বালেশ্বরে দুমড়ে যাওয়া করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ছবি: সংগৃহীত।
বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও ওড়িশা সরকার জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ২৭৫। এই মৃত্যুমিছিলে রবিবার সারা দিন হন্যে হয়ে ভাইয়ের লাশ খুঁজছিলেন দাদা। ভাই যে আর নেই, তা আগেই জানতে পেরেছিলেন তিনি। তবে শোকপালনের সময় মেলেনি। শেষকৃত্যুটুকু সম্পন্ন করার আশায় দিন-রাত এক করেছেন।
বিহারের পূর্ণিয়ার বাসিন্দা ২১ বছরের মিঠুন ঋষিদেব। তাঁর ভাই ললিত শুক্রবার করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন। চেন্নাইয়ে দিনমজুরের কাজ করতে যাচ্ছিলেন তিনি। ভাইয়ের সঙ্গে মিঠুনের শেষ বার কথা হয় শুক্রবার সন্ধ্যাবেলা। দুর্ঘটনার কয়েক মিনিট আগেই তাঁরা ফোনে কথা বলেছিলেন।
করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার পর গুরুতর জখম হন ললিত। তাঁকে ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়েরা উদ্ধার করেছিলেন। সে সময় আহত ভাইয়ের সঙ্গে শেষ বার কথা বলেন মিঠুন।
স্থানীয়দের মাধ্যমেই মিঠুনের সঙ্গে ললিতের আরও এক বার ফোনে যোগাযোগ হয়েছিল। রক্তাক্ত অবস্থায় ললিতকে উদ্ধার করার পর স্থানীয়দের কাছে নিজের শেষ ইচ্ছা জানিয়েছিলেন তিনি। মৃত্যু যে নিশ্চিত, তা আগেই বোঝা গিয়েছিল। ললিতের শেষ ইচ্ছা ছিল কেবল দাদার সঙ্গে এক বার কথা বলা।
ফোনেই ভাইয়ের এই শেষ ইচ্ছা শোনেন, তা পূরণও করেন মিঠুন। তার পর বিহার থেকে তড়িঘড়ি চলে আসেন বালেশ্বর। রবিবার বালেশ্বর পৌঁছে ভাইকে খুঁজে পাননি মিঠুন। স্থানীয়দের কাছ থেকে ভাইয়ের মোবাইল ফোনটি তিনি পেয়েছেন। কিন্তু ললিতের মৃতদেহ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্টেশনের ধারে, মর্গে, হাসপাতালে হন্যে হয়ে সারা দিন ভাইকে খুঁজেছেন মিঠুন। লাশের ভিড়ে ললিতের দেহ আদৌ পাওয়া যাবে কি না, নিশ্চিত নয় তা-ও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy