কাজের খোঁজে: সকাল ১০টা। রাঁচীর লালপুরে তখনই ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
নোট-বাতিলের সুনামিতে এখনও হাবুডুবু হাল তাঁদের!
এক বছর আগে কেউ ছিলেন উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে, কেউ অন্ধ্রপ্রদেশের গুণ্টুরে। আবাসন নির্মাণের ঠিকাদার সংস্থায় মাস-মজুরির কাজ হাতে ছিল সকলের। এখন তাঁরা দিনমজুর।
ঠিক এক বছর আগে, ৮ নভেম্বর সন্ধেয় নরেন্দ্র মোদীর ‘জাতির উদ্দেশে ভাষণ’ বদলে দেয় তাঁদের জীবন। কাজের খোঁজে তাঁদের অনেকে আজকাল ভোর ভোরই ভিড় জমান রাঁচীর লালপুরে। গৃহস্থ বাড়ির আসবাব সরানো থেকে বাগান পরিষ্কার, মাটি কাটতে কেউ যদি ডেকে নিয়ে যান, সেই আশায়।
লালপুরের সেই ভিড়ে মিশে ছিলেন গুড্ডু মাহতো। বাড়ি বাড়ি ‘উঠানা-পটকানা’র (ভারী জিনিস সরানো) কাজে ডাক পড়ে তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘গাজিয়াবাদে নির্মীয়মাণ আবাসনে ঢালাইয়ের কাজ করতাম। নোট-বাতিলের দিনদুয়েক পর থেকে মজুরি নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়। নোটের অভাবে সপ্তাহখানেক পর কাজ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় ঠিকাদার সংস্থা।’’ গুড্ডুর মুখের কথা কাড়েন পাশে বসে থাকা অভিষেক ওঁরাও। তিনি জানান, অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরে রঙের মিস্ত্রি ছিলেন। নোট-বাতিলে কাজ হারিয়ে ফেরেন ঝাড়খণ্ডে। তাঁর মতো হাল অনেকের। তা-ই দিনমজুরের ভিড় বেড়েছে লালপুরে। নিয়মিত কাজ জোটে না। সংসার টানতে হিমসিম হন। মজুরি মেলে না আগের মতো। অভিষেক বলেন, ‘‘সংসারের জোয়াল টানতে স্ত্রীকেও দিনমজুরির কাজে লাগিয়েছি। কিন্তু অভাব মিটছে না।’’ গুড্ডু বলেন, ‘‘বছরখানেক আগে ৫০০ টাকা মজুরি পেতাম। এখন টেনেটুনে মেলে ৩০০। তাতে কি বাড়ির সব খরচ মেটে!’’
বছরখানেক আগে সকাল ৯টায় লালপুরে দেখা মিলত না কোনও দিনমজুরের। এখন ১০টাতেও হতাশ মুখের সারি। রাঁচীর রাতু রোডের মেট্রো গলি, হাতীয়ার কাছে সিংহ মোড় বা কাঁকের চাঁদনি চক— একই ছবি সব জায়গায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy