Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Covaxin

কেন দেশে ৬ মাসেও বৃদ্ধি পেল না কোভ্যাক্সিন উৎপাদন, বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র

কংগ্রেস নেতা গৌরব বল্লভ বলেছেন, ‘‘গত বছর সব দেশ যখন টিকা উৎপাদন বাড়াতে চেষ্টা করেছে, তখন প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে হাততালি দিতে বলেছেন।’’

ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২১ ১৩:৩৯
Share: Save:

কোভিড টিকা নিয়ে দেশজুড়ে সমস্যা চলছে। কোনও কোনও রাজ্যে টিকার আকালের কারণে ১৮-৪৫ বছর বয়সিদের টিকাকরণ স্থগিত রাখতে হয়েছে। টিকা উৎপাদনে এত পরিকাঠামো থাকার পরও কেন ভারতে এই অবস্থা? জানা যাচ্ছে, উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য টিকা নিশ্চিত করতে নিয়মকানুন শিথিল করার জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আবেদন করেছিল ভারত। কিন্তু নিজের দেশে টিকা উৎপাদন বাড়াতে ৬ মাসেরও বেশি সময় নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কোভাক্সিন উৎপাদন বাড়াতে প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য ২০২১ সালের এপ্রিলে মাত্র তিনটি সংস্থাকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

কোভিডের টিকা ও ওষুধ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি পেতে ও বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু বিষয়ে ছাড়ের জন্য গত অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েছিল ভারত। আবেদনে ভারত সরকার যুক্তি দিয়েছিল, উন্নয়নশীল দেশে কম দামে টিকা এবং ওষুধ উৎপাদন দ্রুত বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে ‘মেধা স্বত্ব’ সংক্রান্ত চুক্তি। কেন্দ্রীয় সরকার বিদেশ থেকে টিকা পাওয়ার জন্য তদ্বিরও করেছিল। অথচ বিরোধীদের অভিযোগ, দেশে টিকার উৎপাদন বাড়ানোর পক্ষে তেমন কিছুই করেনি।

যেহেতু সেরামের ‘কোভিশিল্ড’ আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে তৈরি, তাই সেখানে বাধ্যতামূলক ভাবে লাইসেন্স পাওয়ার বিষয়টি জড়িত। যদিও ‘কোভ্যাক্সিন’-এর ক্ষেত্রে এই বিষয়টি জড়িত নয়। প্রতি মাসে ৫ কোটি টিকা উৎপাদনের পরিকাঠামো আছে সেরাম ইনস্টিটিউটের। অন্য দিকে, ভারত বায়োটেকের রয়েছে মাত্র ৯০ লাখ টিকা উৎপাদনের পরিকাঠামো। যা দেশের চাহিদার সঙ্গে কোনও ভাবেই যায় না। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার দেশের অন্য উপযুক্ত সংস্থাগুলিকে লাইসেন্স দিয়ে ও প্রযুক্তি হস্তান্তর করে টিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করতে ৬ মাসেরও বেশি সময় নিয়েছে। এপ্রিলের গোড়াতে দেশে সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করার পর কেন্দ্রীয় সরকারের টনক নড়ে। তারপরই তারা প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য ৩টি সংস্থাকে বেছে নেয়।

সংস্থাগুলি হল মহারাষ্ট্র সরকারের অধীনে থাকা হাফকাইন কর্পোরেশন, ন্যাশনাল ডেয়ারি ডেভলপমেন্ট বোর্ডের অধীনে থাকা হায়দরাবাদের ইন্ডিয়ান ইমিউনোলজিক্যালস লিমিটেড ও কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা বুলন্দশহরের ভারত ইমিউনোলজিক্যালস লিমিটেড অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল লিমিটেড। সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে হাফকাইন কর্পোরেশন মাসে ২ কোটি টিকা উৎপাদন করতে পারবে। এছাড়াও ইন্ডিয়ান ইমিউনোলজিক্যালস লিমিটেড ও ভারত ইমিউনোলজিক্যালস লিমিটেড অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল লিমিটেড মাসে ১ থেকে দেড় কোটি টিকা উৎপাদনের করবে। এর জন্য পরিকাঠামো অগস্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যে তৈরি করা হবে বলে কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর।

এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে কংগ্রেস মুখপাত্র গৌরব বল্লভ বলেছেন, ‘‘গত বছর বিশ্বের সব দেশ যখন টিকা উৎপাদন বৃদ্ধি করতে চেষ্টা করেছে, তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী করোনাকে হারিয়েছি ভেবে দেশবাসীকে হাততালি দিতে বলেছেন। এখন টিকা উৎপাদন বৃদ্ধির কথা বলা হলেও তা এক দিনে হবে না। এ জন্যই এখন গঙ্গা দিয়ে এত লাশ ভেসে যাচ্ছে।’’

অন্য দিকে, বিজেপি-র মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, ‘‘এই টিকা প্রস্তুতির জন্য ‘তৃতীয় স্তরের বায়োসেফটি’ প্রয়োজন।দেশে যা একমাত্র ভারত বায়োটেকেরই ছিল।টিকার উৎপাদন বাড়াতে আইসিএমআরও কথা বলছে অন্য সংস্থার সঙ্গে।কেন্দ্র ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। চলতি বছরের শেষে প্রতি মাসে ১০ কোটি টিকা উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE