Advertisement
E-Paper

সারদা-ঘনিষ্ঠতার কথা মানলেন বিজেপি সাংসদ

পশ্চিমবঙ্গে ধরপাকড়, জেরা ও তল্লাশির পর্ব তো চলছেই। একই সঙ্গে সারদার অসম-সাম্রাজ্যে হানা দিয়ে সেই রাজ্যেও কেলেঙ্কারির কুশীলবদের চিহ্নিত করতে পুরোদমে তৎপরতা শুরু করেছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত দুই ডিজি-র নাম অসমের সারদা কেলেঙ্কারিতে উঠে এসেছে এবং তাঁদের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশিও চালিয়েছে।

সিবিআই অফিসে সদানন্দ গগৈ। শৌভিক দে-র তোলা ছবি।

সিবিআই অফিসে সদানন্দ গগৈ। শৌভিক দে-র তোলা ছবি।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫৩
Share
Save

পশ্চিমবঙ্গে ধরপাকড়, জেরা ও তল্লাশির পর্ব তো চলছেই। একই সঙ্গে সারদার অসম-সাম্রাজ্যে হানা দিয়ে সেই রাজ্যেও কেলেঙ্কারির কুশীলবদের চিহ্নিত করতে পুরোদমে তৎপরতা শুরু করেছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত দুই ডিজি-র নাম অসমের সারদা কেলেঙ্কারিতে উঠে এসেছে এবং তাঁদের বাড়িতে সিবিআই তল্লাশিও চালিয়েছে। আর এ বার তেজপুরের বিজেপি সাংসদ রামপ্রসাদ শর্মা সারদা কেলেঙ্কারিতে তাদের নজরে আছেন বলে সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়েছে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে রামপ্রসাদ শর্মা ছিলেন অসমে সুদীপ্ত সেনের বিস্তারিত সাম্রাজ্যের আইনি উপদেষ্টা। সিবিআই সূত্রের খবর, শর্মাকে যে কোনও দিন জেরা করা হতে পারে। এই আবহে শনিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি প্রসঙ্গে বিরোধীদের পাল্টা আক্রমণ করেছেন।

আনন্দবাজারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময়ে সাংসদ রামপ্রসাদ শর্মা সারদার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ সম্পর্কের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করে শর্মা বলেন, “একটি সংস্থার (সারদা) আইনি উপদেষ্টা হিসেবে যা করার করেছি। ওকালতি আমার পেশা। সারদা থেকে পরিষেবা দেওয়ার বিনিময়ে টাকা পেতাম প্রতি মাসে।” তবে রামপ্রসাদ শমার্র বক্তব্য, “আমি সারদার কর্মী ছিলাম না। সিবিআই এলে যা জানানোর, জানাব।”

এই ভাবে সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে বিজেপি সাংসদের নাম উঠে আসায় অসমের শাসকদল কংগ্রেস স্বস্তি পেল বলে মনে করা হচ্ছে। এত দিন বিজেপি সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছিল। প্রাক্তন হেভিওয়েট মন্ত্রী, কংগ্রেসের হিমন্তবিশ্ব শর্মার সঙ্গে সারদার ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ ও মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের সম্পত্তির ব্যাপারে সিবিআই তদন্ত চেয়ে কংগ্রেস তথা রাজ্য সরকারকে চেপে ধরেছিল বিজেপি। ওই হিমন্তবিশ্ব শর্মারই ‘কাছের মানুষ’ বলে পরিচিত গায়ক ও চিত্র নির্মাতা সদানন্দ গগৈকে এ দিন ফের কলকাতায় জেরা করা হয়।

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ অবশ্য বলেছেন, “আমার সঙ্গে চিট ফান্ডের যোগ নিয়ে বিজেপির হাতে প্রমাণ থাকলে তারা খোলাখুলি সেই সব প্রমাণ দেখাচ্ছে না কেন?” কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির নেতা অখিল গগৈ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অর্থলগ্নি সংস্থার কাছ থেকে কমিশন নেওয়ার অভিযোগ তোলেন। সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের বক্তব্য, “হয় অখিল অভিযোগ প্রমাণ করুক, নয়তো এই ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলার জন্য অখিলকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় ওঁর বিরুদ্ধে আইনি নোটিস পাঠাব।” মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যের ১৫টি চিট ফান্ডের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চেয়ে ২০১৩ সালের ৬ মে রাজ্যই চিঠি পাঠিয়েছিল।

অসমে সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে সিবিআই জেনেছে, ২০০৯ থেকে ২০১১এই তিন বছর সুদীপ্ত সেনের সাম্রাজ্য বিস্তারে অনেকটাই সাহায্য করেন প্রবীণ আইনজীবী রামপ্রসাদ শর্মা। সিবিআই সূত্রের খবর, ওই তিন বছরে অসমে অর্থলগ্নি সংস্থা, রিয়েল এস্টেট ও সংবাদমাধ্যমের রমরমা ব্যবসা ফেঁদেছিল সারদা। সেই সময়ে মোটা মাসোহারার ভিত্তিতে রামপ্রসাদ শর্মা সারদার সমস্ত আইনি ঝঞ্ঝাট সামলাতেন বলে খবর। তখন সারদার বিরুদ্ধে অসম ও মেঘালয়ে মামলা রুজু হয়েছিল। আদালতে সারদার আইনজীবী হিসেবে ছিলেন এই রামপ্রসাদ শর্মাই। আর সেই রামপ্রসাদ শর্মা এখন তেজপুর থেকে নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ।

তদন্তকারীরা জেনেছেন, সারদার সাম্রাজ্যে ভাঙন শুরু হওয়ার পর নিয়মিত মাসোহারা পাচ্ছিলেন না শর্মা এবং প্রধানত সে কারণেই সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে চিড় ধরে বলে সিবিআইয়ের দাবি। তবে তাদের বক্তব্য, সুদীপ্ত সেন কী ভাবে অসম-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিলেন, প্রতারণার মামলায় সেই সময়ে পাশ কাটানোই বা কী ভাবে হয়েছিল, রামপ্রসাদ শর্মাকে জেরা করলে সেই ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যেতে পারে।

sadananda gogoi Saradha sam rajibakhya rakshit guwahati

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}