Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

শৌচাগার সাফ করাত আইএস, গোয়েন্দাদের জানালেন আরিফ

পরিবারের কাউকে না জানিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন। ইরাকে গিয়ে নাম লিখিয়েছিলেন আইএস-এর মতো কট্টরপন্থী জঙ্গি সংগঠনে। তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন, সবটাই ধর্মীয় দায়বদ্ধতার জন্য। কিন্তু আইএস-এ নাম লিখিয়েও মনের মতো কাজ জোটেনি। গোয়েন্দাদের এমনটাই জানিয়েছেন কল্যাণের ধৃত যুবক আরিফ মাজিদ। গত শুক্রবার তুরস্ক থেকে ভারতে ফেরেন আরিফ। তার পরেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫১
Share: Save:

পরিবারের কাউকে না জানিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন। ইরাকে গিয়ে নাম লিখিয়েছিলেন আইএস-এর মতো কট্টরপন্থী জঙ্গি সংগঠনে। তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন, সবটাই ধর্মীয় দায়বদ্ধতার জন্য। কিন্তু আইএস-এ নাম লিখিয়েও মনের মতো কাজ জোটেনি। গোয়েন্দাদের এমনটাই জানিয়েছেন কল্যাণের ধৃত যুবক আরিফ মাজিদ। গত শুক্রবার তুরস্ক থেকে ভারতে ফেরেন আরিফ। তার পরেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

এনআইএ-র গোয়েন্দারা আজ জানিয়েছেন, ইরাকে যাওয়ার জন্য যাঁরা তাঁকে সাহায্য করেছিল, তাঁদের বেশ কয়েক জনের নাম জানিয়েছেন আরিফ। আজ দীর্ঘক্ষণ ওই যুবককে জেরা করেন গোয়েন্দারা। তবে জেরায় আরিফ কী কী বলেছেন, তা নিয়ে মুখে কুলুপ গোয়েন্দাদের। আরিফ জানিয়েছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে না পাঠিয়ে তাঁকে দিয়ে ফরমাশ খাটানো হত। ইরাকে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরেও শৌচাগার পরিষ্কার, বাকি জেহাদিদের জন্য খাবার-জল নিয়ে যাওয়ার মতো টুকটাক কাজ করানো হত তাঁকে দিয়ে। আর এখানেই আপত্তি ছিল ওই যুবকের। আরিফের দাবি, বারবার যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার আর্জি জানালেও তাঁকে আমল দিত না আইএস-এর মাথারা। আরিফ জানিয়েছেন, ইরাকে কোনও ‘পবিত্র যুদ্ধ’ করছে না আইএস। তাঁর অভিযোগ, উল্টে জেহাদিরা সেখানকার মেয়েদের ধর্ষণ করছে।

কিন্তু আরিফের সব কথায় বিশ্বাস করছে না এনআইএ। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, জেরায় অনেক কথাই রং চড়িয়ে বলছেন আরিফ। আইএস-এর সদস্য হিসেবে হয়তো কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপনও করছেন। সেই সব ধোঁয়াশার জায়গাগুলো স্পষ্ট করতেই গোয়েন্দারা ওই যুবকের ‘লাই ডিটেক্টর টেস্ট’ করানোর কথা ভাবছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। এনআইএ-র গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, আরিফের সঙ্গেই দেশছাড়া কল্যাণের বাকি তিন যুবক দেশে ফিরলে তাঁদেরও গ্রেফতার করা হবে। তবে আরিফ গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে বাকি তিন জনের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় তাঁকে। দলে নাম লেখানো যুবকরা যে যে বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছেন, তাঁদের সেই নির্দিষ্ট বিভাগেই কাজে লাগাত আইএস। ফলে ওই তিন যুবক এখন ঠিক কোথায়, তা আরিফ জানেন না।

আরিফের ফিরে আসার খবরে আশার আলো দেখছেন শাহিম টাঙ্কি, ফাহাদ শেখ ও আমান টান্ডেলের বাড়ির লোক। গোবিন্দওয়াড়ি-দুধ নাকা এলাকার সর্বোদয়া সোসাইটির তিন তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকে আরিফের পরিবার। আরিফ ধরা পড়ার পর থেকে তাঁর বাড়ির লোকজনের দেখা মিলছে না। কাল শাহিমের কাকা কাসিফ টাঙ্কি মাজিদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু কাউকে না পেয়ে হতাশ কাসিফ বলেন, “আশায় ছিলাম আরিফের বাবার সঙ্গে দেখা হবে। ওঁকে জিজ্ঞেস করতাম আরিফ আমার ভাইপো সম্পর্কে কিছু জানে কি না। ভেবেই পাচ্ছি না, বাড়ির ছেলেটা ঠিক কী অবস্থায় রয়েছে।” ছেলের দেশে ফেরার আশায় দিন গুনছেন ফাহাদের মা জোহরাও। সাংবাদিকদের বললেন, “শুধু প্রার্থনা করতে পারি যে, ছেলেটা কোনও ভাবে ঘরে ফিরুক। আরিফ যে ভাবে ফিরে এসেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE