প্রতীকী ছবি।
মনমোহন সিংহ সরকারের শেষবেলায় সোনা আমদানিতে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু করতে পারে সিবিআই।
লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেস নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলাই এর লক্ষ্য কি না, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। কারণ বেশ কিছুদিন ধরেই এ বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই।
বিজেপি আগেই অভিযোগ তুলেছিল, মনমোহন-জমানার শেষে সোনা আমদানির শর্ত শিথিল করার ফলে নীরব মোদী, মেহুল চোক্সী, যতীন মেহতার মতো গয়নার কারবারিদের ফায়দা হয়েছিল। সে সময়ে তাঁরা বিপুল পরিমাণে সোনা আমদানি করেন। তা ব্যবহার করে হিরের গয়না তৈরির নামে ব্যাঙ্ক থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ নেন। তারপর ঋণ শোধ না করেই দেশ থেকে পালিয়ে যান।
মোদী-মেহুল-মেহতাদের মতো ফেরার আর্থিক অপরাধীদের দেশে ফেরাতে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ বিমান সিবিআই-ইডির অফিসারদের নিয়ে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে রওনা হবে বলে দিল্লিতে এখন জল্পনা তুঙ্গে।
মেহুল বা মেহতা দেশে ফিরে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুখ খুললে, লোকসভা ভোটের আগে নতুন অস্ত্র পেয়ে যাবে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজই মাদুরাইতে বিজেপির জনসভায় বলেছেন, ‘‘যাঁরা দেশের টাকা লুট করেছেন, তাঁদের শাস্তি হবেই। সে তাঁরা ভারতেই থাকুন বা বাইরে।’’ নীরব-মেহুলের সঙ্গে মোদীর ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তাঁদের ফেরাতে পারলে মোদীও বড়াই করার সুযোগ পাবেন।
কয়েক বছর আগেই টাকা দিয়ে ক্যারিবীয় এলাকার সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস-এর নাগরিকত্ব কিনেছেন যতীন মেহতা। মেহুল চোক্সী সম্প্রতি অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডার নাগরিকত্ব কিনেছেন। আজ অ্যান্টিগা প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে, আদালত অনুমতি না দিলে মেহুলকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। কিন্তু ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যাঙ্ক প্রতারণায় অভিযুক্ত গুজরাতি হিরে ব্যবসায়ী যতীন মেহতাকে ফেরানো নিয়ে এখনও জল্পনা চলছে। দেশে সোনা আমদানির বাড়বাড়ন্ত রুখতে ২০১৩ থেকে সোনা আমদানিতে ৮০:২০ নিয়ম চালু হয়। যার মূল শর্ত ছিল, আমদানি করা সোনার ৮০ শতাংশ দেশেই বিক্রি করতে হবে। বাকি ২০ শতাংশ সোনা গয়না বানিয়ে রফতানি করা যাবে। এই শর্ত মানলেই ফের সোনা আমদানির অনুমতি মিলবে। ২০১৪-র মে মাসে পি চিদম্বরমের অর্থ মন্ত্রকের কথায় সেই শর্ত শিথিল করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সে সময় গভর্নর ছিলেন রঘুরাম রাজন। বিজ্ঞপ্তি জারি হয় ভোটের ফলের পরে। আগের নিয়মে ছিল শুধুমাত্র সরকারি সংস্থাই সোনা আমদানি করতে পারবে। ওই শর্ত শিথিল করার পরে ছ’মাসে দেখা যায়, তিনটি বেসরকারি সংস্থা ৪০ শতাংশ সোনা আমদানি করেছে।
২০১৬-তে সিএজি বলেছিল, এই শর্ত শিথিল করায় সরকারি কোষাগারের ১ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির সদস্য, বিজেপির নিশিকান্ত দুবে এই ঘটনায় সিবিআই, ইডি-র তদন্তের দাবি তোলেন। বিজেপির অভিযোগ, এই প্রকল্পের সুযোগ নিয়েই মোদী-মেহুল-মেহতারা ব্যাঙ্ক প্রতারণা করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy