাংলোর বাংলোর বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়। কেটে দেওয়া হয় জলের লাইনও। তার পর বাংলো থেকে বার করে দেওয়া হয় কংগ্রেস সাংসদের সব জিনিসপত্র। সরকারি কর্তারা জানান, অধীর চৌধুরীর জন্য হুমায়ুন রোডে অন্য একটি বাংলো বরাদ্দ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও তিনি নিউ মোতিবাগের বাংলো ছাড়ছিলেন না। তাই উচ্ছেদ করা হচ্ছে। অধীর অবশ্য তখনই এই অভিযোগ নস্যাৎ করেন। তিনি বলেন, ‘‘হুমায়ুন রোডে যে বাংলো আমার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে, সেটির ভগ্নদশা। বাংলোর ভিতরে খুব খারাপ অবস্থা। চারিদিকে দেওয়াল স্যাঁতসেতে। আমি বলেছি, বাংলোটা মেরামত করিয়ে দিতে। ওটার মেরমতি হয়ে গেলেই এই বাংলো ছেড়ে চলে যেতাম। আমি এক বারও বলিনি এই বাংলো ছাড়ব না। তা সত্ত্বেও ওই বাংলো মেরামত না করিয়েই আমাকে এখান থেকে জবরদস্তি উচ্ছেদ করা হচ্ছে।’’ অধীর আরও বলেন, সংসদে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার মাশুল এই উচ্ছেদ।

আরও পড়ুন:

নিজেকে হিন্দু বলে পরিচয় দিতে ভয় করে: অনুপম খের

নিউ মোতিবাগের বাংলো ছাড়ার নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে অধীর চৌধুরী আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিলেন। কিন্তু দিল্লি হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ প্রথমে স্থগিতাদেশ দেয়নি। ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়ে যায়। সে প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘যে বিচারকের এজলাসে আমি স্থগিতাদেশ চেয়েছিলাম, তাঁর নামেই এই বাংলোটা বরাদ্দ করা হয়েছে।’’ পুরনো বাংলো থেকে উচ্ছেদ করা হলেও নতুন বাংলোয় যাননি। সিঙ্গল বেঞ্চে আবেদন খারিজ হওয়ায় তিনি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বিকেলের মধ্যে ডিভিশন বেঞ্চ অধীর চৌধুরীর আর্জি মেনে উচ্ছেদে স্থগিতাদেশ দিয়ে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। রায় হাতে আসতেই পিছু হঠতে বাধ্য হয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক। আবার জুড়ে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ এবং জলের লাইন।পুলিশই বাংলোয় ঢুকিয়ে দেয় বার করে দেওয়া জিনিসপত্র।

মোতিবাগে অধীরের পাশের বাংলোটি বাংলার আর এক সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র। আদালতের স্থগিতাদেশ আসার আগে তিনি এ দিন জানান, ব্যক্তিগত ভাবে অনেক চেষ্টা করা সত্ত্বেও বিষয়টা আটকানো সম্ভব হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘অধীরদার সঙ্গে আমার এ বিষয়ে অনেক বার কথা হয়েছে। আজ দুপুরেও অধীরদাকে বলেছি, নতুন বাংলোয় গিয়ে যদি পরিষেবাগত কোনও সমস্যা হয়, আমি সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব।’’

প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া এ দিন বলেন, ‘‘কংগ্রেস আমলে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। এই সরকারের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কোনও আস্থা নেই। নিন্দনীয় ঘটনা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Adhir Chowdhury Delhi House Eviction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE