Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিদায় চান বুদ্ধ-নিরুপম, ফয়সালা বিশাখাপত্তনমে

দু’টি আসন নিশ্চিত। বাকি দুই আসনের জন্য লড়াই! যার ফয়সালা হতে চলেছে বিশাখাপত্তনমে। এ বারের পার্টি কংগ্রেস থেকে নতুন সাধারণ সম্পাদক পাবে সিপিএম। সেই আসর থেকেই যে নতুন পলিটব্যুরো গঠিত হতে চলেছে, তাতে এ রাজ্য থেকে শেষ পর্যন্ত ক’টি নতুন মুখ দেখা যাবে, তা নিয়েও দলের অন্দরে জমে উঠেছে লড়াই।

পলিটব্যুরো থেকে সরছেন কি বুদ্ধদেব ও নিরুপম?

পলিটব্যুরো থেকে সরছেন কি বুদ্ধদেব ও নিরুপম?

সন্দীপন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৩
Share: Save:

দু’টি আসন নিশ্চিত। বাকি দুই আসনের জন্য লড়াই! যার ফয়সালা হতে চলেছে বিশাখাপত্তনমে।

এ বারের পার্টি কংগ্রেস থেকে নতুন সাধারণ সম্পাদক পাবে সিপিএম। সেই আসর থেকেই যে নতুন পলিটব্যুরো গঠিত হতে চলেছে, তাতে এ রাজ্য থেকে শেষ পর্যন্ত ক’টি নতুন মুখ দেখা যাবে, তা নিয়েও দলের অন্দরে জমে উঠেছে লড়াই। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এ বার পলিটব্যুরো থেকে প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনের বিদায় এক রকম নিশ্চিত। অসুস্থতার জন্যই গত মাসে দলের রাজ্য সম্মেলনে রাজ্য কমিটির পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন তিনি। কয়েক দিন আগে ফের হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছে। এই অবস্থায় নিরুপমবাবুর জায়গায় নতুন মুখের অন্তর্ভুক্তি এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই সিপিএম সূত্রের খবর। এখন অন্তিম পর্বের টানাপড়েন চলছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিয়ে। গত ৬ বছর ধরে শারীরিক কারণে কলকাতার বাইরে দলের বৈঠকে যোগ দিতে অপারগ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দলকে জানিয়ে দিয়েছেন, এই ভাবে আর পলিটব্যুরোর সদস্যপদ ধরে রাখা অর্থহীন। তাঁর জায়গায় সক্ষম কাউকে বরং সুযোগ করে দেওয়া হোক। দলের নেতাদের কেউ কেউ অবশ্য বুদ্ধবাবুকে ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সিপিএম সূত্রের খবর, শুক্রবারও দলের বিদায়ী পলিটব্যুরোকে একই মনোভাব জানিয়ে দিয়েছেন এই বর্ষীয়ান নেতা।

এই পরিস্থিতিতে পলিটব্যুরোয় দ্বিতীয় সম্ভাব্য শূন্যস্থান ভরাট করার লক্ষ্যে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে দলের অন্দরে। নিরুপমবাবুর জায়গায় পলিটব্যুরোয় অন্তর্ভুক্তির দৌড়ে এগিয়ে সাংসদ মহম্মদ সেলিম। সুবক্তা এবং সংখ্যালঘু মুখ হিসাবে সেলিমকে ওই কমিটিতে নিয়ে আসতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও তেমন আপত্তি কারও নেই। বিশেষত, লোকসভায় সিপিএমের দলনেতার পদ সেলিমের দিকে না আসার ‘যন্ত্রণা’ ভুলিয়ে তাঁকে সংগঠনে মর্যাদা দিতে বেশিই আগ্রহী আলিমুদ্দিন। কিন্তু দ্বিতীয় সম্ভাব্য শূন্যস্থান নিয়ে নানা সমীকরণ কাজ করছে। বিদায়ী পলিটব্যুরোর এক সদস্যের কথায়, ‘‘গৌতম দেব সুস্থ থাকলে এই প্রশ্ন নিয়ে ভাবতেই হতো না! তাঁর অসুস্থতার জন্যই নানা বিকল্প ভাবতে হচ্ছে।’’একটি সূত্রের ইঙ্গিত, বুদ্ধবাবু শেষ পর্যন্ত অব্যাহতি পেলে দ্বিতীয় স্থানটির জন্য দাবিদার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং কৃষক সভার নেতা মদন ঘোষ। সিটু লবি আবার শ্যামল চক্রবর্তীকে পলিটব্যুরোয় দেখতে উঃসাহী। কিন্তু শারীরিক কারণই তাঁর বিরুদ্ধে যেতে পারে। এর মধ্যে কোনও নামেই ঐকমত্য না হলে হান্নান মোল্লার মতো বাঙালি অথচ দিল্লিতে দলের কেন্দ্রীয় স্তরে কাজ করে-আসা কোনও নেতা বাজি মেরে দিতে পারেন!

বিশাখাপত্তনমে সিপিএমের ২১তম পার্টি কংগ্রেস শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার। রাজ্যে পুরভোটের সঙ্গে দিনক্ষণের সংঘাতে পার্টি কংগ্রেস নিয়ে ঠিকমতো মাথা ঘামানোর অবসরই পাচ্ছেন না বঙ্গ সিপিএমের অনেক নেতা। সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেবের মতো রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং কলকাতা জেলার বহু নেতা পার্টি কংগ্রেসে যাচ্ছেনই না ভোটের কারণে। আর বুদ্ধবাবু এমনিই যেতে পারছেন না শারীরিক কারণে। তবু এর মধ্যেই নতুন কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা চলছে আলিমুদ্দিন এবং দিল্লির এ কে জি ভবনে। এ রাজ্য থেকে বাকি দুই পলিটব্যুরো সদস্য, রাজ্য সম্পাদক সূ্র্যকান্ত মিশ্র ও বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে নিয়ে জল্পনা নেই! রাজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে বিমানবাবু বয়সের কারণে সব কমিটি থেকে অব্যাহতির ইচ্ছে ঘোষণা করলেও পলিটব্যুরো থেকে তাঁর অবসরের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

পলিটব্যুরোর পাশাপাশিই পার্টি কংগ্রেসে তৈরি হওয়া কেন্দ্রীয় কমিটিতেও বাংলা থেকে কয়েকটি নতুন নাম ঢুকবে। এই তালিকায় সম্ভাবনার বিচারে এখনও পর্যন্ত পয়লা নম্বরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক সুজনবাবু। ভবিষ্যতে রাজ্যে দলের হাল ধরার জন্য তাঁর মতো নেতাদের তৈরি রাখতে চাইছে আলিমুদ্দিন। তবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে গেলে গৌতমবাবুর মতো সুজনবাবুর ক্ষেত্রেও বিশেষ অনুমতি লাগবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। কারণ সিপিএমের নিয়ম অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় কমিটি, রাজ্য কমিটি (সম্পাদকমণ্ডলীও বটে) এবং জেলা কমিটিতে একসঙ্গে থাকতে গেলে বিশেষ অনুমতি প্রয়োজন। গৌতমবাবুকে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়ার সময় যা করা হয়েছিল।

নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠানোর জন্য বুদ্ধবাবুদের পছন্দের দ্বিতীয় নাম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য।

সুজন-শ্রীদীপ ছাড়া তৃতীয় আর একটি অন্তর্ভুক্তির জন্য উপযুক্ত মহিলা এবং সংখ্যালঘু মুখের সন্ধানও চলছে। দলের এক কেন্দ্রীয় নেতার বক্তব্য, ‘‘এ বারের সম্মেলন থেকে সব কমিটিরই গড় বয়স কমানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটিতে বেশি তরুণ মুখ আনা সম্ভব নয়। তাই ভারসাম্যের নীতিই নেওয়া হবে।’’ ভারসাম্য
রক্ষার চূড়ান্ত লড়াই ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদে’র ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা অন্ধ্রপ্রদেশের সমুদ্র-শহরে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE