—প্রতীকী ছবি।
আরও এক নির্ভয়া কাণ্ডের তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। দিল্লি নয়, এ বারের ঘটনাস্থল ছিল বেঙ্গালুরু। বাস নয়, অটোরিকশায় করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তরুণীকে। কিন্তু অন্য এক অটোচালকের তৎপরতায় রুখে দেওয়া গেল বীভৎস পরিণতি। অটোচালক আসগর পাশা এখন তাই অত্যন্ত আলোচিত নাম সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে। প্রশংসিত হচ্ছে বেঙ্গালুরু পুলিশের ভূমিকাও।
যে তরুণী আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁর বয়স বছর ২০। কর্নাটকের চিত্রদুর্গ জেলার বাসিন্দা তিনি। শুক্রবার এক সম্পর্কিত দাদার সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে এক আত্মীয়ের বাড়ি যান ওই তরুণী। কিন্তু, সেই আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা হয়নি। ভাই-বোন স্থির করেন, সে রাতেই চিত্রদুর্গ ফিরে যাবেন। যশবন্তপুর স্টেশনে গিয়ে ফেরার ট্রেনের টিকিট কাটেন তাঁরা। কিন্তু, ট্রেনের তখনও অনেক দেরি। তাই ভাই-বোন একটি রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার জন্য যশবন্তপুর স্টেশনের বাইরে বেরোন। এর পরেই বিপত্তি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাই-বোন যখন রেস্তোরাঁর পথে, তখনই একটি অটোয় চড়ে তিন জন তাঁদের অনুসরণ করে। কিছু দূর এগিয়েই তরুণীকে টেনেহিঁচড়ে অটোয় তোলার চেষ্টা করে তারা। তাঁর দাদা বাধা দিলে, তাঁকে বেধড়ক মারধর করে ওই তিন দুষ্কৃতী। তার পর তরুণীকে অটোয় তুলে নিয়ে গায়েব হয়ে যায়।
অপহৃতার দাদা এবং অটোচালক আসগর পাশার কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে বেঙ্গালুরুর পুলিশ যে ভাবে ঝাঁপিয়েছিল উদ্ধার অভিযানে, প্রশংসিত হচ্ছে তাও। —প্রতীকী ছবি।
রাস্তায় সর্বসমক্ষে এই কাণ্ড ঘটছিল। কিন্তু কেউ এগিয়ে যাননি রুখতে। পেশায় অটোচালক আসগর পাশা ঘটনাস্থলে পৌঁছে জটলা দেখে জানতে পারেন ভয়ঙ্কর ঘটনাটির কথা। যে তরুণীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাঁর দাদাকে নিজের অটোয় তুলে নিয়ে তৎক্ষণাৎ তিনি যশবন্তপুর থানায় পৌঁছন। তরুণীর দাদা দুষ্কৃতীদের চেহারার যে রকম বিবরণ দিয়েছিলেন, তা শুনে আসগর পাশা পুলিশকে জানান, তিনি আঁচ করতে পারছেন এই ঘটনা কারা ঘটিয়েছে। তিন অপহরণকারীও পেশায় অটোচালক এবং তারা একটি বেসরকারি সংস্থার হয়ে অটোরিকশা চালান বলে পাশা পুলিশকে জানান। কোন এলাকায় তাদের ঠেক, সে কথাও পুলিশকে জানান পাশা।
আরও পড়ুন: বহু শিশুর প্রাণ বাঁচিয়েও ‘নায়ক’ কাফিল সাসপেন্ড!
অপহৃতা তরুণীর সম্পর্কিত দাদা এবং পাশাকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ সন্দেহভাজনদের খোঁজে বেরোয়। পাশার সন্দেহই ঠিক প্রমাণিত হয়। যে এলাকায় পুলিশকে নিয়ে গিয়েছিল পাশা, সেখানেই দেখা মেলে তিন দুষ্কৃতীর। পুলিশ দেখেই দু’জন পালিয়ে যায়। ফৈয়াজ নামে এক জন ধরা পড়ে। একটি গুদামঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় তরুণীকে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে দ্বিতীয় অভিযুক্ত জুবেইর খানকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। তৃতীয় জনের খোঁজ চলছে।
আরও পড়ুন: যোগীর দাবি খারিজ করে শিশু ফেরাল হাসপাতাল
উদ্ধার হওয়ার পরেও স্বাভাবিক ভাবেই ওই তরুণী প্রচণ্ড আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন। তিনি অল্পবিস্তর জখমও হয়েছিলেন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। তবে রাতেই বোনকে নিয়ে দাদা চিত্রদুর্গের উদ্দেশে রওনা হয়ে যান। ধৃতদের বিরুদ্ধে মারধর, অপহরণ, শ্লীলতাহানি এবং অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শনের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
আসগর পাশাকে সিল্কের শাল পরিয়ে সংবর্ধনা দিয়েছে পুলিশ। পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে পুরস্কৃতও করা হয়েছে। শুধু পাশা নন, যশবন্তপুর থানার যে পুলিশকর্মীরা আসগর পাশার সঙ্গে গিয়ে উদ্ধার করেন অপহৃতাকে, তাঁদেরও ২৫ হাজার টাকা দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy