Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অযোধ্যা মামলায় শুনানি শুরু ৫ ডিসেম্বর

আজ দেড় ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন পক্ষের সওয়াল, পাল্টা-সওয়াল শোনার পরে শীর্ষ আদালতের বিশেষ বেঞ্চ এই কথা ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে এ-ও জানিয়ে দিয়েছে, এর পরে আর শুনানির দিন কোনও

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০৩:০০
Share: Save:

অযোধ্যার বিতর্কিত জমির মালিকানা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চূড়ান্ত শুনানি শুরু হবে আগামী ৫ ডিসেম্বর। আজ দেড় ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন পক্ষের সওয়াল, পাল্টা-সওয়াল শোনার পরে শীর্ষ আদালতের বিশেষ বেঞ্চ এই কথা ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে এ-ও জানিয়ে দিয়েছে, এর পরে আর শুনানির দিন কোনও

মতেই মুলতুবি করা হবে না। মামলার প্রত্যেক পক্ষ যেন সময়-কাঠামো মেনে চলে।

উত্তরপ্রদেশ সরকারের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা ও রামলালা কর্তৃপক্ষের আইনজীবী সি এস বৈদ্যনাথন, উভয়েই শীঘ্র শুনানি শুরুর পক্ষে সওয়াল করেন এ দিনের শুনানিতে। কিন্তু কপিল সিব্বল, অনুপ জর্জ চৌধুরি ও রাজীব ধবন— অন্যান্য পক্ষের এই আইনজীবীরা ২০১৮-র জানুয়ারির আগে শুনানি শুরু না করার

আর্জি জানান। সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বিশেষ বেঞ্চ। এই বেঞ্চের বাকি সদস্যরা হলেন বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি আব্দুল নাজির।

ইলাহাবাদ হাইকোর্ট অযোধ্যায় রামজন্মভূমি - বাবরি মসজিদের ওই ২.৭৭ একর বিতর্কিত জমি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, রামলালা (হিন্দু মহাসভা যার প্রতিনিধিত্ব করে) ও নির্মোহী আখড়া— এই তিন পক্ষের মধ্যে সমান ভাগ করে দেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছিল ২০১০-এর ৩০ সেপ্টেম্বর। তিন মাসের মধ্যেই সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায় অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা ও সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। ২০১১-র ৯ মে সুপ্রিম কোর্টের দুই সদস্যের একটি বেঞ্চ ইলাবাবাদ হাইকোর্টের রায়ের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে বলে, উচ্চ আদালতের ওই রায় বিস্ময়কর, কারণ কোনও পক্ষই জমি ভাগ করে দিতে বলেনি। এর পরের

৬ বছরেও বিতর্কিত স্থলের জমির মালিকানা নিয়ে মামলার শুনানি শুরু করা যায়নি।

সম্প্রতি গড়া হয়েছে বিশেষ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। কিন্তু এই মামলায় প্রমাণ হিসেবে পেশ করা হতে পারে এমন সব নথি রয়েছে অন্তত ৮টি ভাষায়। আজ শুনানি শুরুর দিন স্থির করে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে ওই সব নথি ১২ সপ্তাহের মধ্যে ইংরেজিতে অনুবাদ করে নিতে হবে। এ কাজে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে সময় দেওয়া হয়েছে ১০ সপ্তাহ। এই সূত্রেই শীর্ষ আদালত সময়-কাঠামো মেনে চলা নিয়ে সতর্ক করে দিয়েছে সব পক্ষকে।

অযোধ্যা জমি মামলার শুনানির জন্য বিশেষ ফাস্ট ট্রাক আদালত গড়ার পরে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার। শিয়া সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের তরফে সে দিন একটি সমাধান-প্রস্তাব দেওয়া দেওয়া হয় এই আদালতে। তা হল, অযোধ্যার বিতর্কিত স্থল থেকে ‘সঙ্গত পরিমাণ দূরে’ মুসলিম অধ্যুষিত কোনও এলাকায় মসজিদ গড়ে সব বিরোধের নিষ্পত্তি করা হোক।

বেশ কিছু হিন্দু সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে ঠিক এই সমাধান সূত্রের কথাই বলে আসছে। কার্যত তাদের তাদের সঙ্গে একই সুরে শিয়া বোর্ডের তরফে সুপ্রিম কোর্টে ৩০ পাতার একটি হলফনামাও পেশ করা হয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, ‘‘সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এখন কিছু কট্টরপন্থী, ধর্মোন্মাদের নিয়ন্ত্রণে, যারা মোটেই শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করে না।’’ শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের আরও বক্তব্য, অযোধ্যার ওই বিতর্কিত জমি আদতে তাদের। ওই জমিতে আদৌ কোনও অধিকার নেই সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের। মনে করা হচ্ছে, আগামী ৫ ডিসেম্বর শুনানি শুরু হলে, শিয়া সংগঠনটির এই বক্তব্য নতুন মাত্রা দিতে পারে দীর্ঘদিন ধরে চলা এই জমি-মামলায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE